২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

কোন দেশে কোন পশু কোরবানি দেয়া হয়

কোন দেশে কোন পশু কোরবানি দেয়া হয় - ছবি : সংগৃহীত

ঈদুল আজহা মুসলিমদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব। এটিকে কোরবানির ঈদও বলা হয়ে থাকে।

প্রতি বছর আরবি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী জিলহজ মাসের ১০ তারিখ কোরবানির ঈদ পালন করা হয়। এসময় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মুসলিম সম্প্রদায় পশু কোরবানি করে থাকেন।

ওই দিন তারা ফজরের নামাযের পর ঈদগাহে গিয়ে জমায়েতে নামাজ পড়া শেষে নিজ নিজ আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট কিছু প্রাণী কোরবানি দেন।

তবে দেশ ও সংস্কৃতিভেদে এই উৎসবে কিছুটা ভিন্নতা আছে। সেই সাথে, বিভিন্ন কারণে পৃথিবীর একেক দেশে একেক ধরনের পশু কোরবানি দেয়ার রেওয়াজও আছে।

যেমন, বিশ্বের কোনো কোনো অঞ্চলের মুসলিমরা কোরবানিতে গরু কিংবা ছাগলকে প্রাধান্য দেন। আবার কোথাও কোথাও ভেড়া, মহিষ কিংবা উট-ই হয়ে উঠে প্রিয় কোরবানিযোগ্য পশু।

এই প্রতিবেদনে আমরা এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, এমনকি ইউরোপের কিছু দেশের- যেগুলো মুসলিমপ্রধান বা যেখানে প্রচুর সংখ্যায় মুসলিম থাকেন- পশু কোরবানি’র রীতি-নীতি সম্বন্ধে জানব। সেই সাথে এও জানব যে কোথায় কোন ধরনের পশু কোরবানি দেওয়া হয়।

সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরানের মতো দেশগুলোতে মুসলমান সম্প্রদায় সংখ্যাগরিষ্ঠ।

সারা বিশ্বের মোট মুসলিম সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশই থাকে মধ্যপ্রাচ্যে। সেখানকার মুসলিমপ্রধান দেশের কথা বললে সৌদি আরবের কথা সবার আগে উল্লেখ করতে হবে।

কারণ ইসলাম ধর্মের পাঁচটি মৌলিক ভিত্তির একটি হল হজ, যা মূলত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় জমায়েত। আর সেই হজ পালন করার জন্য মুসলিমদের সৌদি আরবে যেতে হয়।

এ কারণেই বিশ্বের লাখ লাখ মুসলিম নারী-পুরুষ প্রতিবছর হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে সমবেত হন এবং হজের শেষদিনে কোরবানি দেয়া বাধ্যতামূলক হওয়ায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় সৌদি আরবেই কোরবানি দেওয়ার পরিমাণ তুলনামূলক বেশি।

মধ্যপ্রাচ্যের প্রাণী হিসেবে উট বেশি পরিচিত হলেও দেশটিতে দুম্বা, ভেড়া, গরু এবং ছাগলও কুরবানি দেয়া হয়। তবে আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠান স্ট্যাটিস্টা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, হজের সময় সৌদি আরবে উট ও গরুর দাম বেড়ে যায়। আবার, বছররের অন্যান্য সময় এগুলোর দাম অন্তত কয়েকগুণ কম থাকে।

অন্যদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতেও দৃশ্যপট অনেকটা একই। দেশটিতে কোরবানি দেয়ার ক্ষেত্রে দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা গরু এবং ছাগল বেশি প্রাধান্য পায়।

কিছু অভিজাত পরিবার উট কোরবানি দিয়ে থাকেন, তবে তা সংখ্যায় বেশ কম। কোরবানি দেয়ার জন্য বরাদ্দ থাকা নির্দিষ্ট জায়গায় বেশির ভাগ কোরবানি করা হয়। তবে কেউ চাইলে নিজস্ব জায়গার মধ্যে কোরবানি দিতে পারেন। ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশটিতে চার দিনের সরকারি ছুটি দেয়া হয়।

পাকিস্তান
সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলিম বসবাস করেন পাকিস্তানে। জনসংখ্যা বিষয়ক অনলাইন ডেটাবেজ ‘ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ’ (ডব্লিউপিআর)-এর তথ্য বলছে, দেশটির মোট জনসংখ্যার শতকরা ৯৮ ভাগেরও বেশি, অর্থাৎ ২৪ কোটি মানুষ মুসলিম।

