শিকলবন্দী মেয়েটি যখন বাবা-মায়ের বোঝা!
- পাবনা সংবাদদাতা
- ২২ আগস্ট ২০১৯, ১৩:১০
দেশের একমাত্র মানসিক হাসপাতাল পাবনায়। এই হাসপাতালকে ঘিরে মাঝে মধ্যে কিছু অদ্ভুত এবং অমানবিক ঘটনার খবর আসে। কেউ এই হাসপাতালে নিজেদের ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে চিকিৎসার জন্য রেখে যায়। আর কোনো দিন এসব রোগীর খোঁজ নিতে আসে না স্বজনেরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের দেয়া ঠিকানা অনুযায়ী রাখতে গেলে তার কোনো হাদিস মেলে না। ভুয়া ঠিকানা হওয়ায় বিপাকে পড়ে কর্তৃপক্ষ। তেমনই একটি ঘটনা ১৮ বছরের এই মেয়েকে নিয়ে। হাসপাতালের পাশে আশ্রমে রেখে মা পালিয়েছেন। কেউ তার কোনো সন্ধান দিতে পারছে না।
মেয়েটি শ্যামলা রঙা গোলগাল মুখমণ্ডল। সুঠাম শারীরিক গঠন। মাঝে মধ্যে মিষ্টি করে হাসে। আবার চুপচাপ হয়ে যায় মুহূর্তে। খুব কম কথা বলে। হুটহাট দুই-একটা কথা বললেও কোনো মানে খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রায় দুই মাস আগে মানসিক প্রতিবন্ধী এই মেয়েটিকে পাবনা জেলা শহরের হেমায়েতপুরে শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের সৎসঙ্গ আশ্রমে ফেলে রেখে নিখোঁজ হয়েছেন তার মা। মেয়েটি শিকলবন্দী। শিকল খুলে দিলে এদিক ওদিক দৌড়ে পালিয়ে যায়।
শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের সৎসঙ্গ আশ্রমের পাশে পাবনা মানসিক হাসপাতাল। দেশের সবচেয়ে বড় বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে প্রতিদিন এখানে অনেক মানসিক রোগী আসেন। দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা অনেক সময় চিকিৎসাজনিত কারণে জেলা শহরে অবস্থান করেন। থাকা-খাওয়ার জায়গা না থাকলে সৎসঙ্গ আশ্রমে আশ্রয় নেন। আশ্রম কর্তৃপক্ষ তাদের বিনামূল্যে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ জুন মানসিক প্রতিবন্ধী ওই মেয়েটিকে নিয়ে তার মা আশ্রমে আসেন। মেয়েটিকে নিয়ে কিছুক্ষণ তিনি আশ্রমে অবস্থান করেন। এরপর মেয়ের কিছু কাগজপত্র আনার কথা বলে আশ্রম থেকে বের হয়ে যান। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ দুই মাস। মেয়েটির মা আর ফিরে আসেননি।
বর্তমানে মেয়েটা তার নাম জানিয়েছে লুবনা আক্তার। লুবনার সাথে গল্পের মাধ্যমে জানা যায় তার বাবার নাম জহির। মামা বা নানার বাড়ি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থানার হাজীপাড়া গ্রামে। সেখানে হাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করছে সে। তার বাবা-মায়ের মধ্যে সম্পর্ক নেই। আবার বিয়ে করেছেন বাবা।
মানসিক রোগী হওয়ায় তার কথার ওপর আস্থা রাখতে পারছে না কেউই। প্রকৃত ঠিকানা নিয়ে বিপাকে পড়েছে আশ্রম কর্তৃপক্ষ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা