প্রতারণা-জালিয়াতির দায়ে মালয়েশিয়াপ্রবাসী পাসপোর্ট দালাল আটক
- আশরাফুল মামুন, মালয়েশিয়া
- ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৫:১৪
দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ায় জাল ডকুমেন্টস, মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাল পাসপোর্ট তৈরি, প্রবাসীদের সাথে বিভিন্নভাবে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে তরিকুল ইসলাম (ছদ্মনাম) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে নারায়ণগঞ্জ র্যাব-১১-এর সদস্যরা। তার আসল নাম ওসমান গনি ডালিম বলে জানিয়েছে র্যাব।
শুক্রবার (১১ ফ্রেব্রুয়ারি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে র্যাব-১১। অভিযুক্ত তরিকুল ইসলাম ওরফে ডালিমকে জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার শিমরাইল মহাসড়কের ফুটওভার ব্রিজ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আর বলা হয়, মালয়েশিয়া প্রবাসী জনৈক ব্যক্তি র্যাব-১১-তে দাখিলকৃত লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন যে, মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশী মো: তরিকুল ইসলাম মালোশিয়ায় অবস্থানকালে বিভিন্ন প্রবাসী ভাইদের ওয়ার্ক পারমিট, ভিসা, পাসপোর্ট ইত্যাদি করিয়ে দেয়ার কথা বলে হাজার হাজার মালয়েশিয়ান রিংগিত প্রতারণার মাধ্যমে গ্রহণ করেন। কিন্তু তার সকল তথ্য (নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, ঠিকানা, ব্যক্তিগত নম্বর, জন্ম তারিখ ইত্যাদি) মিথ্যা হওয়ায় দীর্ঘদিন তাকে গ্রেফতার করা বা আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি।
তথ্য প্রদানকারী ব্যক্তি আরো জানান যে, উক্ত প্রতারক প্রতারণালব্ধ অর্থ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানার পাঁচানি এলাকায় অবস্থান করছে।
অভিযোগ প্রাপ্তির পর ব্যাটালিয়ন সদর তদন্তে নামে এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামির অবস্থান সুনির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করে। সে অনুসারে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন শিমরাইল মহাসড়কের ফুটওভার ব্রিজের নিচের এলাকা হতে আসামি তরিকুল ইসলামকে আটক করা হয়।
তরিকুল ইসলামের কাছে তার পাসপোর্ট, মালয়েশিয়ায় তার ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং সেখানকার পার্মানেন্ট রেসিডেন্সিশিপ কার্ড পাওয়া যায়। তার কাছে প্রাপ্ত পাসপোর্টে প্রদত্ত তথ্য স্থানীয়ভাবে যাচাই-বাছাই শেষে জানা যায় যে, পাসপোর্টে উল্লেখিত আসামীর নাম, পিতার নাম, মাতার নাম এমনকি পাসপোর্টে উল্লেখিত জন্ম তারিখ ও জন্ম নিবন্ধন নম্বর সবই মিথ্যা। আসামি তার প্রকৃত নাম ওসমান গনি ডালিম বলে জানায়।
তিনি সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য প্রদান করে এ পর্যন্ত মোট ৫টি পাসপোর্ট তৈরি করেছেন। সর্বশেষ পাসপোর্টটি তিনি গত ০৯ মার্চ ২০২১ তারিখে পাসপোর্ট ও ভিসা উইং, বাংলাদেশ হাইকমিশন, কুয়ালালামপুর মালয়েশিয়া হতে গ্রহণ করেন। ওই পাসপোর্টে তার জন্ম নিবন্ধন নম্বর দেয়া থাকলেও বাস্তবে ওই জন্ম নিবন্ধন নম্বরের বিপরীতে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত থাকায় মালয়েশিয়ান সরকার মালয়েশিয়ায় তার অবস্থান নিষিদ্ধ করে এবং তার পাসপোর্ট বাতিল করে দেয়। তাকে আইনের আওতায় আনার জন্য মালয়েশিয়ান সরকার তাকে খুঁজতে থাকে। আসামি বিষয়টি বুঝতে পেরে সম্পূর্ণ নতুন নাম-পরিচয় দিয়ে নতুন পাসপোর্ট তৈরি করেন।
পরবর্তীতে তিনি এই তথ্যের ভিত্তিতে মালয়েশিয়ায় ড্রাইভিং লাইসেন্স ও স্থায়ী রেসিডেন্সশিপ কার্ড ইত্যাদি সংগ্রহ করেন। এভাবে তিনি প্রায় দুই যুগ অবাধে মালয়েশিয়া অবস্থান এবং বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম করে আসছেন।
আটক ওসমান গনি ডালিমের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।