২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মার্কিন সিনেটরকে কাশ্মিরে প্রবেশে বাধা, মোদির তীব্র সমালোচনা

মার্কিন সিনেটর ক্রিস ভ্যান হলেন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি - সংগৃহীত

নিজ চোঁখে বাস্তব অবস্থা দেখতে ভারতশাসিত কাশ্মিরে ঢুকতে না দেয়ায় ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সিনেটর ক্রিস ভ্যান হলেন। পাশাপাশি গত দু’মাস ধরে কাশ্মির উপত্যকাকে কার্যত অবরুদ্ধ করে রাখাসহ সারাবিশ্ব থেকে নয়াদিল্লি কাশ্মিরিদের বিচ্ছিন্ন করে রাখায় গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন তিনি। নয়াদিল্লির আচরণে ক্ষোভ জানিয়ে মার্কিন সিনেটর ক্রিস ভ্যান হলেন বলেছেন,‘কিছু লুকনোর না থাকলে, কাশ্মিরে ঢুকতে দিতে ভারতের ভয় পাওয়ার কথা নয়।’

সম্প্রতি দু’দিনের ভারত সফরে এসেছিলেন মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাটদলীয় সিনেটর ক্রিস ভ্যান হলেন। গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে দেশটির সরকারের একাধিক আমলা ও কর্মকর্তার সাথে বৈঠকও করেন তিনি। তাছাড়া ভারতের আসার এক সপ্তাহ আগে কাশ্মিরে প্রবেশের অনুমতি চেয়ে ভারত সরকারকে চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নরেন্দ্র মোদির ভারত সরকার তাকে সেই অনুমতি দেয়। আর এর জের ধরেই নরেন্দ্র মোদি ও ভারত সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন তিনি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন সিনেটর ক্রিস ভ্যান হলেন বলেন,‘নিজের চোখে ভারতশাসিত কাশ্মিরের পরিস্থিতি দেখতে চেয়েছিলাম। সেই মতো এক সপ্তাহ আগে থেকে কাশ্মিরে প্রবেশের আবেদন জানিয়ে রেখেছিলাম ভারত সরকারের কাছে। তা সত্ত্বেও (নয়াদিল্লি) আমাকে কাশ্মিরে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। আমাদের জানানো হয়- কাশ্মিরে যাওয়ার ‘সঠিক সময়’ এখন নয়।’

উল্লেখ্য, সিনেটর ক্রিস ভ্যান হলেনের বাবা ক্রিস্টোফার ভ্যান হলেন সিনিয়র একসময় পাকিস্তান ও ভারতে মার্কিন দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন। বাবার কর্মসূত্রে পাকিস্তানের করাচিতে জন্মগ্রহণ করেন ক্রিস ভ্যান হলেন। পরে ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের কোদাইকানালের একটি স্কুলে পড়াশোনা করেন তিনি। তাই দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং কাশ্মির সমস্যা নিয়ে যথেষ্ট সচেতন মার্কিন সিনেটর ক্রিস ভ্যান হলেন।

সিনেটর ক্রিস বলেন,‘কাশ্মিরে গিয়ে নিজের চোখে পরিস্থিতি কেমন দেতে চেয়েছিলাম। ভারত সরকারের কারণে তা হয়ে ওঠেনি। কোনো কিছু লুকনোর না থাকলে, কাশ্মিরে পা রাখা নিয়ে তো ভারতের কোনো ভয় থাকার কথা নয়। আমার মতে, কাশ্মিরে যা ঘটছে, ভারত সরকার তা কাউকে দেখতে দিতে চায় না।’

এ ব্যাপারে অবশ্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে সরকারি সূত্রে খবর, ‘নিরাপত্তার কারণেই’ অন্য দেশ থেকে আসা বিশিষ্ট মানুষদের কাশ্মিরে যেতে দেয়া হয়নি।

ভারতীয় ও পাকিস্তান বংশোদ্ভূত মুসলিম অধ্যুষিত মেরিল্যান্ডের সেনেটর ক্রিস আগেও একাধিক বার ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মিরের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁর উদ্যোগেই গত সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস কমিটিতে জম্মু-কাশ্মির নিয়ে একটি বিশেষ বিল গৃহীত হয়। তাতে কাশ্মির উপত্যকার মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, অবিলম্বে কাশ্মিরের সব জায়গা থেকে কারফিউ তুলে নিতে হবে। মুক্তি দিতে হবে সমস্ত বন্দিদের। যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করে চালু করে দিতে হবে ইন্টারনেট সেবা। সূত্র : আনন্দবাজার।


আরো সংবাদ



premium cement