২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

পাসপোর্ট নিয়ে দূতাবাসের ডিজিটাল ভোগান্তিতে অসহায় মালয়েশিয়া প্রবাসীরা

-

একদিকে ডিজিটাল ভোগান্তিতে বৈধতা হারাতে পারেন অনেকে। অপরদিকে পাসপোর্টের কারণে মালয়েশিয়া সরকারের দেয়া রিক্যালিব্রেশন কর্মসূচিতেও অংশ নিতে পারছেন না শত শত বাংলাদেশী।

পাসপোর্ট পাওয়া আর সোনার হরিণ পাওয়া অনেকটা রূপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছে দূতাবাসের ডিজিটাল পাসপোর্ট সেবায়।

গত বছরের মার্চ থেকে মালয়েশিয়া সরকার বিভিন্ন মেয়াদে মহামারি উত্তরণে চলছে বিধিনিষেধ। আর এ কারণে লোক সমাগমের উপরও করা হয় কঠোর আইন। এমন পরিস্থিতে প্রাবাসী বাংলাদেশীদের কথা চিন্তা করে দূতাবাস স্ব-শরীরে এসে পাসপোর্ট গ্রহণ না করতে এবং একই সাথে পোষ্ট অফিসের মাধমে পাসপোর্ট জমা দিতে জারি করা হয় নোটিশ। সে সময় নোটিশে বলা হয়, রি-ইস্যু ফরম জমা দেয়ার সময় অবশ্যই ব্যক্তিগত হোয়্যাটসঅ্যাপ নম্বর দিতে। যাতে পাসপোর্ট জমা শেষে নিজ নিজ মোবাইলে মেসেজ দেয়া হবে। পোষ্ট অফিসের মাধ্যমে পাসপোর্ট জমা দেয়া কার্যক্রম শুরু হলেও একটি অনিশ্চিত ভোগান্তিতে পড়েন বাংলাদেশীরা। ১ থেকে ৩ মাস বা তার অধিক সময় চলে গেলেও ব্যাক্তিগত মোবাইলে মেসেজ তো দুরের কথা অনলাইনে তার নামও পাওয়া যায়নি এমনও অভিযোগ রয়েছে।

এ দিকে মালয়েশিয়ায় ক্রমেই কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় দূতাবাসে এসে পাসপোর্ট সংগ্রহ করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে এবং দুতাবাসেও বাড়তে থাকে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। সব বিষয় বিবেচনা করে প্রাথমিক অবস্থায় মোবাইল কলের মাধ্যমে পরর্বতীতে অনলাইনের মাধ্যমে অ্যাপোয়েনমেন্ট নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এক্ষেত্রে অধিকাংশ প্রবাসীরাই অনলাইন সেবা না বুঝায় পাসপোর্ট দূতাবাসে আসছে কী না বা কিভাবে তা আবেদন করতে হয় এমন জটিলতার মাঝে পড়ে হঠাৎ করে বন্ধ করে দেয়া হয় সরাসরি দূতাবাসে এসে পাসপোর্ট সংগ্রহ করা। চালু করা হয় পোষ্ট অফিসের মাধ্যমে পাসপোর্ট বিতারণ।

অনলাইনের মাধ্যমে সঠিক প্রক্রিয়ায় আবেদন সম্পূর্ণ শেষে পাওয়া যায় কাঙ্ক্ষিত সোনার হরিণ নামক পাসপোর্ট। আর এই অনলাইন প্রক্রিয়াতে রয়েছে বেশ কিছু ধাপ যা সাধারণ প্রবাসীদের পূরণে পড়ছে ঝামেলায় । দূতাবাসে পাসপোর্ট এসে মাসের পর মাস পড়ে থাকলেও অনলাইনে নিজের পাসপোর্ট ডেলিভারি নম্বর না পাওয়ায় সময় মত পাসপোর্ট পাচ্ছেন না অধিকাংশ বাংলাদেশীরা।

দূতাবাসের কড়া সিকিউরিটি নিরাপত্তায় ভিতরে প্রবেশের সুযোগ হলেও কাউন্টারে থাকা কর্মকর্তাদের আচরণ রহস্যজনক বলে অনেকে এ প্রতিবেদককে জানান। নিজেদের সমস্যার সমাধান না পেয়ে নিরাশ হয়ে ফিরছেন অনেকেই। কেউ বা বাধ্য হচ্ছেন দালালের দারস্থহতে। আবার কেউ বা অভিযোগ করছেন টাকার বিনিময়ে দূতাবাসে না গিয়েও মিলছে পাসপোর্ট সহ সকল সেবা।

এমন পরিস্থিতে মালয়েশিয়ায় থাকা বাংলাদেশীরা মনে করেন, স্বল্প ও অদক্ষ লোক দিয়ে এমন কাজ করালে এমনটা হওয়া স্বাভাবিক। তাই প্রবাসীদের কথা চিন্তা করে দুতাবাসের উচিত অতিরিক্ত দক্ষ জনবল নিয়োগের মাধ্যমে খুব দ্রুত প্রবাসীদের সমস্যা সমাধান করা।

এখন কোথায় যাবেন প্রবাসী বেলাল?

বেলাল বাংলাদেশী প্রবাসী শ্রমিক। পাসপোর্ট পেতে আবেদন করেন পাসপোর্ট তৈরিও হয়। কিন্তু সেই পাসপোর্ট এখনো হাতে পাননি! হতাশ বেলাল। তিনি এখন কোথায় যাবেন? কার কাছে যাবেন?

অবাক করার মতো ঘটনাটি ঘটেছে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনে। পাসপোর্ট সমস্যার সমাধানে হাইকমিশনের কর্তাদের টেবিলে টেবিলে ধর্না দিয়েও কোনো সুরাহা পাননি ভুক্তভোগী বেলাল।

বারবার যাওয়ায় বিরক্ত হয়ে হাইকমিশনের খোদ কর্তারা। তাকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পাসপোর্ট হাতে না পাওয়ায় চরম সঙ্কটে রয়েছেন এই প্রবাসী বাংলাদেশী। পাসপোর্ট না থাকায় ওয়ার্ক পারমিটও নবায়ন করতে পারেননি।

ভুক্তভোগী বেলাল আরো বলেন, ‘হাইকমিশনের লোকজন প্রবাসীদের মানুষ বলেই মনে করেন না। আমাদের তারা গরু-ছাগল মনে করেন। সেভাবেই আচরণ করেন।’

প্রবাসী বেলালের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে পাসপোর্ট বিভাগের দায়িত্বে থাকা দূতালয় প্রধান রুহুল আমিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।


আরো সংবাদ



premium cement