যোগ দিয়েই আবার বিজেপি ছাড়ছেন শোভন-বৈশাখী, নেপথ্যে সাবেক বান্ধবী
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ৩১ আগস্ট ২০১৯, ২০:৪৪, আপডেট: ৩১ আগস্ট ২০১৯, ২০:৫৪
বিজেপিতে যোগ দিতে না দিতেই বিজেপি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবাদ মাধ্যমকে বৈশাখী বলেন, ‘আমাদের নিষ্কৃতি দেওয়া হোক’।
বিজেপি নেতৃত্বের উপর ক্ষোভ থেকেই যে এই সিদ্ধান্ত তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন অধ্যাপিকা বৈশাখী। গত বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়ের সাথে বৈঠক হয় শোভন ওবৈশাখীর। সেই বৈঠকেই এই ‘চরম সিদ্ধান্ত’ বৈশাখী নেন বলে জানা যায়। বান্ধবী বৈশাখীকে পাশে নিয়েই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একদা প্রিয়ভাজন শোভন।
বিজেপি ছাড়ার ব্যাপারে বৈশাখী বলেন, ‘যোগদানের পর থেকে কিছু ঘটনায় বিরক্ত আমরা। রাজ্যের পর্যবেক্ষকের সঙ্গে বৈঠক হয় সম্প্রতি। আমাদের যোগদানে দলের একাংশের খারাপ লেগেছে। বারবার অসত্য কথা বলে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে। শোভনবাবুরও ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়টি বারবার বিজেপি নেতৃত্বকে জানিয়েছি। সেই যদি পুরানো দলের চটিতেই পা গলাবে বিজেপি, তাহলে তো অপমান সহ্য করে পুরানো দলেই থাকা যেত। রাজনৈতিক কথার বদলে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হচ্ছে। এই পরিবেশে কাজ করা অসম্ভব। আমি আমার সিদ্ধান্ত জানাই। আমার তরফ থেকে বলেছিলাম, এক মুহূর্ত বিজেপি দলে থাকা উচিত নয়। আমায় নিষ্কৃতি দিন। শোভনবাবু বলেন, সংগঠনের কাউকে বিব্রত করতে চাই না, আমাদের নিষ্কৃতি দেওয়া হোক’।
শোভন-বৈশাখীর বিজেপি ছাড়ার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘সবার কাজ করার সুযোগ ও অধিকার আছে। দল সবার জন্য দরজা খোলা রেখেছে। কারও কোনও অসুবিধে হলে আলোচনা করে মেটানো হবে। যারা এসেছেন, তারা সিদ্ধান্ত নিক কী করবেন’।
পশ্চিমবঙ্গের আরেক শীর্ষ বিজেপি নেতা বলেন, ‘শোভনবাবুকে ডাকলে বৈশাখীকেও ডাকতে হবে সবসময়, এটা বিজেপি দলে হয় না। এটা তৃণমূলে হয়। আমাদের দলে এসব হবে না’।
বিজেপি এমপি লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বিজেপিতে থাকতে হলে, নিয়ম মানতে হবে, বিজেপির নীতি-আদর্শ মানতে হবে’।
উল্লেখ্য, ১৪ আগস্ট দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে শোভন-বৈশাখীর যোগদান পর্ব থেকেই জটিলতার সূত্রপাত। সেদিন বিজেপি সদর দফতরে শোভন-বৈশাখীর যোগদানের কয়েক মুহূর্ত আগে নাটকীয়ভাবে সেখানে হাজির হন রায়দিঘির তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়।
‘প্রাক্তন বান্ধবী’কে দেখে চমকে যান শোভন। ‘দেবশ্রী রায় যোগ দিলে, আমরা যোগ দেব না’, বিজেপি নেতৃত্বকে এ কথা স্পষ্ট করে দেন শোভন। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতেও দেবশ্রীকে দলে নিলে, সেদিনই শোভনের বিজেপিতে শেষদিন হবে বলে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। এখান থেকেই বিজেপির সঙ্গে শোভন-বৈশাখীর ‘মন কষাকষির’ সূত্রপাত বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
এদিকে, শোভন-বৈশাখীর আপত্তির কারণে ১৪ আগস্ট বিজেপি দফতর থেকে দেবশ্রীকে খালি হাতে ফিরতে হলেও পরবর্তী কয়েক দিনে তার বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা ক্রমশ বাড়তে থাকে।
শোভন-বৈশাখীর আপত্তিকে যে বিজেপি বুড়ো আঙুল দেখিয়েই দেবশ্রীকে দলে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, তা স্পষ্ট। আর এর ফলেই ‘স্বাভাবিকভাবে’ বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে শোভন-বৈশাখীর।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা