২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

লিসবনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন

লিসবনে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বাংলাদেশ দূতাবাস। - ছবি : নয়া দিগন্ত

যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে বাংলাদেশ দূতাবাস মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করেছে। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে পর্তুগাল সরকার কর্তৃক আরোপিত বিধিনিষেধের প্রেক্ষিতে দিবসটি সীমিত পরিসরে পালিত হয়েছে।

সকালে চান্সারি প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীর উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে দিবসটির কর্মসূচির সূচনা করেন। দিবসটি উপলক্ষে সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী কালো ব্যাজ ধারণ করেন। চান্সারি প্রাঙ্গণ ইতোমধ্যেই ব্যানার, পোস্টার ও বর্ণমালা দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছিল।

রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান দূতাবাসের সীমিত সংখ্যক কর্মকর্তাকে নিয়ে লিসবন শহরের কেন্দ্রস্থলের ক্যাম্পো ডস মারটায়ারস ড প্যাট্রিয়া নামক উদ্যানে অবস্থিত স্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

দুপরে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে চান্সারিতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষা শহীদদের সম্মানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।

এরপর মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্যের ওপর এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা বাঙালির সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অগ্রগতিতে একুশের বিশাল অবদানের বিষয়টি তুলে ধরেন।

রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান তার বক্তব্যে ভাষা শহীদানের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান ভাষা আন্দোলনে তারুণ্যের নেতৃত্বদানকারী সেসময়ের উদীয়মান রাজনীতিক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি। তিনি উল্লেখ করেন, শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার সাংবিধানিক স্বীকৃতি অর্জিত হয়। একুশের অনুপ্রেরণাতেই অব্যাহতভাবে পাকিস্তানী সাংস্কৃতিক আগ্রাসন প্রতিহত করার মাধ্যমে বাঙালি ধাপে ধাপে তার আত্মপরিচয়, অর্থাৎ বাঙালি জাতীয়তাবাদকে খুঁজে পেয়েছিল। এই বাঙালি জাতীয়তাবাদই চূড়ান্ত ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভিত রচনা করেছিল।

যারা প্রবাস জীবনে আছেন, রাষ্ট্রদূত তাদের প্রতি আহ্বান জানান, বিদেশীদের কাছে বাংলা ভাষা আর সংস্কৃতির মহিমাকে তুলে ধরতে আর নিজেদের নতুন প্রজন্মের মাঝে এর চর্চাকে উৎসাহিত করতে।

আলোচনা শেষে সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পর্বে সমবেত কণ্ঠে ’আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানটি পরিবেশন করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে একুশের কবিতা আবৃত্তি করা হয়।

এরপর শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার বিদেহী পরিবারের সদস্যদের এবং ভাষা শহীদ ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত এবং সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের কামনায় মোনাজাত করা হয়।

পরিশেষে, রাষ্ট্রদূত এবং অতিথিরা মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে চান্সারির প্রদর্শনী কক্ষে আয়োজিত ভাষা আন্দোলন বিষয়ক একটি চিত্র প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন।


আরো সংবাদ



premium cement