১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

একটি ভোটও পাননি যে প্রার্থী!

হাসান মারুফ রুমী - সংগৃহীত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৯৬ ভাগ আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এই নির্বাচনে বিজয়ী ১১০ জন ৯১ শতাংশের বেশি ভোট পায়, যা স্বাভাবিক নয় বলে মনে করেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া ৮৯ জন বিজয়ী ৮০-৯০ শতাংশ ভোট পান।

কিন্তু একজন প্রার্থী একটিও ভোট পাননি এরকম রেকর্ডও গড়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তিনি একটি রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতা।

চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী) আসনে গণসংহতি আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মারুফ রুমী। কোদাল প্রতীকে নির্বাচন করে একটি ভোটও পাননি তিনি। অথচ তার নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো কমতি ছিল না বলে জানালেন সেখানকার বেশ কয়েকজন ভোটার। দেয়ালে দেয়ালে ছিল পোস্টারও। যেগুলো এখনোও শোভা পাচ্ছে।

৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১০ আসনে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আফছারুল আমীন। তিনি মন্ত্রিসভার সদস্যও ছিলেন। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২ লাখ ৮৭ হাজার ৪৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান পেয়েছেন ৪১ হাজার ৩৯০ ভোট। এ ছাড়া অন্যান্য প্রার্থীরাও ভোট পেয়েছেন। শুধু রুমী কোনো ভোট পাননি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে রুমী কোনো ভোট না পাওয়া একটি অনন্য নজির। ব্যালট বাক্সে তার কোদাল মার্কায় একটি সিলও পড়েনি।

এই নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গোপালগঞ্জ-৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৯৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ ভোট নৌকায় তুলেছেন তিনি।

গোপালগঞ্জ-৩ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪৬ হাজার ৮১৮ জন। এদের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২ লাখ ৩০ হাজার ১৪১ জন ভোটার। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর এ আসনটিতে ৯৩ দশমিক ২৪ শতাংশ ভোট পড়েছে।

আর ২ লাখ ৩০ হাজার ১৪১টি প্রদত্ত ভোটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পেয়েছেন ২ লাখ ২৯ হাজার ৫৩৯টি ভোট। অর্থাৎ প্রদত্ত ভোটের ৯৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মারুফ রুমী চট্টগ্রামের বড় বড় সব সাংস্কতিক আয়োজনের একজন সর্বাগ্রগণ্য উদোক্তা। চট্টগ্রামের হোল্ডিং ট্যাক্স বদ্ধির বিরুদ্ধে আন্দোলনে তিনি ছিলেন নির্বাচিত মুখপাত্র। চট্টগ্রামে পোষাক শ্রমিকদের আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনেও রুমীর ভূমিকা ছিল অগ্রগন্য।

এমনকি তার প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন এলাকার কয়েকটি সংগঠনের সংগঠক, রাজনৈতিক কর্মী, প্রসিদ্ধ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সাহিত্যিক, মানবাধিকার আইনজীবীরা। স্থানীয় ও জাতীয় পত্র পত্রিকায় রুমীকে গুরুত্বও দেওয়া হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে গণসংযোগ বা নির্বাচনী প্রচারণায় পিছিয়ে ছিলেন না রুমী। চট্টগ্রামের গণসংহতি আন্দোলনের নেতাকর্মীরা তার জন্য রাত-দিন ভোট প্রার্থনা করেছেন।

নির্বাচনের খবরে জাতীয় এবং স্থানীয় দৈনিকগুলোতে রুমীকে বেশ গুরুত্বও দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোন কিছু বলেননি।


আরো সংবাদ



premium cement