আল্লাহ কাদের ভালোবাসেন
- ফিরোজ আহমাদ
- ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৩:০৫, আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:০১
হিংসা, অহঙ্কার, ক্রোধ, জিদ, রাগ কিংবা উত্তেজনা মানুষকে সমূলে ধ্বংস করে দেয়। কিন্তু কাউকে ক্ষমা করলে কিংবা কারো প্রতি উদারতা প্রদর্শন করলে, আল্লাহ তায়ালা জগৎ-সংসারে ওই ক্ষমাশীল ব্যক্তির মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। ক্ষমাশীলতার গুণে গুণান্বিত হয়ে একজন সাধারণ মানুষ অসাধারণ মানুষে পরিণত হয়ে যায়। ক্ষমা করা কিংবা উদারতা প্রদর্শন করা একটি স্বর্গীয় গুণ। ক্ষমাশীল ব্যক্তিই হলো সর্বোত্তম সবরকারী। যিনি ক্ষমা করেন, তিনি ধৈর্য ও সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ নিজে দয়াশীল ও ক্ষমাশীল বলে, তিনি ক্ষমাশীল ব্যক্তিকে ভালোবাসেন। কুরআনে এরশাদ হয়েছে- ‘যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।’ (সূরা ইমরান : ১৩৪)।
সংসার ও সমাজ জীবনে মানুষ একে অপরের রূঢ় বা কটুকথা কিংবা আচার-আচরণের বিনিময়ে মনে কষ্ট পেয়ে থাকে। রূঢ় আচরণকে কেন্দ্র করে, জগৎ-সংসারে একে অপরের সাথে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। মতানৈক্য ও মতবিরোধকে কেন্দ্র করে পরস্পরের মধ্যে দ্বন্দ্ব, সঙ্ঘাত ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারিমের মাধ্যমে মানুষদের একে অপরকে ক্ষমা করার নির্দেশ দিয়েছেন। কুরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা ভালো কিছু প্রকাশ করো কিংবা গোপন করো অথবা মন্দ ক্ষমা করে দাও। তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, ক্ষমতাবান।’ (সূরা নিসা : ১৪৯)।
ক্ষমাশীল ব্যক্তি আল্লাহর কাছ থেকে বিশেষ পুরস্কার পাবেন। যে ব্যক্তি পরস্পরের মধ্যে বিরোধ নিষ্পন্ন করে দেয়, তিনি আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার পাবেন। কুরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আর মন্দের প্রতিফল মন্দ। অতঃপর যে ক্ষমা করে দেয় এবং আপস নিষ্পত্তি করে, তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ জালিমদের পছন্দ করেন না।’ (সূরা শুরা : ৪০)।
দান-সাদকা যেমন সম্পদ কমাতে পারে না। তেমনি কাউকে ক্ষমা করলে বা কারো প্রতি উদারতা প্রদর্শন করলে, ক্ষমাশীল ব্যক্তির মর্যাদা কখনো কমে না; বরং বহু গুণে ক্ষমাশীল ব্যক্তির মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূল সা: এরশাদ করেছেন, সাদকা করাতে সম্পদের ঘাটতি হয় না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আর কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনীত হলে তিনি তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। (মুসলিম : ২৫৮৮)।
উদারতা হলো মুসলমানের বৈশিষ্ট্য। কোমলতা মুসলমানের বিশেষ একটি গুণ। আল্লাহর রাসূল সা: যখন হজরত মুয়াজ রা: ও হজরত মূসা রা:কে ইয়েমেনে প্রেরণ করেন ও আদেশ দেন যে, লোকদের প্রতি কোমলতা করবে, কঠোরতা করবে না, তাদের সুখবর দেবে, ঘৃণা সৃষ্টি করবে না। পরস্পর একমত হবে, মতভেদ করবে না। (বুখারি : ৩০৩৮)। পরিবার সমাজ সংসারে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরস্পরের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিতে পারে। তবে মুসলমান হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো, একে অপরকে ক্ষমা করে দেয়া। পরস্পরের ভুলত্রুটিগুলোকে শুধরে দেয়া। ধৈর্য ধারণের জন্য পরামর্শ দেয়া।
লেখক : প্রবন্ধকার
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা