গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি মরার ওপর খাড়ার ঘা : রিজভী
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৩ জুলাই ২০১৯, ১৫:০০
গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির গণবিরোধী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে প্রতিবাদ মিছিল করেছে বিএনপি ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন। এতে অংশ নিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি মরার ওপর খাড়ার ঘা।
আজ বুধবার বেলা ১২টায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল নয়া পল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবারো বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন রিজভী।
মিছিল শেষে তিনি বলেন, বর্তমান ভয়াবহ দুঃশাসনের কারণে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারকে জনগণ ঘৃণা করছে বলেই সরকার জনগণের ওপর প্রতিশোধ নিতে ভোক্তা পর্যায়ে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। মধ্যরাতের ভোটের মাধ্যমে জোর করে ক্ষমতা দখলকারী আওয়ামী সরকার জনগণের সমর্থন নিয়ে নয়, বরং তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থেকে জনগণের ওপর শোষণ চালাতে চায়।
রিজভী বলেন, আইন আদালত এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কব্জায় নিয়ে জনগণ ও বিএনপিসহ দেশের বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম চালানোর মাধ্যমে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী বিশ্বের সেরা ফ্যাসিস্ট সরকার হিসেবে গণ্য হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের যখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা তখন কোনো কারণ ছাড়াই ভোক্তা পর্যায়ে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি দেশের মানুষের ওপর যেন ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিতে দেশের স্বল্প আয়ের মানুষ এখন চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে এবং ভবিষ্যতে এধরণের জনস্বার্থবিরোধী সরকারী সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতার আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, জনগণ এখন এক মুহূর্তের জন্যও বর্তমান জালিম সরকারকে রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায় না। এটা নিশ্চিত যে, জনগণের পকেট কেটে সরকারি লোকদেরকে অবৈধ অর্থ উপার্জনের সুযোগ করে দিতেই জনগণের ওপর গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির অনৈতিক ও অমানবিক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এধরণের নিষ্ঠুর আদেশের ফলে সাধারণ মানুষের পিঠ এখন দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা সরকারের এই বেআইনী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে ভোক্তা পর্যায়ে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছি। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা না হলে জনগণকে সাথে নিয়ে বিএনপি রাজপথে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।
তিনি আরো বলেন, মূলত অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা দখল এবং সেই ক্ষমতা দীর্ঘ মেয়াদে ভোগ করার মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করতেই ‘গণতন্ত্রের মা’ এদেশের গণমানুষের আস্থাভাজন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ১০ মাস আগেই মিথ্যা ও সাজানো মামলায় জড়িয়ে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারাবন্দী করে রেখেছে সরকার। আওয়ামী সরকার মনে করে যে, বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী রেখে তিলে তিলে নিঃশেষ করতে পারলেই আর কেউ জনগণের পক্ষে সোচ্চার থেকে কথা বলার সাহস পাবে না। কিন্তু অবৈধ ক্ষমতার দাপটে জনগণের ক্ষমতা সম্পর্কে বর্তমান সরকার তাদের জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। এখন সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ প্রবল শক্তি নিয়ে রাস্তায় নামতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। জনগণকে সাথে নিয়ে নিরাপরাধ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করে মানুষের মৌলিক মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে জাতীয়তাবাদী শক্তি এখন আরো বেশি ঐক্যবদ্ধ। অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
মিছিলে অংশ নেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এজিএম শামসুল হক, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহীন, স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিন, মোয়াজ্জেম হোসেন মতি, সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ান হোসেন রিয়াজসহ ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা।