২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

করোনায় বিবর্ণ আরব আমিরাতের ঈদ

আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের উদযাপন - ছবি : নয়া দিগন্ত

মসজিদের মাইকে আল্লাহু আকবার তাকবির ধ্বনি উচ্চারিত হচ্ছে, কিন্তু মানুষের অংশ গ্রহণের সুযোগ নেই! সবাই নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করে ঈদের নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছে। মনের কোণে জমানো দুঃখ, কষ্ট, বেদনা, দুশ্চিন্তার মাঝে দূর পরবাসে মসজিদের বদলে বাসায় ঈদের নামাজ পড়তে হচ্ছে এ এক ভিন্ন ধরনের ঈদ! একাকিত্বের মাঝে নতুন করে যোগ হলো বাসায় ঈদের নামাজ আদায়।

করোনা ভাইরাসের কারণে দু মাসের বেশি সময় ধরে আমিরাতের মসজিদগুলো বন্ধ। ফলে জুমার নামাজ এবং এমনকি তারাবির নামাজও বাসায় আদায় করতে হয়েছিল আমিরাতে বসবাসরতদের। সবাই আশায় ছিলেন অন্তত ঈদের নামাজটা ঈদগাহে আদায় করবেন, কিন্তু সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় সে সুযোগও আর হয়নি!

আজ আমিরাতে ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। ঈদ হলেও ঈদের আমেজ নেই কারো মনে। আগের ঈদগুলোতে প্রবাসীদের ঈদ কাটত কিছুটা সুখমিশ্রিত অশ্রুজলে। প্রবাসীদের অনেকেই ঈদের নামাজ পড়ে রুমে এসে কিছু খেয়ে পরিবার পরিজনের সাথে মোবাইলে কথা বলে ঈদের আনন্দটাকে কিছুটা হলেও শেয়ার করার চেষ্টা করতেন। কথা শেষে দেন লম্বা একটা ঘুম দিয়ে বিকেলে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মেতে উঠতেন আবার কেউ কেউ পার্ক বা সাগরপাড়ে ঘুরতে যেতেন। অনেকে আবার ছুটিতে কোনো বন্ধুর বাসায় বেড়াতে যেতেন। এভাবে দু’তিন দিন কাটিয়ে আবার দৌড়াতেন কর্মস্থলে, আবার কর্মযজ্ঞ, ব্যস্ততা।

কিন্তু প্রবাসীদের জন্য এবারের ঈদ ভিন্ন রকমের। করোনা ভাইরাস সবকিছু পাল্টে দিয়েছে। এবারের ঈদে অনেক প্রবাসী দেশে টাকা পাঠাতে পারেননি। করোনা ভাইরাসের কারণে কর্মহীন অনেক প্রবাসী। কারো চাকরি নেই কারো কারো চাকরি থাকলেও বেতন নেই! যাদের ছোটখাটো ব্যবসা ছিলো তাদেরও একই অবস্থা। রুমে বা বাসায় অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ঈদের সময় কাটাচ্ছেন। অনেক প্রবাসী আছেন যারা ২/৩ বছর পর ঈদের সময় লম্বা ছুটিতে দেশে যান। কিন্তু এবার বিমানের টিকিট কিনেও দেশে যেতে পারেননি।

ঈদের দিনগুলোতে আমিরাতের অত্যধিক গরমের কারণে অনেকেই বাসা থেকে বের না হলেও এক দিনের জন্য আমিরাতের বিভিন্ন প্রদেশে বাংলাদেশীদের মিলনমেলায় পরিণত হতো। দুবাই’র দেরা বাংলা বাজার, শারজাহ’র রোলা, আজমান বিচ, আবুধাবির কর্ণিশ, আলা আইনের সানাইয়া এলাকায় বিপুলসংখ্যক স্বজনবিহীন বাংলাদেশীদের উপস্হিতি স্বল্প সময়ের জন্য হলেও ভুলিয়ে রাখতো আপন মানুষদের শূন্যতা!

ইমাম হোসেন নামের এক আমিরাতপ্রবাসী ফেসবুকে লিখেছেন, বৈশ্বিক মহামারী, ঈদের নামাজ ঈদগাহে বা মসজিদে পড়া যাবে না, আত্মীয় স্বজনসহ পাবলিক গেদারিং করা যাবে না, ঘুরতে যাওয়া যাবে না, পরিবারের থেকে দূর প্রবাসে আছি এসব কারণে ঈদের আনন্দ অনেকটাই ম্লান লাগছে।

সরকারি নির্দেশনা মেনে মসজিদ বা ইদগাহে সম্মিলিত জামাত নিষিদ্ধ হওয়ার কারণে বাসার সামনে শুধুমাত্র রুমের লোকজন মিলে ঈদের নামাজ আদায় করেছি। তারপরও আলহামদুলিল্লাহ্‌।

করোনা পরিস্থিতি, এবার সবকিছুতে আঘাত হেনেছে আমিরাতের দর্শনীয় স্থানসমুহ পরিদর্শনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে। আরবদের পাশাপাশি অভিবাসীরা পারছেন না বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে, পারছেন না দূরে কোথাও বেড়াতে যেতে। রুমে বসে বাড়িতে মোবাইলে কথা বলে এবং ফেসবুকে সময় কাটাতে হচ্ছে প্রবাসীদের।

সব মিলিয়ে ভয়ানক অভিজ্ঞতা ও কষ্টের ইতিহাস যোগ হবে প্রবাসীদের এবারের ঈদে। তবুও আশায় থাকে মানুষ। আশায় বাঁচে মানুষ। বেদনার অশ্রুজল একদিন থেমে যাবে। ভরসা রাখতে হবে মহান আল্লাহপাকের উপর। আল্লাহ এমন পরিস্থিতি থেকে সবাইকে উদ্ধার করবেন এ বিশ্বাস নিয়ে প্রবাসীদের আগামীর পথ চলতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
মধ্যাহ্নভোজের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩ উইকেট তুলে নিলো বাংলাদেশ সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলবে কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে নারীর নিহত জামায়াতের সাথে ইইউ অন্তর্ভূক্ত ৮টি দেশের প্রতিনিধিদের বৈঠক মনিরামপুরে শ্রমিক দলের সভাপতির উপর হামলা ‘যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন চায় বিএনপি’ দেশব্যাপী দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসজনিত রোগে ভুগছে ৬৫ লাখ মানুষ গ্রেড-১ এ পদোন্নতি পেলেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ডিজি ডা. রেয়াজুল হক ‘বড় কোনো পরিকল্পনা না থাকলে এক দিনে এতগুলো ঘটনা ঘটতো না’ জুলুমের দায়ে মতিউর রহমান ও মাহফুজ আনামকে পদত্যাগ করতে হবে : হেফাজত আমির স্বর্ণের দাম ভরিতে ১,৮৯০ টাকা কমেছে

সকল