ভোলায় বিজিবি মোতায়েন, ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২০ অক্টোবর ২০১৯, ২২:৩৪
ফেসবুক পোস্ট নিয়ে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হওয়ার পর ভোলার বোরহানউদ্দিনে বিজিবি ও কোস্টগার্ড মোতায়েন করা হয়েছে।
বোরহানউদ্দিন থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা এসআই জাফর ইকবাল জানান, একজন মেজরসহ ৪০ সদস্যের একটি বিজিবির একটি দল এরইমধ্যে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছে। এছাড়া রাস্তায় রয়েছে আরো ৬০ জনের একটি দল।
তিনি বলেন, সংঘর্ষের পর পুলিশের ডিজিপি এবং র্যাব বোরহান উদ্দিনে পৌঁছেছে। এছাড়া অন্য জেলাগুলো থেকেও অতিরিক্ত বাহিনী নিয়ে আসা হচ্ছে। সংঘর্ষের পর দুপুরের পর থেকেই বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হতে শুরু করে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলেও জানান মিস্টার ইকবাল।
৬ দফা দাবি
এদিকে, আন্দোলনকারীদের একজন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এক নেতা মাওলানা তরিকুল ইসলাম জানান, রোববারের সংঘর্ষের পর ফেসবুক আইডির মালিক ওই যুবকের ফাঁসি, স্থানীয় থানার এসপি এবং ওসিকে অপসারণসহ ৬ দফা দাবি তুলে ধরেছেন বিক্ষোভকারীরা।
মাওলানা তরিকুল ইসলাম জানান, সবশেষ দাবিতে বলা হয়েছে যে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের এই দাবি-দাওয়া বাস্তবায়ন করা না হলে আরো জনসভা এবং আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।
বিক্ষোভের কারণ কী?
পুলিশ বলছে, ফেসবুকে ইসলামের নবীকে নিয়ে কটুক্তি করে দেয়া কথিত একটি পোস্টকে ঘিরে বোরহানউদ্দিনে গত তিনদিন ধরে বিক্ষোভ চলছে।
বিষয়টি নিয়ে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা গ্রামবাসীর সঙ্গে কয়েক দফায় আলোচনা চালিয়ে আসছেন। রোববার সকালে এরকম এক বৈঠকের সময় পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ বেধে গেলে, এক পর্যায়ে পুলিশ গুলি চালায়।
বোরহানউদ্দিন থানার সাবইন্সপেক্টর মোহাম্মদ জাফর ইকবাল বিবিসিকে মোট চারজন মানুষ নিহত হবার খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, বোরহানউদ্দিন বাজারে সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন, যাদের একজনের অবস্থা গুরুতর।
হাজার হাজার মানুষের সমাবেশ
সাব ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ জাফর ইকবাল জানান, রবিবার সকাল দশটা হতে ঈদগাহ ময়দানে হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভ চলছিল।
গতকাল হতে বিভিন্ন ইসলামী সংস্থা এই সমাবেশের পক্ষে মাইকে প্রচারণা চালায়। ঈদগাহ মাঠের কাছেই একটি মাদ্রাসার কক্ষে পুলিশের এডিশনাল ডিআইজি সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা বৈঠক করছিলেন।
জাফর ইকবাল জানান, একজন পুলিশ সদস্য টয়লেটে যাওয়ার জন্য নীচে নামলে তার দিকে স্যান্ডেল ছুড়ে মারে বিক্ষোভকারীরা এবং 'ধর ধর' বলে ছুটে আসে। এরপরই সংঘর্ষ বেধে যায়।
তিনি জানান, সেখানে তখন মাত্র তিরিশ জন পুলিশ সদস্য ছিল। এই সংঘর্ষে ১৯ জন গ্রামবাসী আহত হবার খবর পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাফর ইকবাল।
পুলিশি হেফাজতে অভিযুক্ত যুবক
পুলিশ জানিয়েছে, যার ফেসবুক পোস্ট থেকে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
তবে স্থানীয় সাংবাদিক আদেল হোসেন তপু জানান, ওই যুবক থানায় গিয়ে এক অভিযোগে বলে যে, তার আইডি হ্যাক করে তার নামে অন্য কেউ এসব তথ্য ছড়িয়েছে।
এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে ওই যুবককে পুলিশ হেফাজতে নেয় বলেও জানান তপু। বিবিসি।