২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

গৃহকর্মী হিসেবে আবুধাবিতে গিয়ে জনপ্রিয় মডেল বাংলাদেশী প্রিয়া

প্রিয়া আক্তার - নয়া দিগন্ত

২৬ বছর বয়সী বাংলাদেশি তরুণী প্রিয়া আক্তার। গৃহকর্মী হিসেবে আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবি গিয়েছিলেন মাত্র কয়েক মাস আগে। চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশী এই তরুণী প্রায় তিন হাজার মানুষের সামনে আবুধাবির মঞ্চে নৃত্য পরিবেশন করতে যাচ্ছেন। কিভাবে যে কী হয়ে গেলো, সবকিছু প্রিয়ারও অবিশ্বাস্য ঠেকছে। প্রিয়া বলেন, আমার সন্দেহ হচ্ছে এটা বাস্তব নাকি স্বপ্ন!

প্রিয়া আক্তার জানান, বছর খানেক আগে বাংলাদেশে তার বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। ঐ অগ্নিকান্ডে তার শিশু কন্যা কোনোমতে প্রাণে বেঁচে গেলেও গুরুতর আহত হয়। এরপর প্রায় এক বছর ধরে মেয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে তাকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঋণ হিসেবে নিতে হয়েছে। এই ঋণ পরিশোধের তাগিদে গৃহকর্মীর ভিসায় তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবীতে এসেছেন।

আবুধাবিতে গৃহকর্মী হিসেবে আসা আরেক বাংলাদেশী বান্ধবীর সামনে একদিন নেচেছিলেন প্রিয়া। ওই বান্ধবী প্রিয়ার নাচের এই দৃশ্য তার স্মার্টফোনে ধারণ করেন। পরে প্রিয়ার বান্ধবী ওই গৃহকর্মী যেখানে কাজ করতেন সেই বাড়ির গৃহকর্ত্রীকে দেখান। ওই গৃহকর্ত্রী পরে ভিডিওটি তার বন্ধু জনিয়া ম্যাথিউয়ের কাছে পাঠান। ম্যাথিউ স্টাইল ডিভা নামে একটি ফেইসবুক গ্রুপ পরিচালনা করেন, যার সদস্য সংখ্যা প্রায় ১২ হাজার।

এছাড়া জনিয়া ম্যাথিউ গত পাঁচ বছর ধরে আবুধাবিতে ডানডিয়া নামে ভারতীয় একটি নৃত্য উৎসবের আয়োজন করে আসছেন। উৎসবে মেধাবি নারী নৃত্যশিল্পী ও গায়িকাদের অংশগ্রহণের জন্য অনুপ্রেরণা দেন ম্যাথিউ। ম্যাথিউ বলেন, আমি ভিডিওটিতে তার (প্রিয়া আক্তার) সহজাত প্রতিভা দেখে বিস্মিত হয়েছি। সে গৃহকর্মী সেটা জেনে আশ্চর্যবোধ করেছিলাম। তার নাচ আমাদের বিখ্যাত বলিউড নৃত্যশিল্পী নোরা ফাতেহির কথা মনে করিয়ে দিয়েছে।

আগামী ৩ অক্টোবর রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবির খলিফা পার্কে ডানডিয়া নৃত্য উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রিয়া আক্তার দুই ভারতীয় সম্প্রদায় সংগঠন মহারাষ্ট্র মন্ডল এবং ওড়িয়া সমাজের নৃত্যশিল্পীদের সাথে নাচ পরিবেশন করবেন।

নাচের প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের বিষয়ে ব্যাপক উচ্ছ্বসিত প্রিয়া আক্তার বলেন,‘শৈশব থেকেই নাচের প্রতি আমার আগ্রহ ছিল এবং আমি স্কুলের প্রোগামেও পারফর্ম করতাম। কিন্তু আমি কলেজের প্রথম বর্ষে থাকতেই আমাকে পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে ফেলতে হয়। যার কারণে আমার মঞ্চে অভিনয় করার স্বপ্নও ধূলিসাৎ হয়ে যায়। কিন্তু আমি কখনোই ভাবিনি যে, এই দেশটি আমার জন্য এমন অভাবনীয় সুযোগ এনে দেবে। আমি আশাবাদী যে সবকিছু ঠিকঠাক হবে এবং আমার মেয়ের অস্ত্রোপচারের জন্যও প্রয়োজনীয় অর্থও এর মাধ্যমে সংগ্রহ করতে পরবো।’


আরো সংবাদ



premium cement