১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪ মাঘ ১৪৩১, ১৭ রজব ১৪৪৬
`

কেআইবিতে আধিপত্য বিস্তার : সংঘর্ষে জড়ালেন বিএনপিপন্থী কৃষিবিদরা

কেআইবিতে বিএনপিপন্থী কৃষিবিদদের সংঘর্ষ - ছবি : সংগৃহীত।

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রাজধানীর ফার্মগেটস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে (কেআইবি) সংঘর্ষে জড়িয়েছেন বিএনপিপন্থী কৃষিবিদেরা। অ্যাগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এ্যাব) আহ্বায়ক রাশিদুল হাসান হারুন ও সদস্য সচিব জিকে মোস্তাফিজুর রহমান গ্রুপের অনুসারীদের মাঝে ব্যাপক দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেটস্থ কেআইবিতে এ সংঘর্ষ শুরু হয়।

সংঘর্ষে কৃষিবিদ শ্যামল, শরীফ, ইকবাল, কৃষিবিদ শফিক, ইয়ার মাহমুদ, রবিউল ইসলাম রবি ও আদনানসহ অনেকেই আহত হন। তাদের মধ্যে শ্যামল ও রবির অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা যায়।

সূত্র জানায়, দীর্ঘ সময় ধরে কেআইবিতে একক আধিপত্য ছিল আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম গ্রুপের। নির্বাচন না দিয়ে কেআইবি দখলে রাখেন তারা। মূলত কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে বড় অংকের অর্থ ভাগবাটোয়ারা এবং কৃষি ও মৎস্য, প্রাণি খাতের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়ে আসছিল কেআইবি থেকেই।

গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কেআইবি ছাড়েন আওয়ামীপন্থী কৃষিবিদরা। এরপর থেকেই সেখানে গেড়ে বসেন বিএনপিপন্থী কৃষিবিদদের সংগঠন এ্যাবের নেতারা। কেআইবিকে ঘিরে কৃষিখাত নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ ওঠে কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে।

নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষিবিদ বলেন, ‘কেআইবিতে হল ভাড়াসহ নানা খাতে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা আয় রয়েছে। এই আয়ের টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়েই মূলত শুক্রবারের এই সংঘর্ষ। এছাড়া, কেআইবি ও কৃষি সেক্টরে আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্রিক গ্রুপিং তো রয়েছেই।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রায় দেড় শ’ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে কেআইবি করা হলেও এর নিয়ন্ত্রণ শুরু থেকেই বহিরাগতদের হাতে। প্রায় ৩৫ হাজার কৃষিবিদের জাতীয় সংগঠন কেআইবি। বিগত সরকারের সময় এখান থেকেই কৃষি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের নিয়ন্ত্রণ ছিল। এই দু’টি মন্ত্রণালয়ে পিডি নিয়োগ, পদায়ন, পদোন্নতি-সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ হতো এখান থেকে। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এবং বাহাউদ্দিন নাছিম গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেয়। মূলত, বাহাউদ্দিন নাছিম গ্রুপের লোকজনই কেআইবির নিয়ন্ত্রক ছিলেন। স্বৈরশাসনের অবসানের পর বিএপিপন্থী কৃষিবিদদের সংগঠন এ্যাব এটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তাদেরও কতিপয় নেতার বিরুদ্ধে কৃষি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কেন্দ্রিক পিডি নিয়োগ,পদোন্নতি, পদায়ন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। কেআইবির আয় থেকে ভাগবাটোয়ারা এবং নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কয়েক মাস ধরেই উত্তেজনা চলে আসছে। শুক্রবার রাতে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।

জানা যায়, কেআইবির সর্বশেষ নির্বাচন হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। এখনো কমিটিবিহীন চলছে কেআইবি। সাধারণ কৃষিবিদরা শিগগিরই কেআইবি’র নির্বাচন দাবি করেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement