২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
শুক্রবার রাতে এসেছে ১৪০ বাংলাদেশী

নভেম্বরে সৌদি থেকে ফিরেছে আড়াই হাজারেরও বেশি প্রবাসী

শুক্রবার রাতে ফিরেছেন ১৪০ বাংলাদেশী - নয়া দিগন্ত

সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন আরো ১৪০ বাংলাদেশী। শুক্রবার রাত সোয়া ১১টা ও রাত ৩টার দিকে সৌদি এয়ারলাইন্সের দু’টি ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন তারা। ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করে ভোর রাতে এবং অনেকে সকালেও নিজ নিজ বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন দেন তারা।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরস্থ প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। রাত সোয়া ১১টায় ৭৫ জন  এবং ৩টায় ৬৫ জন দেশে ফিরেছেন বলে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা জানান। ব্র্যাক মাইগ্রেশন সূত্র জানায়, এ নিয়ে চলতি নভেম্বর মাসে ২৬শ’রও বেশি বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন।

দেশে ফেরাদের মধ্যে কারো বৈধতা ছিল, কারো ছিল না। অনেকে বৈধতার জন্য টাকা পয়সাও দিয়েছিলেন নিয়োগকর্তাকে। কিন্তু, এদের সবাইকেই কর্মস্থল ও রাস্তা-ঘাট থেকে ধরে প্রথমে ডিপোর্টেশন সেল এবং পরে দেশে পাঠিয়ে দেয় সৌদি সরকার।

বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক ও ব্র্যা‌কের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের দশ মাসে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন ২১ হাজার বাংলাদেশি।

বরাবরের মতো শুক্রবারও রাতে ফেরত আসাদেরও প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ী পৌছানোর জন্য জরুরী সহায়তা প্রদান করা হয়।

শুক্রবার ফেরা নারায়ণগঞ্জ আড়াইহাজারে আফজাল (২৬) মাত্র আড়াই মাস পূর্বে ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ করে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। ভাগ্য এতোটাই খারাপ যে রুম থেকে বের হয়েছিলেন বাজার করার জন্য কিন্তু রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে তাকে। আকামাও ছিল আফজালের। আফজালের মত বি-বাড়িয়ার কামরুলও ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা খরচ করে আড়াই মাস আগে গিয়েছিলেন সৌদি কিন্তু তাকেও দেশে ফিরতে হলো শূন্য হাতে।

দু’ বছর ধরে সেলুনে কাজ করতেন কুমিল্লার নন্দন কুমার। আকামার মেয়াদ শেষ হবার পূর্বেই কফিলকে (নিয়োগকর্তা) সাড়ে ছয় হাজার রিয়াল দিয়েছিলেন কিন্তু আকামা আর করে দেয়নি নন্দনকে। পুলিশের হাতে নন্দন গ্রেফতার হলে কফিলকে ফোন দেন নন্দন কিন্তু কফিল আর নন্দনের দায় দায়িত্ব নেয়নি। শূন্য হাতে দেশে ফিরতে হলো নন্দনকে।

এমনি পরিস্থিতির শিকার হয়ে দেশে ফিরতে হলো বি বাড়িয়ার মন্টু মিয়া, সাইদুল ইসলাম, নরসিংদির নাইম, হবিগঞ্জের ফারুক হোসেন, ঢাকার সাইফুল ইসলাম।

দেশে ফেরা অনেক কর্মীদের অভিযোগ করেন আকামা তৈরীর জন্য কফিলকে (নিয়োগকর্তা) টাকা প্রদান করলেও কফিল আকামা তৈরি করে দেয়নি। পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর কফিলের সাথে যোগাযোগ করলেও গ্রেপ্তারকৃত কর্মীর দায়-দায়িত নিচ্ছে না বরং কফিল প্রশাসনকে বলেন ক্রুশ (ভিসা বাতিল) দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দিতে।

ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, চলতি বছ‌র এখন পর্যন্ত ২২ হাজার বাংলা‌দে‌শী‌কে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। চল‌তি মা‌সের তিন সপ্তায় ফির‌লেন ২৬১৫ জন। প্রায় সবাই খালি হাতে ফিরেছেন। যারা কয়েকমাস আগে গিয়েছিলেন তাদের কেউই খরচের টাকা তুলতে পারেননি। তারা সবাই ভবিষ্যত নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায়।আামরা আাশা কর‌ছি তিন‌দিন পর‌ সৌ‌দি আার‌বের সাথে বাংলা‌দে‌শের যে যৌথ বৈঠক হ‌বে সেখা‌নে নারী কর্মী‌দের‌ পাশাপা‌শি পুরুষ‌দের বিষয়‌টি নি‌য়েও আা‌লোচনা হ‌বে। বি‌শেষ ক‌রে ফ্রি ভিসার নামে প্রতারণা বন্ধ কর‌তে কাজ কর‌তে হ‌বে দু দেশ‌কে।


আরো সংবাদ



premium cement