শিল্পী কালিদাস কর্মকার স্মরণসভা অনুষ্ঠিত
- ৩০ অক্টোবর ২০১৯, ০১:০৯
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নন্দিত চারুশিল্পী কালিদাস কর্মকারের মৃত্যুতে স্মরণসভা আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এবং সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ। এই শিল্পীর মৃত্যুতে গতকাল একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে আয়োজিত স্মরণসভায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিকজন রামেন্দু মজুমদার, বরেণ্য চিত্রশিল্পী হাসেম খান, সাবেক পররাষ্ট্রসচিব ওয়ালিউর রহমান, শিল্পী মোহাম্মদ ইউনুস, চারুশিল্পী সংসদের সহসভাপতি শিল্পী জাহিদ মুস্তফা, শিল্পী সনজিব দাস অপু, একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক শিল্পী আশরাফুল আলম পপলু, শিল্পী নাজিয়া আন্দলীব প্রিমা, শিল্পী কালিদাস কর্মকারের বড় মেয়ে কঙ্কা কর্মকার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন শিল্প সমালোচক মঈনদ্দিন খালিদ। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কালিদাস কর্মকারের ছোট মেয়ে কেয়া কর্মকার এবং প্রশান্ত কর্মকার।
কালিদাস কর্মকারের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পদক, এস এম সুলতান স্বর্ণপদক এবং একুশে পদক প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়াও তিনি দেশী ও বিদেশী অনেক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। শিল্পী তার কাজের মাধ্যমে আমাদের সবার মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন বলে বলেছেন স্মরণসভায় আগত তার শুভানুধ্যায়ী ও উপস্থিত শিল্পীরা।
স্মরণানুষ্ঠানে সাবেক পররাষ্ট্রসচিব ওয়ালিউর রহমান বলেন, কালিদাস দেশে এবং বিদেশে তার কাজের মাধ্যমে সব সময় নিজের চেয়ে বাংলাদেশকেই তুলে ধরার চেষ্টা করতেন।
বরেণ্য শিল্পী হাশেম খান বলেন, ‘আমার শিক্ষকতা জীবনের চারুকলার প্রথম ব্যাচের ছাত্র কালিদাস কর্মকার। আমার জীবনে আমি কালিকে ছাত্র হিসেবে পেয়েছি না কালি আমাকে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছে এটা আমার কাছে একটি ভাববার বিষয়। কালিদাস আমার চেয়ে বয়সে খুব বেশি ছোট ছিল না। হয়তো দুই বা তিন ব্যাচের ব্যবধান। কালির সম্মানবোধের জায়গা থেকে আমাকে ভাই না বলে স্যার বলেই সম্বোধন করতো।’
রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘আমি যখন ভারতে শরণার্থী হিসেবে তখন কালির সাথে আমার পরিচয়। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে কালি আমার সাথে বাংলাদেশে আসে এবং আমি ওকে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেই। তখন থেকেই কালিদাস সম্পর্কে আমার জানাশোনা। পরবর্তীতে কালিদাসের অনেক কাজ দেখেছি। তার কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্থাপনা শিল্প। এ ছাড়াও কালির ব্যতিক্রমী কাজ আমি দেখেছি। আমরা শহীদ মিনারে বক্তব্য দিয়েছি আর কালিদাস ছবি আঁকছে। চারুশিল্পীরা বেশির ভাগই রঙ ও তুলিতে ছবি আঁকে কিন্তু কালিকে দেখেছি হাত দিয়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে ছবি এঁকেছে।’
একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, ‘কালিদাস কর্মকারের কাজ দেশে-বিদেশে এতটাই বিস্তৃত যা বলে শেষ করা যাবে না। তিনি দেশে-বিদেশে সমানভাবেই সমাদৃত। মহাপরিচালক শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত এশিয়ান আর্ট বিয়েনালের পারফরমিং আর্টের অ্যাওয়ার্ড শিল্পী কালিদাস কর্মকারের নামে দেয়ার প্রস্তাবনা রাখেন। কালিদাসের শিল্পকর্ম, জীবনী এবং তার পরিবার ও দেশী-বিদেশী বন্ধুবান্ধবের বক্তব্য সংগ্রহ করে একটি প্রকাশনা করার বিষয় পরিকল্পনা আছে।’
গত ১৮ অক্টোবর বিশিষ্ট এই চারুশিল্পী পরলোকগমন করেন। গত ২১ অক্টোবর বেলা ১১টায় সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানাতে তার লাশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনা হয়। বিভিন্ন সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিপর্যায়ে মানুষ তাতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বিজ্ঞপ্তি।