অর্থাভাবে ১৭ দিন ধরে মালয়েশিয়ার মর্গে পড়ে আছে বাংলাদেশীর লাশ
- মালয়েশিয়া সংবাদদাতা
- ০২ নভেম্বর ২০২১, ১৫:০৬, আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২১, ১৫:২৬
মালয়েশিয়ায় দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে ইন্তিকালের পর ১৭ দিন ধরে একটি হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে এক হতভাগ্য বাংলাদেশীর লাশ। গরীব পরিবার হওয়ার কারণে লাশ বাংলাদেশে নেয়ার খরচ জোগাতে পারছেন না তারা। তাই যেকোনো উপায়ে মালয়েশিয়ার মাটিতে লাশ দাফনের জন্য সম্মতি দিয়েছে ওই হতভাগ্য বাংলাদেশীর পরিবার।
জানা গেছে, জন্ডিস ও লিভার রোগে গত ১৬ অক্টোবর মোঃ জহিরুল ইসলাম জবু (৫৫) নামের ওই গাইবান্ধা প্রবাসী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত জহিরুল ইসলাম গাইবান্ধা জেলার সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর এলাকার কবির পাড়া গ্রামের মৃত হোসেন আলী মুন্সির ছেলে।
জহিরুল বিয়ে করেননি। তার মা-বাবা অনেক আগে মারা গেছেন। এর আগে বেঁচে থাকার সময় জহিরুল ইসলাম বাংলাদেশে থাকা তার ভাইয়ের মেয়ে রোমানা আক্তারের সাথে যোগাযোগ করেন এবং তার অসহায়ত্বের কথা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে রোমানা আক্তার বলেন, তার চাচা জহিরুল ইসলাম দীর্ঘ দিন ধরে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন এবং তাদের সাথে কোনো যোগাযোগও করেনি। এমন অবস্থায় তার লাশ দেশে আনতে গেলে বাংলাদেশী টাকায় প্রায় এক লাখ টাকার প্রয়োজন, কিন্তু এত টাকা সংগ্রহ করার সামর্থ্য আমাদের পরিবারের নেই।
মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের থাকা নরসিংদী প্রবাসী মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, দু’সপ্তাহ ধরে জহিরুল ইসলামের লাশ দেশটির ইপুহ এলাকার লাজা হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে। তার কোনো সঠিক ঠিকানা বা তার পরিচয় উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছিল না। কারণ, তার সাথে যে পাসপোর্টের ফটোকপি পাওয়া গেছে সেখানে তার বাড়ি নরসিংদী সদরে অবস্থিত বলে উল্লেখ থাকলেও ওই ঠিকানায় এ নামে কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে জানা যায় যে জহিরের বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়। তখন আমি অনেক খোঁজাখুজি করে জহিরের আসল ঠিকানা উদ্ধার করি। তার ঠিকানা উদ্ধার করে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করি। কিন্তু, তাদের আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় তারা লাশ মালয়েশিয়ায় দাফন করার সম্মতি দেয়।
জহিরের ভাতিজি রোমানা আক্তার জানিয়েছেন, যদি কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি মরদেহ দেশে পাঠানোর খরচ বহন করেন, তাহলে তারা বিমানবন্দর থেকে তার লাশ গ্রহণ করবেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সরকারিভাবে এখন এ লাশ পাঠানোর সুযোগ নেই। তবে জহিরের পরিবার যদি ইউএনও বা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে আবেদন করে তাহলে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সরকারি খরচে লাশ দেশে পাঠাতে পারে।