২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

স্বেচ্ছাসেবক লীগে বিতর্কমুক্ত নেতৃত্ব চায় আওয়ামী লীগ

স্বেচ্ছাসেবক লীগে বিতর্কমুক্ত নেতৃত্ব চায় আওয়ামী লীগ - ছবি : সংগৃহীত

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। সাত বছর পর সম্মেলন হওয়ায় সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীরা চাঙা হয়ে উঠেছেন। দলে শুদ্ধি অভিযান শুরু হওয়ায় ক্লিন ইমেজ প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ বেড়ে গেছে। এবার বিতর্কমুক্ত প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়ার চিন্তাভাবনা করছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত ও দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত আছে এমন নেতাদের কোনোভাবেই ছাড় দিতে নারাজ আওয়ামী লীগ প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইসব নেতা সংগঠনের কোনো পদে যেন বসতে না পারে সেজন্য চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতিকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে এবং সাধারণ সম্পাদককে সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সম্মেলন সামনে রেখে ইতোমধ্যে বিতর্কমুক্ত প্রার্থীদের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা এবং নিজস্ব সোর্স দিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন ও নিচ্ছেন। স্বচ্ছ, ক্লিন ইমেজ ও ত্যাগী নেতাদের অগ্রাধিকার দিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি করতে চান আওয়ামী লীগ প্রধান।

স্বেচ্ছাসেবক লীগ সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ১১ জুলাই থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগে অ্যাডভোকেট মোল্লা আবু কাওছার সভাপতি এবং পঙ্কজ দেবনাথ সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এরপর থেকেই তৃণমূলের জেলা, উপজেলা, মহানগরসহ প্রায় প্রতিটি ইউনিটের কমিটি সক্রিয় রয়েছে। তবে দীর্ঘদিন কেন্দ্রীয় সম্মেলন না হওয়ায় স্বচ্ছ, ক্লিন ইমেজ ও ত্যাগী নেতারা উপরে উঠতে পারছেন না। অনেকেই দীর্ঘদিন একই পদে থাকায় ঝিমিয়ে পড়েছেন। তবে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হওয়ায় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়েছে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে সম্পৃক্তদের তৎপরতাও বেড়ে গেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ অফিস কিংবা বড় নেতাদের বাসায় নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতাদের আনাগোনা বেড়েছে। নিষ্ক্রিয় নেতারাও তৎপর হয়ে উঠেছেন। সকাল-বিকেল কার্যালয় ও নেতাদের কাছে ধর্ণা দিয়ে নিজেকে ত্যাগী, স্বচ্ছ ও বিতর্কমুক্ত নেতা হিসেবে জাহির করার চেষ্টা করছেন। শুদ্ধি অভিযানের কারণে স্বচ্ছ ইমেজের প্রার্থীরা আশায় বুক বাঁধছেন। কেন্দ্রীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আসতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন অন্তত ডজন খানেক নেতা। এর মধ্যে সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ, মতিউর রহমান মতিসহ বেশ কয়েকজন। আর সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী মেসবাউল হোসেন সাচ্চু, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলীম বেপারী, খায়রুজ্জামান জুয়েলসহ অনেকেই।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের অন্যতম প্রভাবশালী সহসভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ নয়া দিগন্তকে বলেন, কারা নেতৃত্বে আসবেন এটা সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। তিনি বলেন, ছাত্ররাজনীতি থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত দলের দুঃসময়ে পিছু হটিনি। সব সময় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের চেষ্টা করেছি। আশা করি, বঙ্গবন্ধু কন্যা যারা দলের দুঃসময়ে পাশে ছিলেন তাদের মূল্যায়ন করবেন।

এ প্রসঙ্গে আব্দুল আলীম বেপারী বলেন, বিএনপি-জামায়াতের শাসনকালে আমি নির্যাতনের শিকার হয়েছি। হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। তারপরও সেসময় কর্মীদের পাশে ছিলাম। তিনি বলেন, সব সময় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করি। দীর্ঘ সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছি। এখন নাছিম ভাইকে ভালোবেসে স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হয়েছি। মূলত আমরা যারা স্বেচ্ছাসেবক লীগ করি, সবাই আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের নেতৃত্বে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে কাজ করি। তিনি যাকে চাইবেন তিনি দায়িত্বে আসবেন এবং প্রার্থীও হবেন। এর আগে আমরা প্রার্থী নই।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সাংবাদিকদের বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ একটি সুসংগঠিত দল। স্বচ্ছ, ত্যাগী ও পরীক্ষিতরাই নেতৃত্বে আসবেন। সবকিছু হবে নেত্রীর পরামর্শে। উনি যেভাবে পরামর্শ দিবেন, সে অনুসারেই স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠন করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement