২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

‘মুসলিমরা গরু-বাছুর নয়, তারা মানুষ’

- ছবি : সংগৃহীত

ভারতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতে মুসলমানদের ওপর যে অত্যাচার চালানো হচ্ছে, তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন (অল ইন্ডিয়া মজলিসে ইত্তেহাদুল মুসলিমীন (এআইএমআইএম) নেতা আসাদুদ্দিন ওআইসি। ক্ষোভের সাথে তিনি জানান, মুসলমানরা গরু-বাছুর নন, তারাও মানুষ।

গতকাল ভারতের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে একটি খবর ভাইরা হয়ে যায়। তাতে দেখা যায় এক ব্যক্তির গায়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের চি‎হ্ন ‘ওঁ’ খোদাই করা আছে। অভিযোগে জানা গেছে, নাবীর নামের ওই মুসলিম বন্দীর গায়ে তিহার জেলে জোরপূর্বক ওই ট্যাটু করিয়ে দেয়া হয়। লোহা গরম করে তা দিয়ে এ ট্যাটু বানানো অভিযোগ ওঠে।

দিল্লির একটি আদালত স্বল্প সময়ের মধ্যে এ ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট দেয়ার আহ্বান জানান।

বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। এক টুইটে তিনি লিখেন, প্রতিদিন নতুন নতুন উপায়ে সংখ্যালঘুদের হেনস্থা ও অপমানিত করা হচ্ছে। এ রকম আচরণ নির্মম ও অমানুষিক। মুসলিমরা গরু বাছুর নয়। তারাও মানুষ। (এখন এটা যেন না বলা হয় নাবিরের গায়ে ওই বিশেষ চিহ্ন খোদাই করার পিছনে অন্য কারণ আছে)৷

গত শুক্রবার দিল্লির এক আদালতে নাবির নামের তিহার জেলের এক বন্দি জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তার ওপর অকথ্য অত্যাচারের অভিযোগ আনেন। অভিযোগে তিনি জানান, তাকে মারধরের পর উপোস করিয়ে রাখা হয়েছিল। তারপর পিঠে ‘ওঁ’ চিহ্ন লিখে দেয়া হয়। দিল্লি কোর্টে জামা খুলে পিঠের ওই চিহ্নটিও দেখান নাবির। তারপরই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন দিল্লি আদালত।

এই ঘটনা গোটা দেশে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে৷ মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে নাবিরের পিঠে ওই চিহ্ন জেল সুপারিন্টেন্টেড লিখেছেন। তবে জেল কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। নাবিরকে তিহার জেলের ৪ নম্বর সেলে রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগে আসামের এক বৃদ্ধ ব্যবসায়ীকে গরুর মাংস খেতে বাধ্য করেছিল হিন্দু উগ্রবাদী যুবকরা। এসব বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত করে ওআইসি টুইটারে ওই কথা বলেন।

আরো পড়ুন : আসামে শুকরের মাংস খেতে বাধ্য করা হলো মুসলিম ব্যবসায়ীকে
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ০৯ এপ্রিল ২০১৯, ১১:২৮
ভারতের আসামে আবারো গরুর মাংস বিক্রি করা নিয়ে এক বৃদ্ধ ব্যবসায়ীকে নাজেহাল করেছে একদল উগ্রপন্থী যুবক। তারা ৬৮ বছরের ওই ব্যক্তিকে কেবল মারধর বা হুমকিই দেয়নি, বরং তারা তাকে শুকরের মাংস খেতেও বাধ্য করে। পুলিশ এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে।

এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, গত সোমবার আসামের বিশ্বনাথ জেলার এ ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনার ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ব্যবসায়ী শওকত আলী কাদামাটির মধ্যে হাঁটুতে ভর করে বসে আছেন। তার চারপাশে অনেক যুবকের ভিড়। তারা তাকে বারবার আঘাত করছিল এবং হুমকি দিচ্ছিল। এক পর্যায়ে তারা তাকে শুকরের মাংসের টুকরা খেতে বাধ্য করে। এ সময় এক যুবক তাকে জিজ্ঞাসা করে, তুমি কি বাংলাদেশি? এনআরসিতে কি তোমার নাম আছে?

পুলিশ জানায়, সম্প্রতি স্থানীয় কিছু গরুর মাংস বিক্রয়ের অভিযোগ নিয়ে তার ওপর হামলা করে। গত রোববার আবারো ১০-১২ জন যুবক তার দোকানে হামলা চালায়। গরুর মাংস বিক্রির লাইসেন্স দেখাতে পারেননি শওকত- এ দাবিতে গত সোমবার তারা ওই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটায়।

শওকতের ভাই সাহাবুদ্দিন বলেন, শওকতকে বাংলাদেশি বলে দাবি করে কিছু যুবক তাকে বেধড়ক মারধর করে। এমনকি তাকে শুকরের মাংস খেতে বাধ্য করে। এমনকি গরুর মাংস বিক্রির অনুমতি দেয়ায় বাজারের ইজারাদার কমল থাপাকেও মারধর করা হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

উল্লেখ্য, বৃদ্ধ ব্যবসায়ী শওকত আলী আসামের বিশ্বনাথ জেলার চারিআলি এলাকার বাসিন্দা। গত ৩৫ বছর ধরে তিনিকুটির চারিআলি বাজারে ব্যবসা চালিয়ে আসছেন তিনি। বর্তমানে তাকে একটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, তারা এ ঘটনায় দুটি এফআইআর দায়ের করেছে এবং এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যেই অবশ্য পুলিশ এ ঘটনার সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে।

এসপি রাকেশ রৌশনের দাবি করেন, বিষয়টি সাম্প্রদায়িক নয়। দুই সম্প্রদায়ের মানুষকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। আগামীকাল এ নিয়ে শান্তিবৈঠক ডেকেছেন জেলাশাসক।


আরো সংবাদ



premium cement