২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বিএনপিতে পুনর্গঠন চলছে

- ফাইল ছবি

চলতি বছরের অক্টোবর মাসের মধ্যে কাউন্সিল করার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি এখনই কাউন্সিল নিয়ে কিছু ভাবছে না বলে জানা গেছে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর দল পুনর্গঠনে হাত দিয়েছে দলটি। দায়িত্বশীল নেতারা বলেছেন, পুনর্গঠনের এই প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগবে, তবে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করাই এখন তাদের মূল এজেন্ডা।

বিএনপির সর্বশেষ ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ। ওই কাউন্সিলের পর ৫০২ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটিতে ১৯টি পদ রাখা হয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কমিটির মেয়াদ তিন বছর। সে হিসেবে বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে এক মাস পেরোতে চলল। তবে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ শেষে কোনো কারণে জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত না হলে বর্তমান কমিটি দায়িত্ব পালন করতে পারবে, যা এখন চলছে।

বিএনপি হাইকমান্ডের একাধিক নেতা বলেছেন, কাউন্সিল নিয়ে আপাতত তারা মাথা ঘামাচ্ছেন না। তারা নেত্রীর মুক্তির অপেক্ষায় আছেন। একই সাথে তার অসুস্থতা নিয়েও তারা উদ্বিগ্ন।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, কাউন্সিল নিয়ে আমরা কোনো চিন্তাভাবনা শুরু করিনি। তবে আমাদের সাংগঠনিক প্রক্রিয়া চলছে। বিভিন্ন জায়গায় কমিটি করা হচ্ছে, কোথাও কোথাও আহ্বায়ক কমিটি করা হচ্ছে। এসব কাজ তো কাউন্সিলের জন্য প্রয়োজনীয়। কাউন্সিল করতে হলে এই কাজগুলো তো আগে করতে হবে।

নির্দিষ্ট সময়ে কাউন্সিল করতে না পারলে নির্বাচন কমিশনে জানানোর বাধ্যবাধকতা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগেও এমন হয়েছে যে, সময় মতো আমরাও পারিনি, আওয়ামী লীগও পারেনি। নির্বাচন কমিশনও এ ব্যাপারে বিএনপি বা আওয়ামী লীগকে তাগাদা দিয়েছে বলে শুনিনি।
বিএনপির সিনিয়র এক নেতা বলেন, সাংগঠনিক বিষয়াদি বিবেচনায় নিয়ে কাউন্সিল করার মতো পরিস্থিতি হয়েছে কি না তা নিয়ে আমাদের আগে ভাবতে হবে। কাজ চলছে, সময় মতো কাউন্সিল হবে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, দল পুনর্গঠন একটা সাংগঠনিক ধারাবাহিকতা। গঠনতন্ত্রের বিধিবিধান অনুযায়ী আমরা পুনর্গঠন করি। এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য দলকে আন্দোলনের জন্য পুনর্গঠন করা এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করা।

ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের পর বিএনপির ১৯ সদস্যের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির দু’টি পদ শূন্য রাখা হয়েছিল। বাকি ১৭ সদস্যের মধ্যে তরিকুল ইসলাম, আ স ম হান্নান শাহ ও এম কে আনোয়ার মারা গেছেন। ফলে বর্তমানে পাঁচটি পদ শূন্য। এ ছাড়া একাধিক সদস্য অসুস্থতা কিংবা দেশের বাইরে থাকতে বাধ্য হওয়ায় ঠিক মতো দলে সময় দিতে পারছেন না। দলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক, যুববিষয়ক সম্পাদক, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক এবং সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদেও কাউকে নির্বাচিত করা হয়নি। একাধিক নেতা ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগও করেছেন।

জানা গেছে, কাউন্সিলের আগে এসব পদে নতুন করে কাউকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। সময় ও সুযোগ মতো সপ্তম কাউন্সিল করেই নতুন করে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হবে।
এদিকে বিএনপির একাধিক অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটি ভেঙে ইতোমধ্যে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করতে তিন মাসের একটি সময় বেঁধে দেয়া হচ্ছে। কয়েকটি অঙ্গসংগঠন পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছে। যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটিও শিগগিরই ঘোষণা করা হবে। ছাত্রদলে নতুন কমিটি দেয়ার তোড়জোড় চলছে। ঢাকা মহানগর বিএনপিকেও নতুন করে সাজানোর কথা শোনা যাচ্ছে। সাংগঠনিক জেলাগুলোতেও নতুন নেতৃত্ব আসছে।
বিএনপির সিনিয়র এক নেতা বলেছেন, দল পুনর্গঠনের এই প্রক্রিয়া পরবর্তী কাউন্সিল অনুষ্ঠানের আগ পর্যন্ত চলতে থাকবে।


আরো সংবাদ



premium cement