২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

তুর্কি অভিযানের পর ঘরে ফিরেছে ৯৪ হাজার সিরীয়

তুরস্কে আশ্রয় নেয়া সিরীয় উদ্বাস্তুরা - ফাইল ছবি

সিরিয়ায় তুরস্কের কুর্দিবিরোধী অভিযানের পর গত ১০ দিনে প্রায় ৯৪ হাজার সিরীয় ঘরে ফিরেছে বলে জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘ। সংস্থাটির মানবাধিকার কার্যালয়ের মুখপাত্র জেন্স লার্কে বলেন, ওই অভিযান শুরুর সময় দুই লক্ষাধিক মানুষ ঘরহারা অবস্থায় ছিল। শুক্রবার লার্কে দাবি করেন, তুর্কি অভিযানে ওই অঞ্চলের একাংশ সন্ত্রাসমুক্ত হওয়ায় প্রায় এক লাখ সিরীয় ঘরে ফিরেছে।

চলতি বছরের ৯ অক্টোবর সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে কুর্দিবিরোধী ‘পিস স্প্রিং অপারেশন’ শুরু করে তুরস্ক। সে সময় অভিযানের অংশ হিসেবে তুরস্ক সমর্থিত সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি ইউফ্রেতাসের পূর্ব দিকে প্রবেশ করে। পরে কুর্দি নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় অভিযানে বিমান হামলা ও স্থল অভিযান জোরালো করে তুরস্ক। তখন মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানায়, এ অভিযানে দুই লক্ষাধিক সিরীয় বাস্তস্ত্যুত হয়েছে। জেন্স লার্কে বলেন, ‘এখন আমরা তাদের ফিরে আসা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। প্রায় ৯৪ হাজার সিরীয় ঘরে ফিরেছে, যে এলাকাগুলো এখনো কার্যত তুরস্কের নিয়ন্ত্রণাধীন। এখনো এক লাখের অধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত অবস্থায় রয়েছে।’ তবে তারাও ঘরে ফেরার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।

উল্লেখ্য, কুর্দিদের সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সের (এসডিএফ) অন্যতম সংগঠন ওয়াইপিজি। উত্তর-পূর্ব সিরিয়া ও পাশের ইরাকে এদের আবাস। ওই অঞ্চলের আইএস-বিরোধী লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা দেয় তারা। আর তুরস্কের স্বাধীনতাকামী কুর্দিদের সাথে এদের সম্পর্ক রয়েছে দাবি করে এ সংগঠনকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে বিবেচনা করে আঙ্কারা। এ কারণে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে তাদের উচ্ছেদ করে সেখানে ‘নিরাপদ অঞ্চল’ প্রতিষ্ঠা করে তুরস্কে অবস্থানরত ৩৬ লাখ নিবন্ধিত সিরীয় শরণার্থীকে পুনর্বাসন করতে চায় আঙ্কারা। এরই ধারাবাহিকতায় ‘পিস স্প্রিং অপারেশন’-এর কয়েক দিন পর ২০১৭ সালের এক চুক্তির আওতায় রাশিয়ার সাথে চুক্তি করে তুরস্ক। চুক্তি অনুযায়ী সেখান থেকে সিরীয় কুর্দিদের সরিয়ে একটি ‘নিরাপদ অঞ্চল’ প্রতিষ্ঠা করা হয়।

এদিকে রয়টার্স জানায়, উগ্রবাদী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বন্দী সদস্যদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাবে তুরস্ক। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলাইমান সয়লু গতকাল শনিবার সাংবাদিকদের এমনটা জানান। বন্দী সদস্যদের ব্যাপারে করণীয় কী হতে পারে তা নিয়ে ইউরোপের দেশগুলোকে না ভাবার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘ব্যাপারটি নিয়ে ইউরোপীয়রা না ভাবলেও চলবে। তুরস্ক অন্য দেশগুলোর জঙ্গিদের জন্য সরাইখানা নয়। আমরা দায়েশের বন্দীদের তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাবো।’

সম্প্রতি সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পরপর ওই অঞ্চলের কুর্দিদের বিতাড়িত করতে এক সেনা অভিযান চালায় তুরস্ক। ওই সেনা অভিযানের সময় আলেপ্পো ও রাকায় কুর্দিদের হাতে বন্দী বহু আইএস জঙ্গিদের তুরস্কের সেনারা পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয় বলে অভিযোগ করে কুর্দিরা। সেনা অভিযানে বহু আইএস জঙ্গি তুরস্কের সেনাদের হাতে বন্দীও হয়েছে বলে জানায় তুর্কি কর্তৃপক্ষ। এবার এসব জঙ্গিদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ঘোষণা দিলো দেশটি। ইয়েনি সাফাক


আরো সংবাদ



premium cement