চার মাস ধরে পড়ে আছে বর্জ্য পরিবহনের গাড়ি
- ২৪ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বর্জ্য পরিবহনের জন্য কেনা হয়েছে ১১২টি গাড়ি। কিন্তু ফাইল অনুমোদন ও উদ্বোধনের দিন নির্ধারণ করতে না পারায় চার মাস ধরে অব্যবহৃত পড়ে আছে শতাধিক কোটি টাকায় কেনা এসব গাড়ি। বাংলাদেশ সরকার ও জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) অর্থায়নে গত মার্চের মাঝামাঝি সময়ে গাড়িগুলো আনা হয়। এর মধ্যে রয়েছে কম্প্যাক্টর, কনটেইনার ও খোলা ট্রাক। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের জন্য বরাদ্দ ৫৬টি করে মোট ১১২টি। ঢাকা ছাড়াও বাকি ৩৮টি গাড়ি বরাদ্দ রয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জন্য। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ১৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সাত কোটি টাকা রাখা হয়েছে প্রশিক্ষণ ও আধুনিক ওয়ার্কশপের জন্য। প্রকল্প ব্যয়ের ৯৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা দিয়েছে জাইকা। অবশিষ্ট ৬৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে বরাদ্দ দিয়েছে।
জাপান থেকে আনা সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এসব গাড়ি সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনে পাঠিয়ে দেয়া হলেও এখনো তা অব্যবহৃত অবস্থায়ই রয়েছে। গতকাল সরেজমিন রাজধানীর গুলিস্তানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, নগর ভবনের পেছন দিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হয়েছে গাড়িগুলো। কিছু গাড়ি রাখা হয়েছে নগর ভবনের মূল ভবনের গা ঘেঁষে। ভবনের পেছনেও দেখা যায় কিছু গাড়ি। খোলা স্থানে রাখায় বৃষ্টিতে এরই মধ্যে গাড়িগুলোয় মরিচা ধরতে শুরু করেছে। গাড়িগুলো নগর ভবনের ভেতরে রাখায় বিঘœ ঘটছে সেবাগ্রহীতাদের চলাচলেও।
ডিএসসিসির বর্জ্য শাখার দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে তারা ৩০০টি গাড়ির মাধ্যমে ঢাকা দক্ষিণের বর্জ্য পরিবহনের কাজটি করছেন। এর মধ্যে ৬০টি গাড়ি এরই মধ্যে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তা ছাড়া বর্জ্য পরিবহনের পুরনো গাড়িগুলোরও বেশির ভাগ খোলা ট্রাক। প্রথম পর্যায়ে নতুন গাড়িগুলো যুক্ত হওয়ার পর ব্যবহার অনুপযোগী গাড়িগুলো বাদ দেয়া হবে।
ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা এয়ার কমডোর জাহিদ হোসেন বলেন, জাইকার সাথে যৌথ অর্থায়নে আধুনিক ১৫০টি গাড়ি আনা হয়েছে। সব প্রক্রিয়া শেষ করে অল্প সময়ের মধ্যেই গাড়িগুলো বর্জ্য পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা হবে। জাইকার অর্থায়নে নতুন আনা গাড়িগুলো অব্যবহৃত থাকার কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছরের ডিসেম্বরে। তাই তড়িঘড়ি গাড়িগুলো আনা হলেও এগুলোর বরাদ্দ ও ব্যবহারসংক্রান্ত ফাইল এখনো প্রস্তুত হয়নি। ফাইল প্রস্তুত হওয়ার পর তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে অনুমোদনের জন্য। এরপর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তা পাঠানো হবে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনের মেয়রদের কাছে। উন্নত প্রযুক্তির গাড়িগুলো চালানো ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দু’টি বিশেষ প্রশিক্ষণ আয়োজনের কথা। প্রশিক্ষণ শেষে নির্মাণ করা হবে দু’টি আধুনিক ওয়ার্কশপ। এরপর এগুলোয় বর্জ্য পরিবহনের কাজ শুরু হবে।
এ দিকে ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পৃথক দু’টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কোন জোনে কতটি গাড়ি চলবে, কারা এসব গাড়ি চালাবে, তা নির্ধারণ করবে কমিটি। তবে কবে নাগাদ কমিটি চূড়ান্ত মতামত জানাবে, তা নিশ্চিত করতে পারেনি সিটি করপোরেশন সূত্র।