হুয়াওয়ে ফোন : আসলেই সস্তা?
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৪:১২
চীনের টেলিকম কোম্পানি হুয়াওয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়েছে। কিন্তু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশের কাছে ফাইভ জি পার্টনার হিসেবে হুয়াওয়ে বেশ পছন্দ। এশিয়ার অনেক দেশে হুয়াওয়ের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক আছে।
হুয়াওয়ের সাথে সম্পর্ক ছেদ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের অনেক মিত্র দেশের উপর চাপ প্রয়োগ করছে।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, হুয়াওয়ে টেলিকম কোম্পানিটি চীন সরকারের জন্য গুপ্তচরবৃত্তি করছে। যদিও তারা এ অভিযোগ ক্রমাগত অস্বীকার করে যাচ্ছে।
মার্কিন বিচার বিভাগও হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। তাদের অভিযোগ হচ্ছে, হুয়াওয়ে আমেরিকার বাণিজ্যিক গোপনীয়তা চুরি করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইরানের সাথে ব্যবসা করছে।
কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এসব অভিযোগ আমলে নিচ্ছে না এশিয়ার দেশগুলো।
ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে ফাইভ জি-সহ টেলিকম যন্ত্রপাতি আসে হুয়াওয়ের কাছ থেকে।
টেলিকম শিল্পের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হুয়াওয়ে যে দামে যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে এবং তাদের যে প্রযুক্তিগত দক্ষতা রয়েছে , সেটি অন্যদের নেই।
এছাড়া কম্বোডিয়ার মতো দেশে, যেখানে ফোর জি আছে, সেখানেও হুয়াওয়ের কাছ থেকে প্রযুক্তিগত সহায়তা নেয়া হয়।
অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটিজিক পলিসি ইন্সটিটিউট-এর টম উরেন বলেন, নিরাপদ এবং শক্তিশালী ফাইভ জি নেটওয়ার্ক ভবিষ্যৎ অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্যই হুয়াওয়ে নজরদারীর মধ্যে রয়েছে।
হুয়াওয়েকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যেসব অভিযোগ করছে সেগুলোর ব্যাপারে উরেন বলেন, চীনের আইন অনুযায়ী সেখানকার কোম্পানিগুলো চীনের গোয়েন্দাদের সহায়তা করতে বাধ্য।
"ফাইভ জি নেটওয়ার্কের জন্য সেসব যন্ত্রাংশ দরকার, সেগুলো শুধুই অবকাঠামোর যন্ত্রাংশ হিসেবে ব্যবহার হয়না," বলছিলেন তিনি।
এর মাধ্যমে সেই নেটওয়ার্কের সবকিছু দেখা যায়। কে কাকে ফোন করছে? কখন ফোন করছে? কোন জায়গা থেকে ফোন করছে? এবং কোন রুটে ডাটা পাঠানো হচ্ছে - এসব কিছুই দেখা যায়।
প্রযুক্তিগত দিক থেকে হুয়াওয়ে তাদের অন্য প্রতিযোগীদের চেয়ে এক বছর এগিয়ে আছে বলে মনে করা হয়।
ফিলিপিন্সের গ্লোব টেলিকম তাদের নেটওয়ার্ক অবকাঠামো গড়ে তোলার জন্য ২০১১ সাল থেকে হুয়াওয়ের সাথে কাজ করছে।
হুয়াওয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা মাং ওয়ানজুকে গত ডিসেম্বর মাসে কানাডার বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছে।
সম্প্রতি তারা হুয়াওয়ের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে রাজধানী ম্যানিলায় ফাইভ জি নেটওয়ার্ক চালু করেছে।
ফলে আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়া যেভাবে হুয়াওয়েকে নিষিদ্ধ করেছে, সেটি এশিয়ার অনেক দেশের জন্য বাস্তবসম্মত নয়।
তাদের জন্য আরেকটি উপায় আছে। সেটি হচ্ছে হুয়াওয়ের বিকল্প আরেকটি কোম্পানি খুঁজে বের করা যারা একই দামে প্রযুক্তি দিতে পারবে।
কিন্তু হুয়াওয়ের চেয়ে কম দামে প্রযুক্তি দেয়া বেশ কঠিন।
শুধু টেলিকম নেটওয়ার্ক তৈরি করে দেয়াই নয়, সেটি তৈরির পর যে রক্ষণাবেক্ষণ দরকার সেজন্যও হুয়াওয়ে বেশ কার্যকরী।
কারণ তারা এ বিষয়ে গুরুত্ব দেয়। সাধারণত পশ্চিমা কোম্পানিগুলো এ বিষয়ে খুব একটা নজর দেয় না।
কিন্তু তারপরেও হুয়াওয়েকে নিয়ে এশিয়ার কিছু দেশে উদ্বেগ বাড়ছে। কোন কোন দেশ এরই মধ্যে হুয়াওয়ে নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো চিন্তা-ভাবনা করছে।
অনেকে বোঝার চেষ্টা করছে যে হুয়াওয়ে আসলে কতটা ক্ষতিকর হতে পারে। চীন সরকারের সাথে হুয়াওয়ের সম্পর্ক কোন ঝুঁকির কারণ হতে পারে কি না সেটি নিয়ে কেউ-কেউ ভাবছে।
পশ্চিমা দেশগুলোর হুয়াওয়ের উপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখবে।
খবর পাওয়া যাচ্ছে, মার্কিন প্রশাসন এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে হুয়াওয়ের উপর অবরোধ আরো বিস্তৃত করতে পারে।
আমেরিকার ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কে হুয়াওয়ের সকল যন্ত্রপাতি নিষিদ্ধ করা হতে পারে। এ কাজ করার জন্য মার্কিন প্রশাসন হয়তো তাদের মিত্র দেশগুলোর উপরও চাপ দেবে।
যদি আমেরিকা এ পথে অগ্রসর হয় তাহলে তাদের ফাইভ জি সার্ভিস ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর অর্থ হচ্ছে, ইউরোপ এবং এশিয়ার নেটওয়ার্কগুলোর সাথে যোগাযোগ করতে পারবে না আমেরিকার নেটওয়ার্ক।
তখন ইন্টারনেট বিশ্ব দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যাবে। হুয়াওয়ের মতো চীনের কোম্পানিগুলোর সাথে যারা ব্যবসা করছে তারা হবে একটি অংশ। এবং অপর অংশটি হবে যারা ব্যবসা করছে না।
সূত্র : বিবিসি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা