আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার আমরা উন্নত সার্ভিস দেবো
- মনির হোসেন
- ২৯ মে ২০১৯, ০০:২৩
আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো লাখ লাখ যাত্রীকে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার আমরা বেটার (উন্নত) সার্ভিস দেয়ার চেষ্টা করব। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের সবাইকে নিয়ে একটি টিম ওয়ার্ক তৈরি করে কাজ করে যাচ্ছি।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন তার দফতরে নয়া দিগন্তকে এবারের ট্রেনে ঈদ যাত্রাসহ বিভিন্ন বিষয়ে খোলামেলা আলাপকালে এ কথা বলেন।
মোবাইল অ্যাপস কোম্পানির সার্ভিস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে ৫০ শতাংশ টিকিট দিলাম। কিন্তু অনলাইনে টিকিট কাটা গেল না। তাতে কি হলো। ধরা যাক ২৫ শতাংশ বা ১০ শতাংশ বিক্রি হলো। এরপরেও তো ৪০ শতাংশ টিকিট অবিক্রীত থাকছে। সে জন্য আমরা ১০ দিন আগে টিকিট বিক্রি শুরু করি। ৩১ মে তারিখ যাত্রার টিকিট ২২ তারিখ থেকে বিক্রি শুরু করেছি। এই পাঁচ দিনের মধ্যে টিকিট যতটুকু বিক্রি করতে পারলে তো পারল, না হলে এটা অনলাইনেও থাকবে। তখন আর এই টিকিটের ওপর একক অধিকার আর মোবাইল অ্যাপসের থাকবে না। এটা তখন শেয়ার হয়ে যাবে। তখন এই টিকিট আমি মোবাইল অ্যাপসেও কাটতে পারি, আবার কাউন্টার থেকেও কাটতে পারি।
কিন্তু কাউন্টার থেকে অধিকাংশ টিকিটপ্রত্যাশীই টিকিট কিনতে পারেননি এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে রেলপথ মন্ত্রী বলেন, তাহলে মনে হয় ৫০ শতাংশ টিকিট কাউন্টার থেকে বিক্রি হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ৩টায় তো টিকিটের চাহিদা বেশি থাকে। আমরা দিনে টিকিট দিতে পারছি ১২ হাজার। কিন্তু হিট হচ্ছে পাঁচ লাখ ১৫ হাজারের মতো। তাহলে টিকিট কিভাবে আশা করেনÑ টিকিট অবিক্রীত থাকবে? সব টিকিটই বিক্রি করে দিয়েছি। ঈদের টিকিট নিয়ে যত খোশগল্প হতো এবার কিন্তু অতটা হয়নি।
কোটা বাতিল করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি যদি মন্ত্রী হিসেবে ৫০টার কোটা দিই তাহলে ওখানে যারা বসে আছেন তারা ৫০০টির কোটা দেবে। এই সুযোগটা নেবে। এবার কিভাবে খবরটা বের হয়েছেÑ যে আমি আমার মেয়েকেও টিকিট দেইনি। আমার মেয়ে তার বান্ধবীদের জন্য টিকিট চেয়েছিল আমার কাছে। আমি তাকে বলেছি, বাবারে এটা দেয়া যাবে না। আমি যদি তোমাকে এভাবে টিকিট দিই, তাহলে অন্যরা এই অ্যাডভানটেজ নেবে। কাজেই এই খাতির করতে গেলে আমার টোটাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফেইল করবে। আর আমরা যা করেছি তা এখানে মিটিংয়ে আলোচনা করেই ডিসিশন নিয়েছি। সেটা হচ্ছে শুধু আমাদের মাননীয় মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সচিব, বিচারপতিরা যদি তাদের পরিবার নিয়ে ট্রাভেল করে, তখন আমরা সেটা তাদের জন্য আলাদাভাবে অতিরিক্ত বগি (কাচ) লাগিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করব। এই ব্যবস্থার সাথে মেলাব না। তিনি বলেন, সাধারণ যাত্রীরা লম্বা লাইনে দাঁড়ালেও তারা কিন্তু এবার টিকিট পেয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের মোবাইল অ্যাপসকে আরো বেটার সার্ভিসে নিয়ে যাবো। মানে এটা নিয়ে ওপেন টেন্ডারিংয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। যারা কোয়ালিফাই করতে পারবে তারাই কাজ পাবে।
ঈদে ট্রেনের শিডিউল ঠিক থাকবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অবশ্যই আমাদের সবাই আন্তরিক আছে। আগে লালমনিরহাট এক্সপ্রেসে র্যাক ছিল একটি। আমরা র্যাকের সংখ্যা বাড়িয়েছি। যাতে ডিলেটা (বিলম্ব) না হয়। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে যে ট্রেন ছেড়ে যায় সেটিই আবার ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে।
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রুট কবে নাগাদ চালুর পরিকল্পনা রয়েছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এ প্রতিবেদককে বলেন, আগামী ২০২২ সালের মধ্যে এই রুটটি চালুর লক্ষ্যে প্রকল্পের কার্যক্রম চলছে। তিনি বলেন, দোহাজারী থেকে চট্টগ্রামের লাইন আছে কিন্তু মিটারগেজ। কর্ণফুলীর ওপর আমাদের এখন ব্রিজ নেই। এর ওপর আমাদের কাজ চলছে। এখন দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটারের কাজ চলছে। আমি টোটাল ট্র্যাক ধরে ধরে ৯ ঘণ্টায় কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম (দোহাজারী) আসছি।
পাথর নিক্ষেপে ট্রেনে দুর্ঘটনা ঘটা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা কমে যাবে। এখন আর আমরা এটাকে ইগনোর করতেছি না। আগে বলত পোলাপান পাথর মারছে। এইভাবে ছেড়ে দিতো। এখন আমরা কিন্তু এইভাবে আর ছাড়ব না। যদি কোনো গ্রামকে আমরা আইডেন্টিফাই করতে পারি, যে এই গ্রাম থেকেই ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করা হয়েছে আমরা সাথে সাথে ওই গ্রাম থেকে ১৫-২০ জন ধরে নিয়ে আসব। ধরে ফেললে তখন সচেতনতা আসবে। আমরা আন্ডারটেকিং নিয়ে ছেড়ে দেবো। তখন এটার একটা প্রতিক্রিয়া হবে। আমরা আমাদের নির্দেশনায় বলেছি, পাথর নিক্ষেপকারীদের ধরতে চাই। মন্ত্রী নয়া দিগন্তকে বলেন, কমলাপুর রেলস্টেশনে কোনো কুলি আর থাকবে না। যার যার লাগেজ সে নিজেই বহন করে নিতে পারবে। একইভাবে টার্মিনালে কোনো গাড়ি থেকে কেউ চাঁদাও নিতে পারবে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা