১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪ পৌষ ১৪৩১, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

৪ দাবিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে শিশু বিশেষজ্ঞদের অবস্থান কর্মসূচি

শিশু চিকিৎসকদের পদোন্নতির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালিত - ছবি : সংগৃহীত

চার দফা দাবিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিশু বিশেষজ্ঞরা। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক এসোসিয়েশনের (বিপিএ) উদ্যোগে বুধবার সকালে মহাখালিতে অবস্থিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আঙ্গিনায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিপিএর সভাপতি ডা. মেজবাহ উদ্দিন।‌ সারাদেশ থেকে প্রায় পাঁচ শ' শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এই সমাবেশে যোগদান করেন।। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে জেনারেল পেডিয়াট্রিক্স (শিশু) ও পেডিয়াট্রিক সাবস্পেশালিটির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দীর্ঘ পদোন্নতি জটের অবসান এবং দ্রুত সময়ে অন্য ক্যাডারের মতো ইনসিটু/ওএসডি অ্যাটাচমেন্ট পদোন্নতির মাধ্যমে অন্তঃ ও আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন করা।

বক্তারা বলেন, বর্তমানে সরকারি ৩৭টি মেডিকেল কলেজে সমন্বিত শিশু স্বাস্থ্যসেবা দেয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। এ ছাড়া মেডিকেল কলেজে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে আনুপাতিক হারে। পুরনো মেডিকেল কলেজগুলোতে বর্তমানে ২৫০ জন ছাত্রছাত্রী আছে ও নতুন মেডিকেল কলেজগুলোতে ৫০ জন করে ছাত্রছাত্রী প্রতিবছর যোগ হয়। উপজেলা, জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা প্রদানের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হলেন জুনিয়র ও সিনিয়র কনসালটেন্ট। সারা দেশে প্রায় ৬৩৮টি হাসপাতালে শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করেন শিশু ও নবজাতকসহ অন্য সাবস্পেশালিটির বিশেষজ্ঞরা। তাহলে এ বিশাল যজ্ঞ চালাতে মেডিসিন, সার্জারি ও অবস্ অ্যান্ড গাইনি বিষয়ের সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি চিকিৎসক শিশু সেবায় থাকা কার্যত যৌক্তিক। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। যুগ যুগ ধরে এ খাতে কর্মরত চিকিৎসকরা অবহেলিত।

এসময় তারা বৈষম্য নিরসনে চার দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো–

১. পেডিয়াট্রিকস জুনিয়র কনসালটেন্ট, সিনিয়র কনসালটেন্ট, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, অধ্যাপক পদে, মেডিসিন, সার্জারি ও গাইনি অ্যান্ড অবসের সঙ্গে সাম্যতা আনয়ন করার জন্য ওএসডি অ্যাটাচমেন্ট/ইনসিটু পদোন্নতি প্রদান প্রয়োজন।

২. পদের অতিরিক্ত পদোন্নতি ও পদায়ন ও প্রয়োজনে ওএসডি অ্যাটাচমেন্ট/ইনসিটু পদায়ন। উল্লিখিত সমস্যার সমাধান না করলে নিকট ভবিষ্যতে অপূরণীয় ক্ষতি সাধন হবে। এতে এ দেশের কোটি কোটি শিশু স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে পড়বে, বাড়বে শিশু মৃত্যু যা এ দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যাবে, দেশের উন্নতি ব্যাহত হবে।

৩. জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ শিশু হলেও সরকারি হাসপাতালের শয্যা সংখ্যার মাত্র ১৩ শতাংশ শিশু রোগীর জন্য বরাদ্দ। প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে শিশু রোগীদের সংখ্যার অনুপাতে হাসপাতালে বিছানার সংখ্যা বর্ধিতকরণ ও চিকিৎসকদের জন্য নতুন পদসৃজন এবং ছাত্রছাত্রীদের অনুপাতে শিক্ষকদের পদসৃজন এবং পরবর্তীতে ইনসিটু পদোন্নতি প্রদানকারী চিকিৎসকদের সৃজন করা পদে আত্তীকরণ।

৪. ঢাকায় একটি আন্তর্জাতিক মানের সরকারি বিশেষায়িত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব চাইল্ডহেলথ স্থাপন করা, যেখানে শিশু মেডিসিন, সাবস্পেশালিটি ও সার্জারির সমন্বিত চিকিৎসা প্রদান করা এবং উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রণয়নের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা, অধ্যাপক জিয়াউর রহমান, ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালী, ডা. মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী, ডা. ইয়ামিন শাহরিয়ার চৌধুরী, ডা. মনির হোসেন প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে বিপিএর একটি প্রতিনিধিদল স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফরের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেন।
বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement

সকল