মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশীসহ ৪ সহস্রাধিক অভিবাসী আটক
- আশরাফুল মামুন, মালয়েশিয়া
- ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:৩২
মালয়েশিয়ায় ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ৮৭০টি পৃথক পৃথক অভিযানে মোট চার হাজার ২৬ জন অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে। অভিযানের সময় মোট নয় হাজার ১৬৯ অভিবাসী শ্রমিকের কাগজপত্র ও ডকুমেন্টস চেক করা হয়েছে।
অভিযানে অংশ নেয় দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশসহ হাজার হাজার যৌথ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় গণমাধ্যমকে দেয়া তথ্যে এসব কথা বলেন অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক রুসলিন জুসোহ। তবে এ সময় মোট কতজন বাংলাদেশীকে আটক করা হয়েছে তা বিস্তারিত বলা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, চার হাজার ২৬ জন অভিবাসীকে আটক করা হলেও এক হাজার ৪৯৭ জন অভিবাসীকে সাজা শেষে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য জেলে প্রেরণ করা হয়েছে। কিন্তু বাকি দুই হাজার ৫২৯ অভিবাসীর বিরুদ্ধে কি ব্যাবস্থা নেয়া হয়েছে সেটা বিস্তারিত না বললেও এটা স্পষ্ট যে তাদের বৈধ ডকুমেন্টস থাকার কারণে পরবর্তীতে খালাস দেয়া হয়েছে। এ সময় অনিয়মিত প্রবাসী শ্রমিক রাখার দায়ে ৪২ জন নিয়োগকর্তা বা কোম্পানির মালিককেও আটক করা হয়েছে। অভিবাসন বিভাগ এই সাড়াশি অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণায় অভিবাসীদের মধ্যে রীতিমতো আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এসব অভিযানে বাদ যায়নি তিন মাসের দুধের শিশু। সদ্য ভূমিষ্ট মানবশিশুরা এ সময় তার মায়ের সাথে রাতে ঘুমিয়ে ছিল এবং তার মা একজন অভিবাসী হিসেবে বৈধ ডকুমেন্টস না থাকার কারণে তারা একসাথে আটক হয়েছিল। এই ৮৭০টি পৃথক অভিযানের বেশিরভাগই পরিচালনা করা হয়েছে রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত যখন শ্রমিকরা সারাদিন কাজ করে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকে। অভিবাসীরা একসাথে গাদাগাদি করে থাকাসহ অপরিষ্কার পরিবেশ ও নিরাপত্তাহীনতার সৃষ্টির কারণে স্থানীয় নাগরিকরা বিরক্ত হয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে এসব অভিযান চালানো হয়। দেশটিতে এখানে সেখানে ময়লা ফেলা দণ্ডনীয় অপরাধ।
চলতি জানুয়ারি মাসে বেশ কয়েকটি দুর্ধর্ষ অভিযান পরিচালনা করে অভিবাসন। এরমধ্যে অন্যতম ছিল রাজধানী কুয়ালালামপুরের ‘মিনি ঢাকা খ্যাত’ কোতারায়া বাংলাদেশী মার্কেটে। এখানে বিকটি সাইরেন বাজিয়ে, ড্রোন উড়িয়ে, পুলিশ ভেস্ট, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিশেষ ধরনের পোশাক পরে প্রায় এক হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোতারায়া চারদিকে ঘিরে ফেলে। তখন অভিবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় বাংলাদেশীসহ সহস্রাধিক অভিবাসীকে আটক করা হয়।
পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৈধ ডকুমেন্টস থাকায় অধিকাংশই ছাড়া পেয়ে যান। আটকের পর সবাইকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বুকিত জলিল ও সেমুনিয়া ইমিগ্রেশন সেন্টারে রাখা হয়।