২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

পুরনো রূপে মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের ঈদ উদযাপন

পুরনো রূপে মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের ঈদ উদযাপন। - ছবি : নয়া দিগন্ত

করোনা মহামারীর প্রাদুর্ভাবের পর ২০১৯-এর ১৮ মার্চ লকডাউন শুরু হয়। এরপর প্রায় তিন বছর বিধিনিষেধের কারণে সামাজিকভাবে কোরবানি দিয়ে ঈদ পালন করা হয়নি। এমনকি জামায়েতে ঈদের নামাজ আদায় করা পর্যন্ত নিষিদ্ধ ছিল। তবে দীর্ঘ দিন পর এবার বিধিনিষেধমুক্ত উৎসবমুখর পরিবেশে নামাজ ঈদ উদযাপন করেছেন মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশী প্রবাসীরা।

মালয়েশিয়ায় সরকারের অনুমোদন নিয়ে মুসলিম প্রবাসীদের কোরবানি দিতে হয়। অনুমোদন ছাড়া পশু কোরবানি করা দণ্ডনীয় অপরাধ। সব প্রবাসীর পক্ষে কোরবানি দেয়া সম্ভব হয় না। বেশিরভাগ প্রবাসী গোশত দোকান থেকে কিনে খান। সম্মিলিতভাবে ঈদের নামাজ আদায়ের পর পছন্দের পশু কোরবানি করেন। প্রবাসীদের মাঝে গণহারে গোশত বিতরণের জন্য পশু কোরবানি দেন মারুফ গোল্ডেন রোজ-এর মনিরুজ্জামান মাসুম ও এমসিবি ইঞ্জিনিয়ারিং এসডিএন বিএইচডি-এর মিনহাজ মন্ডল। এ সময় গরু ছাগলসহ ১ ডজন পশু কোরবানি দেয়া হয়েছে। এ সময় মারুফ গোল্ডেন এর মনিরুজ্জামান মাসুম এবং এমসিবি ইঞ্জিনিয়ারিং মিনহাজ মন্ডল ও ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন নাসিরের নেতৃত্ব শতাধিক
প্রবাসী উপস্থিত হয়ে পশু কোরবানি করে তার গোশত সহস্রাধিক প্রবাসীর মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।

সকাল সাড়ে ৮টায় কুয়ালালামপুরের বিভিন্ন মসজিদ ও ঈদগাহ নামাজ শুরু হয়। রোববার মালয়েশিয়ার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানী কুয়ালালামপুরের জাতীয় মসজিদে (নেগারায়) ও সোয়া ৮টায় মসজিদ উইলাইয়া জালান দুতায় সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাতের পর
মুসল্লিরা পরস্পরের সাথে কোলাকুলি করেন। প্রবাসে পরবাসে স্বজনহীন ঈদ বলতে গেলে এক প্রকার নিরানন্দ ও নিষ্প্রাণ। নিজ দেশে পরিবারের সাথে সেমাই খেয়ে যে অনাবিল আনন্দ পাওয়া যায়, সেটা বিদেশে দামি খাবার আর বিশাল প্রাচুর্য্যের মধ্যেও পাওয়া যায় না। তারপরও ভাগ্যকে মেনে নিয়ে পরিবারের আনন্দটা সকল প্রবাসীদের মাঝে ভাগাভাগি করে উপভোগ করার চেষ্টা করেন তারা ।

মালয়েশিয়ার বিভিন্ন শহরে ঈদ-উল-আযহা উদযাপন করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। হাংতোয়া মসজিদ আল বোখারি, মসজিদ জামেক, তিতিওয়াংসা বায়তুল মোকাররাম, কোতারায়া বাংলা মসজিদ, ছুবাংজায়া বাংলা মসজিদ, ক্লাং, পেনাং, ছুঙ্গাই ভুলু, সেলায়ং পাছার পুচং, মালাক্কা, জহোরভারুতেও ঈদের নামাজ আদায় করেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। দীর্ঘ সময় পর এবার বিধিনিষেধ না থাকায় ঈদের নামাজে বাঁধভাঙ্গা ঢল দেখা গেছে প্রবাসীদের। যেভাবে ঈদের আগে দেশে এক সপ্তাহ রেমিট্যান্স প্রবাহের ঢল নামে।

মারুফ গোল্ডেন রোজ এসডিএন বিএইচডি এমডি মনিরুজ্জামান মাসুম বলেন, আমরা প্রবাসে থাকলেও আমরা ঈদের নামাজ পড়ে কোরবানি দিয়ে মাংস প্রবাসীদের মাঝে বিতরণ করে আনন্দটা ভাগাভাগি করার চেষ্টা করি। এই ত্যাগের মাঝে একটা অন্যরকম ভালোলাগা-ভালোবাসা অনুভূত হয়। এমসিবি ইঞ্জিনিয়ারিং এসডিএন বিএইচডি-এর এমডি
মিনহাজ মন্ডল বলেন, আমরা নামাজ শেষ করে আমার নিজস্ব বাড়িতে কোম্পানির কর্মী এবং প্রবাসীদের নিয়ে পশু কোরবানি করেছি। মাংস সকল প্রবাসীদের মাঝে বিতরণ সম্পন্ন করেছি। তিনি আরো বলেন, আমরা প্রতি বছর এভাবেই সকল প্রবাসীরা মিলেমিশে ঈদ উদযাপন করি।

এদিকে আবারো চোখ রাঙাচ্ছে করোনা। গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু সরকার কঠোর বিধিনিষেধের পরিবর্তে স্বাস্থ্যবিধি মেনা চলাসহ ভ্যাকসিনে মোকাবেলা করার পরিকল্পনা নিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে মগ্ন। তারা মনে করেন- করোনায় যে ক্ষতি হয়ে গেছে তা কোনদিন পূরণ হবে না। সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে নতুন নতুন পরিকল্পনায় এগিয়ে যেতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement