২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী শ্রমিকদের মানবেতর জীবনযাপন

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী শ্রমিকদের মানবেতর জীবনযাপন - ছবি : নয়া দিগন্ত

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী অভিবাসী শ্রমিকসহ বিভিন্ন দেশের শ্রমিকদের অস্বাস্থ্যকর, অমানবিক পরিবেশে বসবাসের বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচিত হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর হুঁশিয়ারির পরো শ্রমিকদের প্রতি সংশ্লিষ্ট নিয়োগকর্তাদের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতা অব্যাহত রয়েছে।

সম্প্রতি নিয়োগকর্তাদের উদাসীনতার কারণে বাংলাদেশী কিছু কর্মী প্রায় তিন মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে পানি, বিদ্যুৎ ছাড়া মানবেতর জীবনযাপনের খবর মালয়েশিয়ার গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দ্য ভাইভ নামে একটি সংবাদ মাধ্যম এই খবর প্রকাশ করেছে।

খবরে বলা হয়েছে, দেশটির তামান মেলাবতী নামক এলাকায় বাংলাদেশী কিছু শ্রমিক রয়েছেন, যারা নির্মাণ খাতের কাজে নিয়োজিত। গত তিন মাস ধরে অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। সেখানে একটি রাস্তার পাশে ড্রেনের ওপর শুধুমাত্র ত্রিপল টানিয়ে বসবাস করতে হয়েছে। সেখানে নেই টয়লেট ও গোসলের জন্য কোনো নিরাপদ সুব্যবস্থা। এখানে আধুনিক মালয়েশিয়ার কোনো সুবিধা তারা পাচ্ছে না। নেই বিশুদ্ধ পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। ওই শ্রমিকদের নিয়োগকর্তার কাছে সমস্যার কথা বলা হলেও বিভিন্ন অজুহাত তুলে কর্ণপাত করেনি। তবে ওই বাংলাদেশী শ্রমিকদের নাম ও তাদের নিয়োগকর্তার নাম ঠিকানা প্রকাশ করা হয়নি।

এ ঘটনায় তামান মেলাবতী এলাকার রেসিডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আজহারী আব্দুল তাহারিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের নজরদারির মধ্যেও এই অমানবিক পরিবেশে শ্রমিকদেরকে নিয়োগকর্তা কেমন করে মাসের পর মাস এই অমানবিক পরিবেশে রাখতে পারে? এটা নিশ্চয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা। তিনি আরো বলেন, এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, তাই সরকারের উচিত গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি দেখা।

বাংলাদেশী শ্রমিকরা দ্য ভাইভ’কে জানিয়েছেন, তারা এখানে পাহাড়ী ঢাল মেরামতের কাজে নিয়োজিত, গত তিন মাস আগে তাদের নিয়োগকর্তা তাদের আগের নিরাপদ বাসস্থান থেকে হঠাৎ করে উচ্ছেদ করে রাস্তার পাশে ড্রেনের ওপর ত্রিপল টানিয়ে থাকতে বলে। তাদেরকে যেখান থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল সেখানেও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করতে হয়েছে। অস্বাস্থ্যকর ও অপরিচ্ছন্ন থাকার কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। উচ্ছেদের পর নতুন করে রাস্তার পাশে তাদের বসবাস করতে হচ্ছে। এ পরিবেশে থাকতে অস্বীকার করলে নিয়োগকর্তা তাদের আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে দ্রুতই নতুন বাড়ি ভাড়া নেয়া হবে। ইতোমধ্যে তিন মাস পেরিয়ে গেলেও নিয়োগকর্তা নানা অজুহাতে নতুন বাড়ি ভাড়া করার বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যাচ্ছেন। শ্রমিকরা বলেন, বিদেশী অসহায় সাধারণ শ্রমিক হওয়া তারা নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাইনি।

কিছু দিন আগেও অভিবাসীদের অস্বাস্থ্যকর ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে বসবাস করার বিষয়টি দেশটির সরকারের নজরে আসে। তখন বলা হয়েছিল, শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশসহ থাকার ব্যবস্থা করে দিতে হবে নিয়োগকর্তাদের। যদি এর ব্যত্যয় ঘটে তাহলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে জাতীয় অভিবাসন কর্মী আইনে ৫০ হাজার রিঙ্গিত (১০ লাখ টাকা ) জরিমানাসহ লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, অধিকাংশ নিয়োগকর্তারা শ্রমিকদের কাজ আদায় করার পর কোথায় কী অবস্থায় থাকে তার কোনো খোঁজখবর নেয় না। বিশেষ করে যারা কনস্ট্রাকশন, পামশিল্প, ক্লিনিং ও বৃক্ষরোপণ সেক্টরে কর্মরত তাদের অধিকাংশ শ্রমিক অস্বাস্থ্যকর, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে বসবাস করছে। নিয়োগকর্তারা দেশটির আইন অনুযায়ী নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর শ্রমিকদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করছে না।

নিয়োগকর্তাদের আবাসন গাফিলতিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নজির দেশটিতে খুব একটা দেখা যায় না।


আরো সংবাদ



premium cement
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা, অন্যদের কথা ব্যক্তিগত : প্রেস উইং সালাহর জোড়া গোলে জিতল লিভারপুল ১০ সাংবাদিকসহ ১১ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ৬ দফা মেনে নেয়ার আহবান হাসিনা-কন্যা পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক লেনদেন স্থগিত বুটেক্স-পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হবে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে : প্রেস উইং ব্যর্থ টপ অর্ডার, মুমিনুলের ফিফটির পর পথ দেখাচ্ছেন লিটন তেজগাঁওয়ে বুটেক্স ও ঢাকা পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেলজিয়ামের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়ছে এসডিজি কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’

সকল