২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

মগবাজারে বিস্ফোরণে পুলিশের মামলা, আসামি সুনির্দিষ্ট নয়

মগবাজারে বিস্ফোরণে ভবন মালিক, তিতাস গ্যাস ও শর্মা হাউজের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা - ফাইল ছবি

রাজধানীর মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। যদিও এ মামলায় সুনির্দিষ্ট কাউকে আসামি করা হয়নি। তবে যার বা যাদের অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা হতে পারে এমন সম্ভাব্য ‘দায়ী’ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৪-এর ক ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা সম্ভাব্য ‘দায়ী’ হিসেবে ভবনের মালিক, তিতাস গ্যাস কোম্পানি ও শর্মা হাউজের নাম রয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে রমনা থানায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো: রেজাউল করিম মামলাটি দায়ের করেন।

এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত থেকে জানা যায়- ধসে পড়া বিল্ডিংয়ের মালিকের অব্যবস্থাপনা, অতি পুরাতন বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন, ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস ব্যবস্থাপনা বা ভাড়াটিয়া শর্মা হাউজের অননুমোদিত গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সামগ্রীর ব্যবহার ও অবহেলা অথবা বেঙ্গল মিটের অননুমোদিত গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সামগ্রীর ব্যবহার ও অবহেলা অথবা গ্র্যান্ড কনফেকশনারির অননুমোদিত গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সামগ্রীর ব্যবহার ও অবহেলা অথবা দ্বিতীয় তলায় সিঙ্গার ইলেকট্রনিকসের অননুমোদিত বৈদ্যুতিক সামগ্রী মজুদ রাখা ও অবহেলা অথবা তিতাস গ্যাস কোম্পানির অবহেলাজনিত গ্যাস সরবরাহ অথবা বিদ্যুৎ সঞ্চালন কোম্পানির ত্রুটিপূর্ণসংযোগ অথবা ঘটনাস্থলের সামনে সিটি করপোরেশনের অপরিকল্পিত ও গাফিলতিপূর্ণ ড্রেন খনন পূর্বক খননকাজের জন্য এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। যা পেনাল কোডের ৩০৪-ক ধারার অপরাধ।

মামলার এজাহারে আরো বলা হয়, ২৭ জুন সন্ধ্যা ৭টার দিকে রমনা মডেল থানা এলাকার বড় মগবাজারের রেখা নীড় ভবনের কোনো অংশে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে ভবনের সামনের ও পেছনের অংশ ধসে পড়ে এবং মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণের বিকট শব্দের ফলে ভবনের সামনের তিনটি যাত্রীবাহী বাস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একই সাথে বাসের যাত্রীরা আহত হয়। আশপাশের কয়েকটি ভবন, তার মধ্যে আউটার সার্কুলার রোডের ভবন নং ৭৭, ৭৮, ৭৯/১, ৮১ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভবনের বিপরীত দিকে রাস্তার ওপারের হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভবনে অবস্থানরত লোকজনসহ সাধারণ পথচারীরা মারাত্মকভাবে আহত হয়। পরবর্তীকালে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, সিআইডি ক্রাইম সিন, পিবিআই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এরপর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ পাশের হাসপাতালে খোঁজ-খবর নেয়া হয়। এ সময় জানা যায়, এ ঘটনায় মারাত্মক আহত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভুক্তভোগী মোস্তাফিজুর রহমান, স্বপন মিয়া, আবুল কাশেম মোল্লা, রুহুল আমিন নোমান, জান্নাত কাকলি ও সোবহানা ওরফে তায়েবা নিহত হয়েছেন।

মামলার এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, মৃতদের মধ্যে জান্নাত কাকলি ও তার মেয়ে সোবহানা ওরফে তায়েবা ধসে পড়া ভবনের নিচ তলায় শর্মা হাউজের ভেতরে ছিলেন। মৃত আবুল কাশেম মোল্লা ক্ষতিগ্রস্ত আজমেরি পরিবহন বাসের চালক। তিনি ধসে পড়া ভবনের সামনের রাস্তার ওপর বাসে ছিলেন। এ ঘটনায় আহত ৪০ থেকে ৫০ জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ফিরে গেছেন।

এ দিকে ঘটনার দু’দিন পর ওই ভবনের নিরাপত্তাকর্মী হারুনুর রশিদের লাশ মঙ্গলবার বেলা সোয়া ৩টার দিকে উদ্ধার করা হয়েছে। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে আগেই হস্তান্তর করেছে পুলিশ।


আরো সংবাদ



premium cement