কোরবানির সময় দেশটিতে গরু, ষাঁড় এবং ছাগলকে প্রাধান্য দেয়া হয়। সৌদি আরব-ভিত্তিক মধ্যপ্রাচ্যের আরব নিউজ পত্রিকা পাকিস্তান ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে লিখেছে, ২০২৩ সালে দেশটিতে ৬০ লাখের বেশি পশু কোরবানি করা হয়েছে।

তার মাঝে সবচেয়ে বেশি ছিল ছাগল, তারপর-ই হলো গরু। এর বাইরে কেউ কেউ মহিষ, দুম্বা, ভেড়া ও উটও কোরবানি দেন ঠিকই, তবে সংখ্যার দিক থেকে তা নগণ্য। আর দুম্বার গোশত চর্বিযুক্ত হওয়ায় এটি কোরবানি দেয়ার প্রচলন শীতপ্রধান অঞ্চলগুলোতেই বেশি।

তবে কোরবানির পশু নির্বাচনে কালো মাথার ভেড়া দেশটির কিছু কিছু অঞ্চলে বেশ জনপ্রিয়।

কোরবানির জন্য নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ করা হয়। তবে ঐতিহ্যগত পদ্ধতি অনুযায়ী বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাড়ির সামনে রাস্তার ওপরেই ইসলামিক জবাই পদ্ধতি (ধাবিহা) মেনে কোরবানি দেয়া হয়।

ভারত
বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে মুসলমান সম্প্রদায় সংখ্যালঘু হলেও মুসলিম জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে বর্তমানে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত।

ডব্লিউপিআর-এর তথ্য অনুযায়ী, দেশটির ১৪ শতাংশ, অর্থাৎ ২০ কোটি মানুষ হলো মুসলিম। সংখ্যায় হিসেব করলে এটি মোটেও কম নয়।

কিন্তু বিশাল আয়তনের এই দেশে কোরবানি দেয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আছে। কারণ, ভারতের সিংহভাগ মানুষ হিন্দু এবং হিন্দু ধর্মে গোহত্যা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

সুতরাং, ভারতের মুসলিমরা কোরবানির ক্ষেত্রে মূলত ছাগল ও মহিষকেই প্রাধান্য দেন। এর বাইরে কেউ কেউ গরু কোরবানি দিলেও উট কোরবানি দেওয়া হয় খুবই কম।

কিন্তু গরু আবার সব জায়গায় কোরবানি দেয়া যায় না। ভারতের কয়েকটি রাজ্যে গরু জবাই করা আইনত বৈধ। সেগুলো হলো অরুণাচল, গোয়া, কেরালা, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ, দাদরা, নগর হাভেলি, দামান, দিউ ও পন্ডিচেরি।

তবে এই রাজ্যগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র কেরালা এবং পশ্চিমবঙ্গে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলিম রয়েছে।

এর বাইরে দেশটির সবখানে গোহত্যা করা সম্পূর্ণ বেআইনি। বিবিসি সংবাদদাতা শাকিল আখতার ভারতের দিল্লি থেকে এ বিষয়ে জানিয়েছেন, 'কেউ যদি গরু কোরবানি দেয়, তবে ভয়াবহ শাস্তি আছে। কোনও কোনও রাজ্যে সাত বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধি আছে। যেমন, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানে গরু কোরবানি দেওয়া সম্পূর্ণ আইন বহির্ভূত।'

তবে নাগাল্যান্ডের মতো কিছু রাজ্য মুসলিমপ্রধান না হওয়া সত্ত্বেও সে সব স্থানে গরু জবাই করা যায়। তার কারণ, পূর্বদিকের ওইসব এলাকার বেশিরভাগ মানুষই খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী এবং খ্রিষ্টানরা ঐতিহ্যগতভাবেই গরুর মাংস খান। তাই ভারত সরকার সেখানে বাধা দেয় না।

তবে গরু জবাই করার ক্ষেত্রে ভারতে আগে এত কড়াকড়ি ছিল না। আজ থেকে ১০-১৫ বছর আগেও আরতের কিছু কিছু প্রদেশে গরু, বিশেষ করে বৃদ্ধ গরু জবাই করা যেত।

কিন্তু ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে গত ১০ বছরে সেটি বন্ধ হয়ে গেছে।

'এখন মানুষ কোরবানির জন্য ছাগল ও মহিষ বেশি কিনে। যেমন বিহার, রাজস্থান, দিল্লি, মহারাষ্ট্র, গুজরাট বা দিল্লিতে আমরা যারা থাকি, আমরা ছাগল কোরবানি দেই,' বলেন আখতার।

