আড়াই মাস পর প্রবাসীদের সহযোগিতায় দেশে ফিরলো জহিরের লাশ
- আশরাফুল মামুন, মালয়েশিয়া থেকে
- ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৫:৫৭
রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পর মালয়েশিয়ার হাসপাতালের মর্গে প্রায় আড়াই মাস পড়ে থাকা গাইবান্ধার মো: জহিরুল ইসলাম জবুর (৫৫) লাশ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। লাশটি গত ৩১ ডিসেম্বর রাত ৯টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে। পরে তা গ্রহণ করেন জহিরুল ইসলামের ভাতিজি মোসা: রোমানা আক্তার।
জহিরুল ইসলাম জবু গাইবান্ধা সদর বিষ্ণুপুর গ্রামের কবির পাড়ার মৃত হোসেন আলী মুন্সির ছেলে।
জানা গেছে, তিনি ২৭ বছর আগে চাকরি নিয়ে মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন। দেশে বিয়েশাদি না করায় তার কোনো স্ত্রী-সন্তান ছিল না। বাবা-মা আগেই মারা গেছেন।
জহিরুল ইসলাম জন্ডিস ও লিভারের রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ১৬ অক্টোবর মালয়েশিয়ার ইপুহ এলাকার রাজা হাসপাতালে মারা যান। তার লাশ দেশে নেয়ার মতো পরিবারের সামর্থ্য না থাকায় তা হাসপাতাল মর্গে পড়েছিল।
লাশ দেশে ফেরত পাঠাতে মালয়েশিয়ার কোনো কমিউনিটি বা সংগঠন এগিয়ে না আসায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে মালয়েশিয়ায় দাফন করার জন্য সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিল।
এ সময় ‘টাকার অভাবে হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে প্রবাসীর লাশ’- শিরোনামে দৈনিক নয়া দিগন্তে সংবাদ প্রকাশ হয় গত ২ নভেম্বর।
পরে মানবিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং প্রবাসীরা। জহিরের লাশ দেশে পাঠাতে অর্থের যোগানসহ অন্যান্য সহযোগিতার বিষয়টি ম্যানেজমেন্ট করেন মালয়েশিয়া বাংলাদেশ চেম্বারস অ্যান্ড কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুব আলম শাহ। জহিরের তথ্য ও উপাত্তসহ বাংলাদেশের মন্ত্রণালয় থেকে ক্লিয়ারেন্স সংগ্রহ করেছেন কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
তবে লাশটি দেশে পাঠাতে নানা জটিলতায় পড়তে হয়েছে প্রবাসী নেতৃবৃন্দকে। তারা জানান, বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে ক্লিয়ারেন্স নিতেই দুই মাস সময় লেগে গেছে।
লাশ দেশে প্রেরণ বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, জহিরের কোনো বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা ছিল না, এমনকি মৃত্যুর সময় তার সাথে যে পাসপোর্টের ফটোকপি পাওয়া গিয়েছিল সেটা ছিল নরসিংদী জেলার অন্য এক ব্যক্তির। পরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানা গেল জহিরের আসল ঠিকানা গাইবান্ধা জেলা সদরে।