মালয়েশিয়ায় শ্রমিকদের প্রতারণাকারী কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থায় দূতাবাস ও সরকার
- আশরাফুল মামুন, মালয়েশিয়া
- ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:০৯
মালয়েশিয়ায় গিয়ে প্রতারণার শিকার ১০৪ বাংলাদেশী। তাদের আটকে রাখা হয় রাজধানী কুয়ালালামপুরের চেরাসের একটি বাসায়। এ খবর বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ হওয়ারপর সরকারের নজরে আসে। সরকার বলছে, বাংলাদেশী শ্রমিকদের প্রতারণাকারী চেরাসের রিকোলার কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এসডিএন বিএইচডির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়াও কলিং ভিসায় গিয়ে যে শ্রমিকরা কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সে সমস্ত কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা নিচ্ছে দূতাবাস।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিল (লেবার) মো: শরিফুল ইসলাম।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল এবং মানবসম্পদ মন্ত্রী স্টিভেন সিম বলেন, চেরাসের যে কোম্পানিটি গত নভেম্বরে শ্রমিকদের মালয়েশিয়ায় নিয়ে এসেছিল তারা তাদের চাকরি দেয়নি এবং তাদের উপযুক্ত থাকার জায়গা বা পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ করেনি।
সাইফুদ্দিন ও সিম একটি যৌথ বিবৃতিতে বলেন, নিয়োগকারীদের বিরুদ্ধে উভয় মন্ত্রণালয়ই সিদ্ধান্তমূলক ব্যবস্থা নেবে। নিয়োগদাতারা যারা বিদেশী কর্মী নিয়োগ করে তাদের অবশ্যই শ্রমিকদের যত্ন নিতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে যে তারা আইন মেনে চলছে।
অভিবাসী শ্রমিকদের একটি অন্তবর্তী সুরক্ষা আদেশ ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে আনার আগে নথিভুক্ত করার জন্য পুত্রজায়া অভিবাসন বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সাইফুদ্দিন ও সিম সম্মত হন যে শ্রমিকদের পাসপোর্ট রাখার জন্য ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট ১৯৫৯/৬৩-এর অধীনে নিয়োগকর্তাদের আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে এবং তাদের বেতন দিতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য কর্মসংস্থান আইন-১৯৫৫ এর আওতায় আসতে হবে।
যথাযথ বাসস্থান সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য তারা কর্মচারীদের ন্যূনতম মানদণ্ডের আবাসন এবং সুযোগ-সুবিধা আইন-১৯৯০ এর অধীনে অভিযোগের মুখোমুখি হবে এবং ব্যক্তিদের পাচার বিরোধী এবং অভিবাসী আইন (আটিপসম) ২০০৭-এর অধীনে তদন্ত করা হবে।
বিদেশী কর্মীদের জন্য তাদের অবশিষ্ট কোটা এবং তাদের অনুমোদন পত্র বাতিল করা ছাড়াও নিয়োগকর্তারা ভবিষ্যতে বিদেশী কর্মীদের জন্য আবেদন করা থেকে কালো তালিকাভুক্ত হবে।
বাংলাদেশী কর্মীদের অধিকার নিয়ে দেশটিতে কাজ করা ব্রিটিশ শ্রম অধিকার কর্মী এন্ডি হল বলেন, ওই ১০৪ কর্মী মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে ১৯ হাজার ৫০০ থেকে ২১ হাজার ৭০০ রিঙ্গিত নিয়োগ ফি দিয়েছে। তাদের ভালো জীবনযাত্রার সুবিধা ও উচ্চ বেতনের চাকরির প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল।
চেরাসের একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান তাদের নিয়োগ দিয়েছিল বলে জানান তিনি।
তিনজন শ্রমিক বলেন, নিয়োগের ফি দিতে গিয়ে তাদের ঋণে পড়তে হয়েছে।
কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিল (লেবার) মো: শরিফুল ইসলাম বলেন, কলিং ভিসায় মালয়েশিয়া আসা কোনো বাংলাদেশী শ্রমিককে যদি কাজ ও বেতন সঠিক সময়ে না দেয়া হয়, আর তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে আমরা আমরা সে সমস্ত কোম্পানি গুলোকে তিল পরিমাণ ছাড় দেবো না। তাদের সবার বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার এনফোর্সমেন্ট জেটিকে এর মাধ্যমে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
লেবার কাউন্সিলর আরো বলেন, আপনারা ইতোমধ্যে অবগত আছেন মালয়েশিয়ার সরকারের সহায়তায় শত শত কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অসহায় শ্রমিকদের অভুক্ত রেখে এবং তাদের ওপর মানসিক নির্যাতন করে মালিক পক্ষ শান্তিতে ঘুমায় কিভাবে?