২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা

রাজনীতিকে নেতৃত্বশূন্য করতেই আজহারের মৃত্যুদণ্ড : জামায়াত

- সংগৃহীত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে সরকারের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিদের মতের ভিত্তিতে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর মকবুল আহমাদ। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বিবৃতিতে জামায়াত আমীর বলেন,‘সরকার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নেতৃত্ব শূন্য করার জন্য জামায়াত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে দলীয় লোকদের দ্বারা সাক্ষ্য দিয়ে ফাঁসির দণ্ড হাসিলের মাধ্যমে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে একে একে হত্যা করছে। তারই ধারাবাহিকতায় সরকারের ষড়যন্ত্রের শিকার এটিএম আজহারুল ইসলাম।’

তিনি আরো বলেন, সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে আজহারুল ইসলামকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা মামলা দায়ের করে। দলীয় লোকদের দ্বারা আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করিয়েছে। একজন সাক্ষী আদালতে বলেছেন যে, তিনি ৭ কিলোমিটার দূর থেকে ঘটনা দেখেছেন। অপর একজন সাক্ষী বলেছেন, তিনি ৩ কিলোমিটার দূর থেকে ঘটনা দেখেছেন। তাদের এ বক্তব্যই প্রমাণ করে তারা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলেছেন। ৭ বা ৩ কিলোমিটার দূর থেকে ঘটনা দেখার দাবী সম্পূর্ণ হাস্যকর।

আরেকজন সাক্ষী নিজেকে আজহার সাহেবের ক্লাসমেট দাবি করে আদালতে আজহার সাহেবের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আদালতে উপস্থাপিত ডকুমেন্ট অনুযায়ী আজহারল ইসলাম ১৯৬৮ সালে কারমাইকেল কলেজ ত্যাগ করেন, আর কথিত সাক্ষী ১৯৭০ সালে কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হন। অতএব আজহারুল ইসলামকে ঐ সাক্ষী তার ক্লাসমেট হওয়ার যে দাবি করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

এইভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়- গোটা মামলাটি মিথ্যায় ভরপুর। দেশের জনগণ আশা করেছিল সর্বোচ্চ আদালতে আজহারুল ইসলাম ন্যায়বিচার পাবেন। কিন্তু সরকারের সাজানো মামলায় মিথ্যা সাক্ষ্যের ভিত্তিতে তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করায় দেশের জনগণের সাথে আমরাও হতবাক ও বিস্মিত। জনগণ এ রায় প্রত্যাখ্যান করছে। সরকার দেশকে রাজনীতি ও নেতৃত্বশূন্য করার যে চক্রান্ত শুরু করছে, আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারের দায়ের করা সাজানো মামলাটি সে ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ।

আজহারুল ইসলাম এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দায়ের করবেন। আদালত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করলে তার রিভিউ গৃহীত হবে এবং তিনি বেকসুর খালাস পাবেন ইনশাআল্লাহ।

জামায়াতের আমীর বলেন, আজহারুল ইসলাম সরকারের চরম জুলুম ও নির্যাতনের শিকার। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তাকে গ্রেফতার করার পর রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করা হয়। একজন জাতীয় নেতা হওয়ার পরও তাকে ডান্ডাবেড়ী পরিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। তার একমাত্র পুত্র সন্তানকেও গ্রেফতার করে তার উপরও নির্যাতন চালানো হয়। আজহার ২০১২ সালে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি লাভ করার পর সরকার আইনশৃংখলা বাহিনী দিয়ে তার বাড়ী অবরুদ্ধ করে রাখে। বাড়ীর চারপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে এক ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরী করে। একজন শীর্ষনেতার বাড়ীতে সিসিটিভি বসিয়ে তাকে পর্যবেক্ষণের নামে হয়রানীর এমন ঘটনা নজিরবিহীন। তিনি দীর্ঘ ৮ বছর যাবত কারাগারে বন্দী জীবনযাপন করছেন। দুর্ভাগ্যজনক যে, তিনি আজ সর্বোচ্চ আদালত থেকেও ন্যায় বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হলেন। আপীল বিভাগের চারজন বিচারপতির মধ্যে তিনজন বিচারপতি একমত হলেও একজন বিচারপতি এ রায়ের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন।

আজহারুল ইসলামকে সরকারের সাজানো মিথ্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ড দিয়ে হত্যা করার সরকারি ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, গণতান্ত্রিক দেশ, শান্তিকামী বিশ্ববাসী ও দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান তিনি। সরকারি ষড়যন্ত্র বন্ধ এবং আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে নিম্নোক্ত কর্মসূচী ঘোষণা করছি-

আগামী ১ নভেম্বর শুক্রবার এটিএম আজহারের মুক্তির জন্য দেশব্যাপী দোয়া অনুষ্ঠান, আগামী ২ নভেম্বর দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ। শান্তিপূর্ণভাবে এই কর্মসূচী সফল করার জন্য তিনি সংগঠনের সকল জনশক্তি ও দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহবান জানান। বিজ্ঞপ্তি।


আরো সংবাদ



premium cement