তবে যারা অর্থনৈতিকভাবে অপেক্ষাকৃত দুর্বল, তারা কোরবানির সময় ছাগলের পরিবর্তে মহিষ বেশি কিনে। কারণ ছাগলের তুলনায় এটি সস্তা এবং একটি মহিষ কিনলে তা দিয়ে সাতজন শরীক কোরবানি দিতে পারে। কিন্তু ছাগলের ক্ষেত্রে শুধু একজনই শরিক থাকতে পারেন।

বিবিসি'র এই সংবাদদাতা আরো জানান, বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর হরিয়ানা, রাজস্থান ইত্যাদি জায়গায় ‘গোরক্ষক বাহিনী’ নামে প্রাইভেট মিলিশিয়ার মতো গ্রুপ তৈরি হয়েছে।

কেউ ট্রাকে করে গরু, এমনকি মহিষ নিয়ে গেলেও তারা তাদেরকে ধাওয়া করে, মারে, লুটপাট করে, এমনও কি খুনও করে। এর ফলে গরু, মহিষ বা ছাগল এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যেতে ভয় পায় পরিবহনকারীরা।

এদিকে বিজেপি সরকার তার শাসনামলে 'পরিবেশের নামে' ভারতের অনেক স্থানে 'স্লটারিং হাউজ', মানে জবাই করার স্থানও বন্ধ করেছে। সে সব জায়গার মানুষ শুধু মরগির মাংস খেতে বাধ্য হন।

ইন্দোনেশিয়া
ডব্লিউপিআর-এর তথ্য অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮৫ শতাংশ, অর্থাৎ দেশটির প্রায় সাড়ে ২৩ কোটি মানুষ মুসলিম।

এশিয়ার অনেক দেশের মতো ইন্দোনেশিয়াতেও গরু ও ছাগলই বেশি কোরবানি দেওয়া হয়।

দেশটির নাগরিক বেটি হারলিনা বলেন, 'আমাদের দেশ উট বা ভেড়া নেই। তাই এখানে গরু ও ছাগল বেশি চলে। আমরা নিজেরাও এবার গরু কোরবানি দেব।'

তবে দেশটিতে সরকারিভাবে ১৭ জুনকে ঈদুল আজহা হিসাবে ঘোষণা করা হলেও সে দেশের কোনো কোনো মুসলিম সম্প্রদায় আবার এক দিন আগেই কোরবানি দিয়েছেন।

কারণ সৌদি আরবে চলতি বছর ঈদ-উল-আজহা পালিত হয়েছে ১৬ই জুন। ইন্দোনেশিয়ার ওই মুসলিমরা বিশ্বাস করেন, হজে যেদিন কোরবানি দেওয়া হয়, ওইদিনই কোরবানি দেওয়া উচিত।

ইন্দোনেশিয়ায় মাংসের বিতরণ প্রক্রিয়া এলাকাভেদে পরিবর্তিত হয়। কিছু এলাকায় কোরবানির পশুর একটি বড় অংশ নিকটাত্মীয়দের জন্য বরাদ্দ করা হয়।

তুরস্ক
তুরস্কের সরকারের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির ৯৯ শতাংশ মানুষ ইসলাম ধর্মাবল্ম্বী। তাই, স্বভাবতই দেশটির অনেকে মানুষ প্রতি বছর ধর্মীয় রীতি মেনে কোরবানি দেন।

দেশটিতে ঈদুল আজহাকে 'কোরবান বায়রামি' বলা হয়।

তুর্কির মুসলমানরা সাধারণত গরু, ছাগল ও ভেড়া কোরবানি দেন এবং তারা বাড়িতে না, বরং সুযোগ-সুবিধার কথা বিবেচনা করে কসাইখানায় গিয়ে কোরবানি দেন।

কোরবানির পর প্রাপ্ত গোশতকে তারা সমান তিন ভাগে ভাগ করেন।

তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর রিপোর্ট অনুযায়ী, গোশতের একভাগ নিজেদের জন্য, আরেকভাগ আত্মীয়, বন্ধু ও প্রতিবেশীদের মাঝে এবং আরেকভাগ দরিদ্র ও অসচ্ছলদের মাঝে বিতরণ করে দেয়া হয়।

দেশটিতে কিছু দাতব্য সংস্থা আছে, যারা সমন্বিতভাবে চেষ্টা করে যাতে সকল দরিদ্র পরিবারের ঘরে কোরবানির মাংস পৌঁছে যায়।

অনেক মানুষ ওই দাতব্য সংস্থাগুলোর কাছেই গরিবদের মাঝে বিতরণের জন্য মাংস দিয়ে দেন।

এই দাতব্য সংস্থাগুলো শুধু দেশের অভ্যন্তরেই না, বিশ্বের অনেক দেশেও গরিবদের মাঝে মাংস বিরতণ করে।

আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালেও আফ্রিকা মহাদেশ জুড়ে লাখ লাখ মুসলমানদের জন্য গোশত সরবরাহ করেছে তুরস্কের সংস্থাগুলো।

নাইজেরিয়া
বিশ্বের মুসলিম জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ থাকে আফ্রিকাতে। তবে আফ্রিকান দেশ নাইজেরিয়ার বেশিরভাগ মানুষই আবার মুসলিম। কোরবানির জন্য দেশটিতে ভেড়াই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।

নাইজেরিয়ার নাগরিক আয়েশা উমর বলেন, 'আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষ ঈদে ভেড়া জবাই করে। যদিও আমি এমন লোকদেরও চিনি যারা গরু, এমনকি উটও ব্যবহার করে। বিশেষ করে নাইজেরিয়ার উত্তরের জামফারা বা বোর্নো রাজ্যে। তবে সবচেয়ে বেশি কমন হল ভেড়া।'

তবে নাইজেরিয়ার কানো বা সোকোটো'র মতো কিছু অঞ্চল আছে, যেখানে 'দুর্বার' নামক একটি অনুষ্ঠান হয়। কোরবানির মানুষ ঈদের নতুন জামা পরে এতে অংশ নেয়। এখানে মানুষ রাজকীয়ভাবে ঘোড়ায় চড়ে চারদিকে প্রদক্ষিণ করে এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করে।

এই অনুষ্ঠানে প্রচুর সঙ্গীতেরও আয়োজন করা হয়। উল্লেখ্য, নাইজেরিয়াতে ঈদ-উল-আজহাকে বলা হয় 'ঈদ-উল-কাবির'।

এ দেশের মুসলিমরাও সকালবেলা নতুন জামা-কাপড় পরে ঈদগাহে গিয়ে নামাজ পড়ে। তারপর যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী ভেড়া, ছাগল, গরু কিংবা উট কোরবানি দেন।

এগুলো থেকে প্রাপ্ত গোশত তারাও তিন ভাগ করেন এবং নিয়ম অনুযায়ী বিতরণ করেন। কোরবানি শেষে মাংস ও সাথে জল্লফ রাইসের মতো ঐতিহ্যবাহী পদ রান্না করে সবার সঙ্গে মিলেমিশে খান।

বাংলাদেশ
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৮৬ শতাংশেরও বেশি, অর্থাৎ ১৫ কোটির বেশি মানুষ মুসলিম।

কোরবানির জন্য বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয় গরুকে। তারপরই আছে ছাগল। এর বাইরে অনেকে মহিষও কোরবানি দেন। কিন্তু উট বা ভেড়া কোরবানি দেয়ার হার খুবই কম।

কোরবানির জন্য বাংলাদেশে শহরাঞ্চলে প্রতি বছরই নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাড়ির সামনে পথের ওপরেই বা আঙ্গিনায় কোরবানি দেয় মানুষ।

বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেশটিতে এ বছর গরু, ছাগল, মহিষসহ সব ধরনের কোরবানির পশুর চাহিদা আছে এক কোটি ৭ লাখ। এর বিপরীতে সরবরাহ আছে এক কোটি ৩০ লাখ। অর্থাৎ, চাহিদার চেয়ে সরবরাহ বেশি ২৩ লাখ।

তবে বাংলাদেশের কোরবানির ক্ষেত্রে এক ধরনের ঐতিহ্য আছে। দেখা যায়, কোরবানির ব্রিক্রেতা তার পশুটির বাহারি সব নাম দেন এবং সেই সব নাম নিয়ে আলোচনায়ও হয়।

সাধারণত গরুর নামকরণ করা হয় তার শরীরের বর্ণ অনুযায়ী। যেমন লাল গরুকে লালু, লালি বা লালটু পর্যন্ত বলার চল ছিল, এখনও অনেক খামারি ওই নামই রাখেন।

কিন্তু এখন বিক্রেতারা গরুর নাম রাখেন নবাব, বাহাদুর, সম্রাট ইত্যাদি। আবার কেউ কেউ আবার বাংলাদেশের তারকা শিল্পীদের নামেও নাম রাখেন। যেমন- শাকিব খান বা জায়েদ খান।

আর, হাট থেকে গরু কেনার পর অনেকে সেটিকে সাজিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

বাংলাদেশেও কোরবানির পর সেটিকে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তিন ভাগে ভাগ করা হয়।

সূত্র : বিবিসি

 


আরো সংবাদ



premium cement