২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
কলকাতার ঐতিহাসিক নাখোদা মসজিদ

খোদার ঘরের নাম কেন ‘নাখোদা’?

কলকাতার ঐতিহাসিক নাখোদা মসজিদ - ছবি : সংগৃহীত

কলকাতা প্রাচীন শহর। এখানকার প্রধান ঐতিহ্যবাহী মসজিদটির নাম ‘নাখোদা মসজিদ’। এটি জাকারিয়া স্ট্রিট এবং রবীন্দ্র সরণির সংযোগস্থলে চিৎপুর এলাকায় অবস্থিত। মসজিদ আল্লাহর ঘর। আল্লাহকে ডাকতে আমরা ‘খোদা’ শব্দটিও ব্যবহার করে থাকি। সেই হিসেবে মসজিদ খোদার ঘর। কিন্তু প্রশ্ন হলো- তাহলে কলকাতার মসজিদটির নাম কেন ‘নাখোদা মসজিদ’ হলো?

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হলে আমাদের মসজিদ প্রতিষ্ঠার গল্পটি জানতে হবে। বর্তমান সময়ের মসজিদের বৃহৎ কাঠামোটি নির্মিত হয়েছিল আবদুর রহিম ওসমান নামে গুজরাটের এক বিখ্যাত নাবিকের নেতৃত্বে। মসজিদ নির্মাণের সমুদয় অর্থ তিনিই দান করেছিলেন। তাই তার পেশার দিকে ইঙ্গিত করে মসজিদটির নাম রাখা হয় ‘নাখোদা মসজিদ’। কারণ, ফার্সি ভাষায় নাবিকের একটি সমার্থক শব্দ হলো ‘নাখোদা’।

এই মসজিদটি শুরুতে ছোট ছিল। পরে এটি সম্প্রসারণ করা হয়। এটি নির্মাণে তৎকালীন অন্তত ১৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছিল। মসজিদের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপিত হয়েছিল ১৯২৬ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। আর ১৯৪২ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়। এটি স্থানীয় মুসলমানদের কাছে প্রাচীন ইবতদস্থল হিসেবে যেমন পরিচিত ঠিক ততটাই সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবেও সমাদৃত। দুই ঈদে এখানে লাখ লাখ মানুষ সমবেত হন। প্রতি শুক্রবারে জুমার নামাজেও আসেন হাজার হাজার মুসল্লি।

নাখোদা মসজিদের নির্মাণশৈলিতে ঐতিহাসিক নানা নিদর্শন বিদ্যমান। এর প্রধান ফটক বানানো হয়েছে ফতেপুর সিক্রির বুলন্দ দরওয়াজার অনুকরণে। একইসঙ্গে বাদশাহ আকবরের সমাধিসৌধের প্রভাবও রয়েছে নাখোদা মসজিদে। এসব ডিজাইনের জন্য টোলপুর থেকে আনা হয়েছিল গ্রানাইট পাথর। শ্বেতপাথরে গড়া মসজিদের অভ্যন্তরীণ অংশটি তাজমহলের কথা মনে করিয়ে দেবে। নাখোদা মসজিদে রয়েছে একটি গম্বুজ, ২টি বড় মিনার ও ২৫টি ছোটো মিনার। আর গোটা অবকাঠামোজুড়ে দেখা যায় চোখধাঁধানো অলংকরণ। মসজিদের সৌন্দর্য আর ইতিহাসের টানে সারাবছর এখানে বহু মুসল্লি ও পর্যটক আগমন করেন।


আরো সংবাদ



premium cement