ভোগান্তি নিয়েই ফিরছেন রাজধানীবাসী
- আহমেদ ইফতেখার
- ২৮ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০
প্রিয়জনের সাথে ঈদ উদযাপন শেষে আবার কর্মস্থল ঢাকায় ফিরছেন রাজধানীবাসী। ফেরার সময় পথে তাদের পোহাতে হচ্ছে নানা ভোগান্তি। বাসগুলোতে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকায় পৌঁছা যাত্রীরা। লঞ্চ আর ট্রেনের টিকিট পাওয়াও ছিল সৌভাগ্যের ব্যাপার। আর যারা দেশের দণি-পশ্চিমাঞ্চল থেকে বাসে ঢাকা ফিরেছেন, ফেরিঘাটে তাদের পড়তে হয়েছে মহাযন্ত্রণায়।
গাবতলীতে গতকাল খুলনা থেকে আসা যাত্রীরা জানিয়েছেন, দৌলতদিয়া ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরির জন্য অপো করতে হয়েছে তাদের। দৌলতদিয়া পয়েন্টে শত শত যানবাহন ফেরির অপোয় আটকে রয়েছে। এ সময় নারী ও শিশুদের সহ্য করতে হয়েছে অবর্ণীয় দুর্ভোগ। মাগুরা থেকে আসা ঢাকার যাত্রী মনির হোসেন জানান, তিনি জেআর পরিবহনের এসি বাসে টিকিট কেটেছিলেন। রাত ১১টায় বাস পান। সাধারণত ভোরেই ঢাকায় পৌঁছে যাওয়ার কথা। কিন্তু তিনি ফেরিই পান সকাল ১০টায়। ঢাকায় পৌঁছাতে তার দুপুর হয়ে যায়। ঢাকার গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল পরিবহন মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কারণে কোনো গাড়িই ঠিক সময় ঢাকায় পৌঁছাতে পারেনি। ফলে গাড়িগুলো ফিরতেও পারছে না সময়মতো। এতে বাসের সিডিউল বিপর্যয় ঘটছে। যে সংখ্যক বাস ভোরে গাবতলীতে পৌঁছার কথা, তার এক-চতুর্থাংশ বাস টার্মিনালে পৌঁছে। এসপি গোল্ডেন লাইন পরিবহনের চালক হাফিজুর রহমান জানান, ঘাটে জটের কারণে খুবই বাজে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক যাত্রী জ্যামের সময় গাড়ি থেকে নেমে লঞ্চে পার হয়ে ঢাকায় ফিরেছেন।
ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়, ফেরিঘাটের সমস্যা এবং পথের যানজটের কারণে কেউই যথা সময়ে রাজধানীতে ফিরতে পারেননি। দূরপাল্লার যেসব ট্রেন, লঞ্চ, বাস ঢাকায় পৌঁছেছে, সবগুলোতেই ছিল উপচেপড়া ভিড়। যাত্রীদের চোখেমুখে ছিল কান্তি ও বিরক্তির ছাপ।
গতকালও রাজধানীর বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে দেখা গেছে ফিরে আসা মানুষের ভিড়। নৌপথে দেশের দণিাঞ্চল থেকে আসা লঞ্চের সবগুলোই ছিল যাত্রীতে ঠাসা। কেবিন পাওয়া ছিল দুঃসাধ্য। লঞ্চগুলো দ্রুত যাত্রী নামিয়ে দিয়ে আবার সদরঘাট টার্মিনাল ছেড়ে যায়। ভোর থেকেই টার্মিনালে ছিল প্রচণ্ড ভিড়। সিএনজি অটোরিকশা ও গণপরিবহনের সংকট থাকায় যাত্রীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
বরিশাল থেকে সোমবার ভোরে ঢাকায় ফেরা রবিউল জানান, অনেক কষ্টে সুরভী লঞ্চে একটি কেবিন পান। সেটার ভাড়া ১২০০ টাকা, কিন্তু তাকে গুনতে হয়েছে দুই হাজার টাকা। কেবিনের সামনেও যাত্রীরা কাঁথা-বালিশ নিয়ে শুয়ে ঢাকায় এসেছেন।
সিরাজগঞ্জ থেকে ট্রেনে ঢাকায় ফেরা যাত্রী মুনিয়া হাসান জানান, নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন না ছাড়ায় ঢাকায় ফিরে অফিস করতে পারলাম না। কমলাপুর রেলস্টেশনে গতকাল যেসব ট্রেন পৌঁছে তার সবই ছিল যাত্রীতে ঠাসা। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত যেসব ট্রেন কমলাপুরে পৌঁছেছে সেগুলোর প্রায় সবই দেরিতে পৌঁছে। কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী জানান, অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে ট্রেনগুলো বিভিন্ন গন্তব্য থেকে ছাড়তে দেরি হয়েছে।