২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

পুলিশের হাতে লাঞ্চিত অধ্যাপক, থানায় হামলা ছাত্রদের

পুলিশের হাতে লাঞ্চিত অধ্যাপক, থানায় হামলা ছাত্রদের - ছবি : সংগৃহীত

ময়মনসিংহ শহরের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক শেখ শরিফুল আলমকে ট্রাফিক পুলিশ কর্তৃক লাঞ্চিতের ঘটনায় কলেজ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও থানায় ঘেরাও করে হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এসময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় পাঁচ পুলিশসহ আহত হয় কমপক্ষে ২০ জন। এদের মধ্যে পাঁচ পুলিশসহ ১৫ শিক্ষার্থীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে পরিস্থিতি শান্ত করতে জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএ নেওয়াজীসহ পুলিশ কর্মকর্তাগণ তাৎক্ষণিক ওই কলেজ ও হাসপাতালে দ্রুত ছুটে যান। পরে প্রশাসনের সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাসে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শান্ত হয়।

এঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. নায়েরুজ্জামানকে প্রধান করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: আল আমিন ও ওই কলেজের শিক্ষক একেএম দেলোয়ার হোসেনকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার দুপুরে শহরের জিলা স্কুল মোড়ে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের সহকারি অধ্যাপক শেখ শরিফুল আলমের গাড়ির সাথে একটি অটোরিক্সার সংঘর্ষ হয়। এসময় রাস্তায় প্রচন্ড যানজটের সৃষ্টি হলে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ আসলাম হোসেন ও চালকদের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে প্রাইভেটকারে থাকা ওই শিক্ষক গাড়ী থেকে নেমে এসে ট্রাফিক পুলিশের কাছে ঘটনাটি জানতে চাইলে কথা কাটাকাটি ও একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

পরে ওই ট্রাফিক বিষয়টি টহল পুলিশকে জানালে তাৎক্ষণিক পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই শিক্ষককে বেধড়ক মারধর করেন। পরে তাকে টেনে-হেঁচড়ে ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়। এখবর কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে বেশ কয়েকটি অটোরিক্সা ভাংচুর করেন।

পরে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা কোতোয়ালী মডেল থানা ও ২নং পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এসময় পুলিশ লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পুলিশের সাথে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ৫ পুলিশসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়।

জেলা পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন জানান, ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত ও অপ্রীতিকর। তবে শিক্ষককে আটক করার গুজবে শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকটি অটোরিক্সা ভাংচুর করে এবং পরে থানায় হামলা ও ভাংচুর চালিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। এসময় ৫ পুলিশসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

তিনি বলেন, আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও হাসপাতালে চিকিৎসকদের সাথে কথা বলেছি। এঘটনায় ট্রাফিক পুলিশ ও পুলিশ সদস্যদের অন্যায় থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলা প্রশাসক ও কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, বিষয়টি অনভিপ্রেত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাৎক্ষণিক কলেজ ক্যম্পাস ও হাসপাতালে ছুটে যাই। শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অনাকাঙ্খিত এ ঘটনার জন্য কলেজের শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহবান জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement