২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বিধ্বস্ত বিমান নিয়ে ইউক্রেনকে আর তথ্য দেবে না ইরান

- সংগৃহীত

গত মাসে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিধ্বস্ত বিমানের বিষয়ে ইউক্রেনের তদন্তে সহযোগিতা বন্ধ করে দিয়েছে ইরান। বিমানটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পরপরই ইরান তা জানতো, ফাঁস হওয়া একটি অডিও ক্লিপ নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের পর এ পদক্ষেপ নিয়েছে ইরান।

এক ইরানি পাইলট ও তেহরানের এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের মধ্যে কথাবার্তার ওই রেকর্ডটি ইউক্রেনীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়েছে। ইউক্রেনীয় বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার সময় ওই পাইলট তার বিমান নিয়ে তেহরানে ল্যান্ড করছিলেন। প্রথমে একটি ইউক্রেনীয় ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পাওয়া ওই অডিও ক্লিপে ইরানের আসেমান এয়ারলাইন্সের পাইলটকে ‘সামনে আকাশে তিনি আলো দেখতে পাচ্ছেন’ এমনটি বলতে শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘এটা কি কোনো সক্রিয় এলাকা? সেখানে ক্ষেপণাস্ত্রের মতো আলো দেখতে পাচ্ছি। সেখানে কী হচ্ছে?’ উত্তরে কন্ট্রোল টাওয়ার বলে, ‘আমাদের কাছে কোনো রিপোর্ট আসেনি। আলোটি কেমন? পাইলট বলেন, ‘এটি একটি ক্ষেপণাস্ত্রের আলো।’ তখন কন্ট্রোল টাওয়ার বেশ কয়েকবার ইউক্রেনের বিমানটির সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে, কিন্তু কোনো সাড়া পায়নি।

এর কয়েক মিনিট পর ইরানি ওই পাইলট কন্ট্রোল টাওয়ারকে জানান, মাত্রই ‘একটি বিস্ফোরণের বড় আলো’ দেখতে পেয়েছেন তিনি। এই কথোপকথন থেকে ধারণা পাওয়া যায়, ইরানি পাইলট প্রথমে আকাশে ক্ষেপণাস্ত্রের আলোকচ্ছটা দেখার পর বিস্ফোরণ ঘটতে দেখেন। ৮ জানুয়ারির এ ঘটনায় ইউক্রেন এয়ারলাইন্সের বিমানটির ১৭৬ আরোহীর সবাই নিহত হন। প্রথমে এ ঘটনার দায় অস্বীকার করেছিল ইরান। কিন্তু পরে ভুল করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে বিমানটি ভূপাতিত করার কথা স্বীকার করে তারা। ওই ঘটনার সময় ইরান উচ্চ সতর্কাবস্থায় ছিল। এর কিছুক্ষণ আগেই তারা ইরাকে দু’টি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। তাই ওই সময় তাদের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী সম্ভবত পাল্টা মার্কিন হামলার আশঙ্কায় অত্যন্ত চাপে ছিল।

এই অডিও ক্লিপ প্রকাশ হওয়ার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, কথোপকথন থেকে প্রমাণ হয়েছে ফ্লাইটটিকে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে এটি দেশটি জানাত। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের এ মন্তব্যের পর ইরানি তদন্তকারী দলের প্রধান হাসান রেজাইফার সোমবার ইরানি বার্তা সংস্থা মেহরকে বলেছেন, ‘ইউক্রেনকে আর কোনো নথি দেবো না আমরা।’

প্রতিরক্ষা বাহিনীর রক্ষীদের ‘মানবিক ভুলে’ ঘটা ওই ঘটনার পর ইরান ‘বিদেশী বিশেষজ্ঞদের’ সাথে তদন্তে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছিল। ইউক্রেন বিমানটির ব্ল্যাক বক্সের ফ্লাইট রেকর্ডের তথ্যাগুলো দেখতে চায়, কিন্তু ইরান তেহরানেই ব্ল্যাক বক্স থেকে ডেটা বের করার বিষয়ে জোর দিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে তদন্তে অচলাবস্থা সৃষ্টি করে রেখেছে বলে বিবিসির তেহরান প্রতিনিধি জানিয়েছেন। সূত্র : বিবিসি।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল