সুনামগঞ্জের কয়েকটি বাঁধ ভেঙ্গে বিভিন্ন হাওরে পানি প্রবেশ করছে
- তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা
- ০৫ মে ২০১৯, ১৫:২০
ফণীর প্রভাবে অতিবৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশা উপজেলার কয়েকটি বাঁধ ভেঙ্গে ও বাঁধ উপচে বিভিন্ন হাওরে পানি প্রবেশ করছে। হাওরগুলো হলো, হালির হাওর, খরচার হাওর, গোরাডুবা, বোয়ালা, লালুগোয়ালা, গোরমা, মাটিয়ান হাওর, বেহেলি, শনির হাওরসহ কয়েকটি হাওর।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, শনিবার রাত ১২টায় জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলী ও রহমতপুর এলাকা দিয়ে শনির হাওরে এবং বদরপুর ও নিতাইপুর এলাকা দিয়ে হালির হাওরে পানি প্রবেশ করার ফলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আজ রোববার সকালে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে আসেন জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা পাল। এ সময় এসব বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের কিছু অভিযোগের ব্যাপারে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, বাঁধ নির্মাণে কোনো গাফিলতি হয়েছে প্রমাণ পাওয়া গেলে কোনো ছাড় পাবে না কেউ, কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিভিন্ন হাওর পাড়ের বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে আরো জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সীমান্তের ওপারে ও সুনামগঞ্জে ভারী বর্ষণ হয়। এ কারণে মেঘালয় পাহাড় থেকে পাহাড়ি ঢল যাদুকাটা, সুরমা নদী দিয়ে নেমে এসে বৌলাই, রক্তি, পাটলাইসহ কয়েকটি নদী দিয়ে পানি অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যায় এবং উজান থেকে নেমে আসা পানি ভাটির দিকে প্রবল বেগে ধাবিত হতে থাকে। এতেই হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের ডিজাইন লেভেল অতিক্রম করে পানি কয়েকটি হাওরে প্রবেশ করে। আর কয়েকটি বাঁধ ভেঙ্গে পানি প্রবেশে করে। খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ছুটে গিয়ে দেখি নদীর পানি ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে ও উপচে হাওরে প্রবেশ করছে। এতো বেশি পরিমাণ জায়গা দিয়ে পানি ডুকছে তা কোনো ভাবেই আটকানো সম্ভব নয়।
কৃষক মালেক মিয়া বলেন, কাটা ধান খলায় এখনো রয়েছে। কাটা ধান ও খড়গুলো বৃষ্টি আর এখন পানি প্রবেশ করার কারণে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল মন্নাফ বলেন, তাহিরপুর, ধর্মপাশা, শাল্লা, দিরাই, জগন্নাথপুর, জামাগলঞ্জ এসব এলাকার হাওরের শতভাগ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। তাহিরপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা তাকে জানিয়েছেন হালির হাওর ও শনির হাওরের শতভাগ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। এখন কিছু জমি রয়েছে যেগুলো অবস্থান বেশ উচু এলাকায়। হাওরে পানি প্রবেশ করায় ধানের কোনো ক্ষতি হবে না। দেরিতে রোপণ করায় পাকতে দেরি হচ্ছে বলে কিছু ধান কাটা বাকি রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, চলতি বোরো মওসুমে জামালগঞ্জ উপজেলায় ২৪ হাজার ৬৬০ হেক্টর ও তাহিরপুর উপজেলায় ১৮ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হয়। হালির হাওর ও শনির হাওরের ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছিল। বেশির ভাগ ধান কাটা হয়েছে। এ পর্যন্ত হাওর এলাকায় মোট এক লাখ ৭২ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে এক লাখ ৬১ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক ভূঁইয়া জানান, হাওরে পানি প্রবেশ করার খবর পেয়ে সকাল থেকে বিভিন্ন হাওরের বাঁধ পরিদর্শন করেছি। হাওরের ধান কাটা শেষ পর্যায়ে। কিছু জমি এখনো বাকি আছে সেগুলো কাটছে কৃষকরা। পানি বাড়ার পূর্বই ধানগুলো কাটা শেষ হয়ে যাবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা