২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

পাবনায় শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় গ্রেফতার ২, শিক্ষকদের মানববন্ধন

-

পাবনা সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। বুধবার রাতে কলেজ অধ্যক্ষ আব্দুল কুদ্দুস বাদি হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় দুইজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার পর বৃহস্পতিবার ভোরে অভিযান চালিয়ে এজাহার নামীয় দুই আসামি সজল ইসলাম ও শাফিন শেখকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এদিকে জেলা ছাত্রলীগ সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করেছে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শিবলী সাদিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হক গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দুপুরেই গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, গ্রেফতারকৃতদের বাইরেও এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তাদের তদন্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
শিক্ষক মাসুদুর রহমান বলেন, ৬ মে উচ্চতর গণিত পরীক্ষায় অংশ নেয়া কয়েকজন ছাত্রকে নকল করতে বাধা দেই। ওই দুইজন ছিলো পলিটিক্যাল ফিগারের ক্যান্ডিডেট। এটা আমি জানতাম না। এর জন্য তারা তখনই রিএ্যাক্ট করেছে। পরে ১২ মে কলেজের গেটে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমার উপর আক্রমণ করে, কিল ঘুষি মারে। এবং আমাকে আরো দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। ফলে আমি প্রাণ ভয়ে ঘরে বসে আছি। সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়া সেই হামলার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
মামলার বাদী কলেজের অধ্যক্ষ এস এম আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আশা করি দ্রুত দোষিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় হবে।

বিসিএস শিক্ষকদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ

অন্যদিকে পাবনা সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মাসুদুর রহমানের উপর দুস্কৃতকারীদের হামলার তীব্র নিন্দা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি পাবনা জেলা ইউনিটের উদ্যোগে দুপুর ২ টায় পাবনা প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি পাবনাস্থ কমিটির সভাপতি, পাবনা সরকারি কলেজের শিক্ষক প্রফেসর শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য দেন সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষক নুর এ আলম, শিক্ষক রাজু আহমেদ, সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের শিক্ষক কামরুজ্জামান শাহীন, সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুর রবসহ আরও অনেকে। সমাবেশে বক্তারা দাবী করেন, শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর, সেখানে শিক্ষকের উপর হামলা কোন ভাবেই কাম্য নয়। বাবা মার সাথে সন্তানের সম্পর্ক রক্তের। আর শিক্ষকের সাথে সম্পর্ক আত্মার। শিক্ষকের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় শিক্ষার্থীরা সুন্দরভাবে পড়ালেখায় এগিয়ে যায়। কিন্তু সেই সকল শিক্ষার্থীর হাতে যদি এই মানুষ গড়ার কারিগরেরা লাঞ্ছিত হয়, সেখানে বলার কোন ভাষা নেই আমাদের।
সংগঠনের সভাপতি প্রফেসর শহিদুল ইসলাম আইন শৃংখলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন, কলেজের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রকৃত দুস্কৃতকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তিনি প্রতিবাদ সমাবেশে ঘোষণা করেণ এই ঘটনার প্রতিবাদে আগামি রোববার থেকে পরপর তিনদিন প্রতিটি কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা কালো ব্যাচ ধারণা করবে। তিনি আরও বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যদি সঠিক বিচার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবো।


আরো সংবাদ



premium cement