মালয়েশিয়ায় যুবকের ১৭ বছর, লাশ দেশে আসছে প্রবাসীদের চাঁদায়
- আশরাফুল মামুন, মালয়েশিয়া
- ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৪
পরিবারের স্বচ্ছলতার আশায় ২০০৭ সালের কলিং ভিসায় মালয়েশিয়া পাড়ি জমান আবদুল হান্নান (৪৪) নামের এক বাংলাদেশী প্রবাসী যুবক। কিন্তু জীবন থেকে ১৭ বছর হারিয়ে গেলেও তিনি জীবদ্দশায় স্বচ্ছলতার মুখ দেখেননি।
দীর্ঘ ২৫ দিন অসুস্থ থাকার পর গত শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) চৌকিটের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর পর নতুন জটিলতায় পড়েন স্বজনরা।
এদিকে হাসপাতালের চিকিৎসা বিল ও লাশ দেশে পাঠাতে প্রয়োজন ১২ হাজার রিংগিত। কিন্তু পরিবারের পক্ষে এই বিল পরিশোধ সম্ভব না। হান্নান মিয়ার ভ্যালিট পাসপোর্ট ও বৈধ ভিসা থাকায় শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির মালিক সব ব্যয় বহন করার কথা থাকলেও নিয়োগকর্তা খরচ বহন করেননি। এমতাবস্থায় মালয়েশিয়ায় বসবাসরত তার ছোট ভাই মো: পেল্টু মিয়া কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে গিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানালেও কাউন্টারের দায়িত্ব থাকা কর্মীরা কোনো সাড়া দেননি।
পরে প্রবাসীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ১২ হাজার রিংগিত যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা সাহায্য তুলে হান্নানের লাশ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
জানা গেছে, হান্নান মিয়া দীর্ঘদিন ফুসফুসের ইনফেকশন ও প্রেসারের রোগী ভুগছিলেন। তাই তিনি নিয়মিত কাজ করতে পারেননি।
হান্নান চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সিন্দুরিয়া গ্রামের মরহুম ওমর আলীর ছেলে।
এদিকে দূতাবাস থেকে বলা হচ্ছে, হান্নান নামের তার কোনো স্বজন দূতাবাসের লেবার উইং এসে সঠিকভাবে যোগাযোগ করেনি এবং সঠিকভাবে লেবার উইং এ এসে যোগাযোগ করলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হতো। তার ছোট ভাই দূতাবাসের কাউন্টারে থাকা কোন কর্মীর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন তাও তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।
এ বিষয়ে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এ নিয়োজিত লেবার উইং-এর দ্বিতীয় সচিব সুমন চন্দ্র দাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বৈধ প্রবাসী মারা গেলে কোম্পানির মালিকের সম্পূর্ণ খরচে লাশ দেশে পাঠানো হয়। আর যদি অবৈধ প্রবাসী মারা যান পরিবারের সামর্থ্য না থাকলে দূতাবাসে আবেদন করলে দূতাবাসের বরাদ্দ অনুযায়ী লাশ দেশে পাঠানো হয়ে থাকে।
তিনি আরো বলেন, তার স্বজনরা নিয়মমাফিক দূতাবাসে আবেদন করলে দূতাবাস প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করত।