২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

হাসপাতালে ‘ভুল চিকিৎসায়’ মৃত্যু : ভাংচুর পুরান ঢাকার ২ কলেজে

সোহরাওয়ার্দী কলেজে ভাংচুর করা একটি কক্ষ - ছবি : সংগৃহীত

পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘ভুল চিকিৎসায়’ ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের এক ছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগে সেখানে ভাংচুর করা হয়েছে। পরে পার্শ্ববর্তী কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজেও ভাংচুর করা হয়।

রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কলেজ দু’টিতে ব্যাপক ভাঙচুর ও হামলার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের স্নাতক পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা পুরো পরীক্ষা শেষ করতে পারেননি।

ভাংচুরে কলেজ দুটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাড়ি, ক্লাসরুম, অফিস থেকে শুরু করে হামলা থেকে কোনোকিছুই বাদ যায়নি।

এর আগে ভুল চিকিৎসায় রাজধানীর ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের অভিজিৎ হাওলাদার নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগের ঘটনার বিচার চেয়ে পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সামনে বিক্ষোভ ও পরে ভাঙচুর করেছিল কলেজটির শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যু অপচিকিৎসার কারণে হয়েছে, এমন দাবি করে আন্দোলন করে সহপাঠীরা। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার তারা মেডিক্যাল কলেজটির সামনে বিক্ষোভ করেন।

সাইফুল ইসলাম ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের এক ছাত্র দাবি করেন, ‘ওইদিন পুরান ঢাকার কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর হামলা চালান। এর প্রতিবাদে আজ তারা ন্যাশনাল মেডিক্যালের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় আবার পুরান ঢাকার সরকারি শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী কলেজসহ আশপাশের কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।’

অপরদিকে, মামুন নামে এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষা চলাকালীন ক্যাম্পাসে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ (ডিএমআরসি), ঢাকা সিটি কলেজ, ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ, দনিয়া কলেজসহ কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা হামলা-ভাঙচুর করেছে।

শিক্ষার্থী অভিজিৎ হাওলাদারের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিকেলেও ন্যাশনাল মেডিক্যালের সামনে বিক্ষোভ করেন ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক রশিদুল হাসান একটি গণমাধ্যমকে বলেন, অভিজিতের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী। এতে হাসপাতালের স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। রোগীদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

অপরদিকে হামলার বিষয়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কাকলী মুখোপাধ্যায় প্রশাসনের অসহযোগিতার অভিযোগ করে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কেউ এগিয়ে আসেনি। একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানের বড় ক্ষতি হয়ে গেল। একটি পাবলিক পরীক্ষা চলমান ছিল। তারপরও কেন হামলার ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না।’

ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে তিনি বলেন, কলেজের কোনো অফিস এবং কোনো বিভাগের কক্ষই অক্ষত নেই। পুরো কলেজ এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দুজন শিক্ষকের ব্যক্তিগত গাড়ি এবং কলেজের গাড়িটিও ভেঙে তছনছ করে দেয়া হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement