২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

কাজিপুরে ঢেঁকিশিল্প বিলুপ্ত

কাজিপুরে ঢেঁকিশিল্প বিলুপ্ত - নয়া দিগন্ত

সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের বিভিন্ন জনপদ থেকে বর্তমানে গ্রামাঞ্চলের ঢেঁকি বিলুপ্ত। ঘরের বউ-ঝিয়েরা ঢেঁকিছাঁটা চাল দিয়ে ভাত রান্না করতে পারছে না। ভাতের সেই অতীত স্বাদ থেকে জনপদের লোকজন বর্তমানে পুরোপুরি বঞ্চিত। ধান মাড়াই করে চাল বের করার জন্য যন্ত্রদানব ব্যবহার করা হচ্ছে। বিজ্ঞান প্রযুক্তির যুগে এর উদ্ভাবনই ঢেঁকি বিলুপ্ত হওয়ার একমাত্র কারণ।

জনপদের আনাচে-কানাচে বসেছে। বর্তমানে এ’কাজে ব্যবহ্নত রাইচ মিল নামে যন্ত্রদানব। লোহা বা তৎসমতুল্য ধাতব পদার্থ দিয়ে এ’মিল তৈরি হয়। ব্যবহ্নত হয় মবিল, পেন্ট্রোল বা ডিজেল জাতীয় তরল পদার্থ। এ’পদ্ধতিতে সময়ের অপচয় হয় না এবং খচরও হয় অল্প। ঢেঁকিতে তৈল বা গ্যাস ব্যবহ্নত হয় না। শুধু জনশক্তির প্রয়োজন। কমপক্ষে তিনজন লোক হলেই এ কলে ধান মাড়াই করে চাল বের করা হয়। তবে মহিলারাই একাজে বেশি ব্যস্ত থাকে। ঘরের বউ-ঝিয়েরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঢেঁকি চালায়। এ পদ্ধতি ব্যয়বহুল নয়। তবে, সময়ের অপচয় হয় প্রচুর।

যুগে যুগে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা ও আধুনিক সভ্যতার ক্রম বিকাশ ঘটছে। এর ফলে, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ঢেঁকিশিল্প হারিয়ে গেছে, এ ঢেঁকি গ্রাম বাংলার জনপদের এক শ্রেণীর প্রাচীন ঐতিহ্য। গ্রামের লোকের কাছে এ ঢেঁকির আর কদর নেই। গ্রামের আনাচে-কানাচে বর্তমানে বিদ্যুৎ থাকায় যেখানে-সেখানে মিনি রাইচ মিল বসেছে। যার ফলে ধান মাড়াই করে চাল বের করা এবং নানা রকম পিঠা তৈরির কাজে ব্যবহ্নত চালের গুঁড়া নিমিষেই তৈরি করতে পারছে। কিন্তু বিলুপ্ত ঢেঁকিতে তা সম্ভব নয়।

গ্রামীণ বধূদের গল্প-গুজবে মুখরিত আসরের মধ্যে সেই ঢেঁকির শব্দ শোনা যাচ্ছে না। কোমরে কাপড়ের আঁচল বেঁধে, পান চিবিয়ে ঠোঁট লাল করে মরিচ, মসলা, ধান, চাল গুঁড়া করার বা পিষার কর্মকোলহল মুহূর্ত এখন আর দৃষ্টিগোচর হয় না।

উল্লেখ, আছে, ঢেঁকিছাঁটা চাল স্বাসস্থ্যসম্মত বলে এখনো গ্রামের বয়স্ক লোকজনদের কাছে শুনা যায়। পাড়া-গাঁয়ে প্রবেশ করলে মিষ্টি মধুর যে ঢেঁকির শব্দ শোনা যেত বর্তমানে যন্ত্রদানবের যুগে তা আর শোনা যাচ্ছে না।


আরো সংবাদ



premium cement