২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
সম্মেলন ৩০ নভেম্বর

ঢাকা মহানগর উত্তর আ’লীগে পদপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ

-

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সম্মেলন আগামী ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগে পুরনো নেতৃত্ব বাদ দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আনা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় উত্তর আওয়ামী লীগেও নতুন নেতৃত্ব দেয়া হবে বলে মনে করছেন পদপ্রত্যাশী নেতারা। কাক্সিক্ষত পদ পেতে তারা দৌড়ঝাঁপ করছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল এ কে এম রহমাতুল্লাহকে সভাপতি ও মো: সাদেক খানকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর ওই বছর ১১ সেপ্টেম্বর ৭৫ সদস্যের মহানগর কমিটি ও মহানগর উত্তরের অধীনে ২৬টি থানা, ৪৬টি ওয়ার্ড এবং ৯টি ইউনিয়নের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। গত বছর ৫ জুলাই প্রথমবার ঢাকা মহানগর উত্তরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরে নেতাকর্মীদের তীব্র প্রতিবাদের মুখে কমিটি বাতিল করা হয়। এরপর গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় থানা ও ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয় মহানগর উত্তর।

প্রতিটি থানায় ৭১ সদস্য এবং প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে ৬৯ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করে প্রেস রিলিজ দেয়া হয়। দ্বিতীয়বারের কমিটি গঠন নিয়েও বিস্তর অভিযোগ ওঠে। তৃণমূল নেতাকর্মীরা প্রমাণসহ নানা অভিযোগ গণভবনে দলীয় প্রধানের কাছে জমা দেয়ায় সে কমিটিও বাতিল হয়ে যায়।

এসব নানা বিতর্ক থাকলেও সভাপতি পদে পুনর্বহাল হতে চান এ কে এম রহমাতুল্লাহ। অন্য দিকে সাধারণ সম্পাদক থেকে সভাপতির পদ পেতে দৌড়ঝাঁপ করছেন সাদেক খান। এ ছাড়াও সভাপতি পদের জন্য আলোচনায় আছেন উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শেখ বজলুর রহমান, আসাদুজ্জামান খান কামাল, মফিজউদ্দিন আহম্মেদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাদের খানসহ অনেকেই। শেখ বজলুর রহমান বলেন, তৃণমূল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছি। ২০০৪ সালের একুশে আগস্টে গ্রেনেড হামলায় আমি আহত হই। ওয়ান ইলেভেনে নেত্রীকে যখন মাইনাস করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল তাদের বিরোধিতা করে অলিতেগলিতে গিয়ে গিয়ে তার মুক্তির জন্য স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছিলাম। এখন নেত্রী যেখানে রাখবেন আমি সেখানেই থাকব।

উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি ও হাবিব হাসান, দফতর সম্পাদক এম সাইফুল্লাহ সাইফুল, সাংগঠনিক সম্পাদক মোক্তার সরদার ও জহিরুল হক জিল্লুসহ অনেকেই। এরমধ্যে এস এম মান্নান কচি ১৯৮৩-৮৪ সালে বৃহত্তম মিরপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি, পরে অবিভক্ত ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯৭ সালে অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের মাধ্যমে আমার রাজনীতির হাতেখড়ি। ছাত্রজীবন শেষ হলে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হই। দলের দুঃসময়ে সব সময় পাশে ছিলাম। সামনে সম্মেলন। নেত্রী ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়নের মাধ্যমে উত্তর আওয়ামী লীগকে ঢেলে সাজাবেন- এটাই প্রত্যাশা করি।

উত্তর আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিব হাসান। ১৯৭৮ সালে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে তার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সূচনা। তুরাগ থানার হরিরামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ১৯৯১ সাল থেকে বৃহত্তর উত্তরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন সময় অবিভক্ত মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন বলে জানান তিনি। হাবিব হাসান বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় নেত্রী যখন কারাগারে ছিলেন, তখন নেত্রীর মুক্তির জন্য রাস্তায় রাস্তায়, বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছিলাম। এক সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার মতো সক্রিয় কর্মী পাওয়া কঠিন হতো, তখনো আমি রাজপথে সক্রিয় ছিলাম। দুঃসময়ে দলকে সুসংগঠিত করার কাজ করেছি। তিনি বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করি। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন যে দায়িত্ব দেবেন তা পালন করতে সব ধরনের ত্যাগে প্রস্তুত আছি।

মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক এম সাইফুল্লাহ সাইফুল নয়া দিগন্তকে বলেন, একটি সফল সম্মেলন করার জন্য প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। তিনি বলেন, তৃণমূলপর্যায় থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। সব সময় দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করে আসছি। নেত্রী দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়ন করবেন- এটা প্রত্যাশা করি।

নেতৃত্ব নির্বাচন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও উত্তর আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা লে. কর্নেল (অব:) ফারুক খান সাংবাদিকদের বলেন, স্বচ্ছ, ক্লিন ইমেজ ও বিতর্কমুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন নেতারাই উত্তর আওয়ামী লীগের দায়িত্বে আসবেন।


আরো সংবাদ



premium cement