২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

কেমন আছে বসনিয়ায় বাংলাদেশী শরণার্থীরা?

কেমন আছে বসনিয়ায় বাংলাদেশী শরণার্থীরা? - ছবি : সংগ্রহ

উন্নত জীবন-জীবিকার তাকিদে প্রতিবছর হাজার হাজার বাংলাদেশী পাড়ি জমান পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। কেউ বৈধ কাজের অনুমতিপত্র নিয়ে যান আবার কেউবা সুনির্দিষ্ট কোনো গন্তব্য ছাড়াই বেরিয়ে পড়েন অজানার উদ্দেশ্যে। বিশেষ করে ইউরোপের যেকোনো দেশে কোনোমতে প্রবেশ করাই থাকে তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য। আর তাদের ইউরোপ যাত্রার এ বীরোচিত ও দুঃসাহসী গল্প যেন মাঝে-মাঝে সিনেমাকেও হার মানায়।

ইউরোপে প্রবেশের জন্য তারা বিভিন্ন রুট ব্যবহার করেন। সম্প্রতি পূর্ব ইউরোপের দেশ বসনিয়া-হার্জেগোভিনা বাংলাদেশীদের কাছে জনপ্রিয় রুট হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। ইতোমধ্যে হাজারের বেশি বাংলাদেশী শরণার্থী বসনিয়ার বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করছেন। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে তারা বসনিয়ায় এসেছেন বলে জানা গেছে।

সাধারণত এখান থেকে ইতালি যাওয়ার পর ফ্রান্স, পর্তুগাল স্পেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তারা ছড়িয়ে পড়ে। ক্রোয়েশিয়া সীমান্তবর্তী বসনিয়ার এক শরণার্থী শিবিরে অবস্থানরত এক বাংলাদেশী শরণার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি বাংলাদেশ থেকে প্রথমে ওমান গিয়েছিলেন। ওমান থেকে ইরান, ইরান থেকে তুরস্ক, তুরস্ক থেকে গ্রিস, অবেশেষে গ্রিস থেকে বসনিয়ায় এসেছেন ক্রোয়েশিয়া হয়ে ইতালিতে প্রবেশ করবেন বলে৷

কিভাবে তিনি ইতালিতে যাবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিভিন্ন ধরণের দালাল আছে এখানে। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার চুক্তির মাধ্যমে দালালদের সহায়তায় ক্রোয়েশিয়া যাওয়ার পর সেখানে দালাল কর্তৃক পূর্ব থেকে নির্ধারিত গাড়িতে করে ইতালি যাওয়া যায়। আর এর জন্য রুট ভেদে বিভিন্ন রকম প্যাকেজ আছে। সেক্ষেত্রে টাকার অঙ্কও হেরফের হয়, সাধারণত ২,০০০ থেকে ৬,০০০ ইউরো দালালকে দিতে হয়।

যাত্রাপথের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, জঙ্গলের মধ্য দিয়ে পায়ে হেঁটে বর্ডার পার হতে কয়েক দিন লাগে। পানি ও কয়েক দিনের শুকনো খাবার তারা সঙ্গে নিয়ে দুর্গম এলাকার অভিযাত্রীদের মতো বর্ডার জয় করতে বেরিয়ে পড়েন। পথিমধ্যে জঙ্গলেই রাত কাটান। এত কষ্ট করে সীমান্তে পৌছানোর পর বর্ডার পুলিশের হাতে ধরা পড়লে আবার ফিরিয়ে দেয়। কেউ কেউ পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঢুকতে পারেন। কেউবা কয়েকবার চেষ্টার পর অবশেষে সফল হন।

ক্যাম্পে বসবাসের পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে জবাবে বাংলাদেশী শরণার্থীদের কয়েকজন বলেন, ক্যাম্পে তেমন কোনো সমস্যা নেই। দিনে দুইবার খাবার, জামাকাপড়, চিকিৎসাসেবা হ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। প্রতি সপ্তাহে এক দিন বসনিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ক্যাম্পে গিয়ে খোঁজ-খবর নেন এবং কেউ আ্যসাইলামের জন্য আবেদন করতে চায় কিনা জানতে চান। তবে আফগান ও পাকিস্তানি শরণার্থীদের হাতে তারা মাঝে-মাঝে ছিনতাই-চাঁদাবজির শিকার হন। টাকা না দিলে ওরা অনেককে ছুরিকাঘাত করে আহত করে।

বসনিয়াসহ বলকানের দেশগুলোর সাথে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক জোরদার করে এ সকল দেশে বাংলাদেশি শরণার্থীদের পুনর্বাসনের সুব্যবস্থা করার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে তারা দাবি জানান।

লেখক : স্নাতকোত্তর গবেষক, ইউনিভার্সিটিঅবসারায়েভো, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা


আরো সংবাদ



premium cement
মধ্যাহ্নভোজের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩ উইকেট তুলে নিলো বাংলাদেশ সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলবে কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে নারীর নিহত জামায়াতের সাথে ইইউ অন্তর্ভূক্ত ৮টি দেশের প্রতিনিধিদের বৈঠক মনিরামপুরে শ্রমিক দলের সভাপতির উপর হামলা ‘যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন চায় বিএনপি’ দেশব্যাপী দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসজনিত রোগে ভুগছে ৬৫ লাখ মানুষ গ্রেড-১ এ পদোন্নতি পেলেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ডিজি ডা. রেয়াজুল হক ‘বড় কোনো পরিকল্পনা না থাকলে এক দিনে এতগুলো ঘটনা ঘটতো না’ জুলুমের দায়ে মতিউর রহমান ও মাহফুজ আনামকে পদত্যাগ করতে হবে : হেফাজত আমির স্বর্ণের দাম ভরিতে ১,৮৯০ টাকা কমেছে

সকল