২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

নতুন ভোটারের অভিজ্ঞতা

ভোটকেন্দ্রের ছবিটি প্রতীকী -

পাবনা-৪ আসনের (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) একজন নতুন ভোটার আমি। এবারই আমার প্রথম ভোট দেয়া। আইনের শিক্ষার্থী হিসেবে জানি, অবাধে ভোট প্রদান একজন নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার এবং ভোট দেয়া সুনাগরিকের পরিচয়। এর সাথে একজন ভোটারের ব্যক্তিত্ব আর মর্যাদার প্রশ্ন জড়িত; কিন্তু গত ৩০ ডিসেম্বর ভোটকেন্দ্রে গিয়ে উল্টো পরিস্থিতির সম্মুখীন হলাম। ভোটকেন্দ্রে আমার বড় বোনসহ গেলাম সকাল ১০টার দিকে। বড় বোনও এবার নতুন ভোটার (চুয়েটের ছাত্রী)।

তিনিই আগে ভোট দিতে গেলেন। আমাদের ভোটার নম্বর বারবার বলার পরও পোলিং এজেন্টরা এ কথা কানেও নিলেন না। ভোটার লিস্টের কারো নামও কাটলেন না। আঙুলে কালি দিয়ে সিলসহ একটি ব্যালট পেপার ধরিয়ে দিলেন। পর্দার আড়ালে গিয়ে সিল মারা শেষ করছি। তখনই বড় বোন ছুটে এসে ফিসফিস করে বললেন, ‘ওই লোকটা ব্যালট পেপার খুলে দেখছে, তুমি ঠিকমতো ভাঁজ করো।’ তারটা ঠিকমতো ভাঁজ করার নামে খুলে দেখল, কোন প্রতীকে সিল মেরেছে। ঠিকমতো ভাঁজ করে নিয়ে ব্যালট বাক্সে ফেলতে যাবো; তখনই আমার হাত থেকে কেড়ে নেয়া হলো ব্যালট । আমি তখন বলে উঠলাম, আপনি আমার ব্যালট পেপার দেখবেন কেন? তার হাত থেকে ব্যালট পেপার কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করলাম। ব্যালট পেপার নিয়ে কাড়াকাড়ির একপর্যায়ে লোকটি বলল, ‘আপনাকে ভোট দিতে দিয়েছি, এটাই তো বেশি।’ আমি চিৎকার করে বলা শুরু করলাম, আপনি কে আমাকে ভোট দিতে দেয়ার?

পেছন থেকে আমার বোনও আমার পক্ষে বলা শুরু করেছেন ততক্ষণে। লোকটি আমাদের কথার দিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ করলেন না। তিনি জোর করেই ব্যালট পেপার খুলে দেখলেন। তখনি আমি কেড়ে নিয়ে ব্যালট বাক্সে ফেলে দিলাম। এরপর আমাকে টেনে বের করে দেয়া হলো। দেখলাম, ওই লোকটি চিৎকার করে পাশে বসা, তাদের পক্ষের মহিলাদের বলছেন, ‘দেখছেন তো, ভোট দিতে দিলে কী হয়?’ পরে শুনেছি, ওই কেন্দ্রে যারা ভোট দিতে গিয়েছিলেন, তারা কেউই নৌকা বাদে অন্য কোনো প্রতীকে সিল মারতে পারেননি। আবার অনেকে গিয়ে দেখেছেন, তাদের ভোট ‘আগেই দেয়া হয়ে গেছে।’

মিডিয়া সূত্রে জানতে পেরেছি, সারা দেশে তরুণ ভোটারদের বেশির ভাগই এবার ভোট দিতে পারেননি। কেউ কেউ আমার মতো অবাঞ্ছিত বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন। বলা হয়ে থাকে, গত দশম সংসদের নির্বাচনে প্রায় এক কোটি নতুন ভোটার ভোট দিতে পারেননি। এবার নতুন ভোটার হয়েছেন প্রায় দেড় কোটি। সে জন্য সরকার ও তাদের পক্ষের বুদ্ধিজীবীরা বলে আসছেন, আড়াই কোটি তরুণ ভোটারই আমাদের ভবিষ্যৎ। সমর্থক ভোটেই এবার জয়-পরাজয় নিশ্চিত হবে। প্রশ্ন হলো- এসব ঘটনায় তরুণ ভোটারেরা কী বার্তা পেলেন? ভবিষ্যতে এর ফলাফলই বা কী? 

লেখক : তাসমিয়া তাগাবুন সুবর্ণ, শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
email-nayeerajr@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement
বছরে ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলার জলবায়ু অর্থায়নের দাবি বাংলাদেশ অরবিসের সাথে কাজ করতে আগ্রহী : অধ্যাপক ইউনূস ঢাবি সিন্ডিকেটে এখনো বহাল আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা হাসিনা বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করতে দিগন্ত টেলিভিশনসহ অসংখ্য গণমাধ্যম বন্ধ করেছে : ফখরুল শীত শুরু হচ্ছে তবু কমেনি ডেঙ্গুর প্রকোপ ব্যয়বহুল তদন্তেও শনাক্ত হয়নি লাশটি কার ‘রহস্যজনক’ কারণে নেয়া হয়নি ডিএনএ নমুনা নবনির্মিত ওয়ামি কমপ্লেক্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন যুদ্ধবিরতির মার্কিন চেষ্টার মধ্যে লেবাননে ইসরাইলি হামলায় চিকিৎসাকর্মী নিহত অস্বস্তিতে ক্রেতারা : কমিয়ে দিতে হচ্ছে কেনাকাটা গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৪৪ হাজার ছাড়াল আমরা মানুষের সম্মিলিত প্রজ্ঞাকে সম্মান করি

সকল