২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

খুলনাকে থামাতে পারলো না সাকিব-বাবর সমৃদ্ধ রংপুরও

খুলনাকে থামাতে পারলো না সাকিব-বাবর সমৃদ্ধ রংপুরও - ছবি : সংগৃহীত

দুরন্ত খুলনা টাইগার্স। তুলে নিয়েছে আসরে টানা তৃতীয় জয়। সেই সাথে মজবুত করছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান। আজ টাইগার্সদের শিকার তারকাখচিত দল রংপুর রাইডার্স। নাওয়াজ-শানাকার যুগলবন্দীতে রীতিমতো উড়ে গেছে সাকিব-বাবররা।

শুক্রবার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে নাওয়াজ-শানাকার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে রংপুরকে ২৮ রানে হারিয়েছে খুলনা। এদিনে টসে হেরে আগে ব্যাট ৬ উইকেটে ১৬০ রানের পুঁজি পায় তারা। জবাবে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ১৮.৪ ওভারে ১৩২ রানেই থামে রংপুরের ইনিংস।

ধুঁকতে থাকা খুলনাকে প্রথমে ব্যাট হাতে সমৃদ্ধ পুঁজি এনে দেয়ার পর বল হাতেও পথ দেখিয়েছেন নাওয়াজ ও শানাকা। নাওয়াজ ব্যাট হাতে ৩৪ বলে ৫৫ করার পর ১১ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। বিপরীতে ম্যাচসেরা হওয়া শানাকা ১৬ রানে ৪ উইকেট নেয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতে করেন ৩৩ বলে ৪০ রান।

১৬১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই ধুঁকেছে রংপুর। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে তারা। গভীর ব্যাটিং লাইনআপ নিয়েও কোনো চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি খুলনাকে। বলা যায়- একপ্রকার হেসেখেলেই জয় পেয়েছে দলটি। মোহাম্মদ নাবির ফিফটি যেখানে শুধু ব্যবধান কমিয়েছে।

জবাব দিতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই বাবর আজমকে হারায় রংপুর। ৮ বলে ২ করে ওয়াসিম জুনিয়রের বলে এলবিডব্লু হন তিনি। যেই ধাক্কা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি রংপুর। চতুর্থ ওভারে তিনে নামা ব্রেন্ডন কিং ফিরতেই যেন আরো এলোমেলো হয়ে যায় সব।

আসরের প্রথম দুই ম্যাচে ডাক মারার পর আজ অবশ্য রানের মুখ দেখেছিলেন ব্রেন্ডন কিং। তবে ৫ বল খেলে মাত্র ১ রান করতে পারেন তিনি। ৪ ওভারে মাত্র ১১ রানে ২ উইকেট হারায় রংপুর।

চারে নেমে শামিম পাটোয়ারী পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা করেছেন বটে, তবে যোগ্য সমর্থন পাননি অপরপ্রান্তে থাকা ওপেনার রনি তালুকদারের, তিনি তখনো পাননি ছন্দ খুঁজে। ফলে ৩৩ বলে ৩৮ রানের জুটিতে ১৮ বলে ২৮ রানই ছিল শামিমের।

রনি ফেরেন শানাকার শিকার হয়ে ২৫ বল খেলে ১৫ রানে। শামিমও অবশ্য এরপর ইনিংস বড় করতে পারেননি, বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ২২ বলে ৩০ করে৷ এরপর আজমতুল্লাহ ওমরজাই ৪ ও নুরুল হাসান সোহান আউট হন ১ রানে।

আটে নেমেছিলেন সাকিব আল হাসান। চোখের সমস্যার কারণে অবশ্য তার পরে ব্যাট করাটা প্রত্যাশিত ছিল। তবে নতুন পজিশনে ২ রানেই ফেরেন তিনি। ১৪.২ ওভারে ৮০ রানে ৭ উইকেট হারায় রংপুর।

পাঁচে নেমে অবশ্য মোহাম্মদ নাবি চেষ্টা করেছেন প্রতিরোধ গড়ার, তবে তার চেষ্টা শুধু দীর্ঘ করেছে খুলনার জয়ের অপেক্ষা। শেষ পর্যন্ত ৮ বল বাকি থাকতেই অলআউট হয় রংপুর। শেষ ব্যাটার হিসেবে নাবি আউট হন ৩০ বলে ৫০ করে।

এর আগে টসে ব্যাট করতে নামা খুলনার শুরুটা ভালো ছিল না মোটেও। উদ্বোধনী জুটি ভাঙে দ্বিতীয় ওভারেই, মাত্র ১ রানে। ৭ বল খেলে ওমরজাইয়ের বলে ০ রানে ফেরেন এনামুল হক বিজয়।

এনামুল ব্যর্থ হলেও জ্বলে উঠেন আরেক ওপেনার এভিন লুইস। আগের ম্যাচে মাত্র ২১ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করা এই ব্যাটার খেলতে থাকেন দেখেশুনে। তবে অপরপ্রান্ত থেকে তেমন সমর্থন পাননি এই ক্যারিবীয়। মাহমুদুল হাসান জয় ১১ বলে ৭ ও ৬ বলে ৪ রানে ফেরেন আফিফ।

এরপর লুইসকে সঙ্গ দিতে আসেন শানাকা৷ শুরু থেকেই মারমুখী ছিলেন এই লঙ্কান। তবে লুইসের সাথে তার যুগলবন্দী জমেনি, তাদের ১৪ রানের জুটি ভাঙেন হাসান মাহমুদ। লুইসকে উইকেটের পেছনে সোহানের ক্যাচ বানান তিনি। আউট হবার আগে তার ব্যাটে আসে ২৫ বলে ৩৭ রান।

পরের ৮ ওভারে কোনো উইকেট নিতে পারেনি রংপুর। শানাকা আর নাওয়াজ মিলে দুর্দান্ত এক জুটি গড়ে তুলেন। সাকিব আল হাসানও পারেননি যাতে ভাঙন ধরাতে। শেষ পর্যন্ত ১৯তম ওভারে এসে ভাঙে ৫৬ বলে ৭৭ রানের এই জুটি, হাসান মাহমুদ ফেরান শানাকাকে।

শানাকা ফিফটি হাতছাড়া করলেও আসরে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই অর্ধশতক পূরণ করেন নাওয়াজ। শেষ ওভারে রিপল মন্ডলের বলে আউট হবার আগে করেন ৩৪ বলে ৫৫ রান। শেষ দিকে ওয়াসিম জুনিয়র ৩ বলে ৭* করলে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬০ পর্যন্ত পৌঁছায় খুলনার সংগ্রহ।

তিন ম্যাচে ৩ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রাখলো খুলনা টাইগার্স। বিপরীতে ১ ম্যাচ পর আবারো হারলো রংপুর রাইডার্স। ৩ ম্যাচে ২ হার আর ১ জয় সাকিব আল হাসানদের দলের।

 


আরো সংবাদ



premium cement