মহামারীতে মালয়েশিয়া প্রবাসীদের রেমিট্যান্স কমলো ৪২ শতাংশ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৮ অক্টোবর ২০২১, ১৫:২১
করোনা মহামারীর কারণে মালয়েশিয়ার অর্থনীতি এখন সর্বনিম্নে অবস্থান করছে। দেশটির পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্যমতে, ৮০ দশকের পর অর্থাৎ ২২ বছর পর এই প্রথম জিডিপি বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে। আর এর নেতিবাচক প্রভাব দেশটিতে প্রবাসী রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের উপরও পড়েছে। সম্প্রতি এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত অর্থবছরের তুলনায় এবার ৪২ শতাংশ কমেছে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রেরণ।
শুক্রবার মালয়েশিয়াস্থ অগ্রণী রেমিট্যান্স হাউসের চিফ এক্সিকিউটিভ কর্মকর্তা ও ডিরেক্টর খালেদ মোর্শেদ রিজভী বলেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে গত অর্থবছরের তুলনায় বর্তমান অর্থ বছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৪২ শতাংশ নেমে এসেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অগ্রণী রেমিট্যান্স হাইসের মাধ্যমে প্রবাসীরা দেশে অর্থ পাঠিয়েছেন ২৬০.১১ কোটি টাকা। চলতি মাসের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স গেছে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা। মালয়েশিয়া থেকে বৈধপথে ২০২০-২১ অর্থ বছরে দেশে এসেছে ২ হাজার ২ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন ডলার। বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স প্রেরণে মালয়েশিয়া ছিল পঞ্চম স্থানে। বর্তমানে তা সপ্তমে নেমে এসেছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে পাঠানো হয়েছে ১১০.৭০ মিলিয়ন, আগস্টে ৯৬.২৪ মিলিয়ন, সেপ্টেম্বরে ৮৩.৮৪ মিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরে গড়ে পাঠানো রেমিট্যান্সের তুলনায় ৪২ শতাংশ কম।
বিগত প্রায় দুই বছর ধরে করোনা মোকাবিলায় জারি করা সরকারি বিধিনিষেধ ও লকডাউনে স্থবির হয়ে যায় রেমিট্যান্স প্রবাহ। গণহারে প্রবাসীরা তাদের কর্ম হারিয়েছেন। ব্যবসায়ীরা হারিয়েছেন তাদের সবকিছু। দেশটিতে থাকা লাখ লাখ বাংলাদেশী কর্মী পড়েছেন উভয় সংকটে। কারণ তারা না পারছিলেন তারা মালয়েশিয়ায় আয়-রোজগার করতে কিংবা না পারছিলেন নিজ দেশে খালি হাতে ফিরে যেতে। দীর্ঘ সময় কর্মহীন থাকার ফলে তারা হয়ে পড়েছেন ঋণগ্রস্ত।
তবে আশার কথা হলো বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশটির সরকার অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন এবং সব ধরনের কর্মক্ষেত্রগুলো পর্যায়ক্রমে খুলে দেয়ায় প্রবাসীদের মাঝে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে আসছে। সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সব কিছু খোলে দেয়া হবে। আর এর মধ্যে দেশটির সকল বাসিন্দাদের ১০০ ভাগ টিকা প্রদান সম্পন্ন করা হবে।
গত দুই মাসে সরকারের কিছু বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নেয়ায় আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হতে শুরু করছে মালয়েশিয়া প্রবাসীদের কর্মজীবন। ধারণা করা যাচ্ছে, করোনার কারণে রেমিট্যান্স পাঠানোতে যে ক্ষতিসাধন হয়েছে সেটি পুষিয়ে উঠতে কমপক্ষে ছয় মাস সময় লাগবে।