২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

কাতারের সাথে উপসাগরীয় দেশগুলোর তিক্ত সম্পর্কের বরফ গলছে

সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ও কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল সানি - ছবি : সংগৃহীত

কুয়েতের মধ্যস্থতায় কাতার ও অন্য উপসাগরীয় দেশগুলোর (গাল্ফ স্টেটস) মধ্যে চলমান সঙ্কটের শিগগিরই সমাধান হতে যাচ্ছে। কুয়েতের পত্রিকা আল কাবাস জানিয়েছে, দেশটির আমির সঙ্কট নিরসনের আহ্বান জানিয়ে সৌদি বাদশাহকে একটি বার্তা পাঠিয়েছেন।

চলতি মাসে কাতারের আয়োজনে গাল্ফ (উপসাগরীয়) কাপ টুর্নামেন্টে সৌদি আরব, বাহরাইন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রীড়াবিদরা অংশ নিচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এএফপি জানিয়েছে, কাতারের একটি প্রতিনিধিদল আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই সৌদি আরবে সরকারি সফর করার পরিকল্পনা করছে।

একটি জ্ঞাত সূত্রের বরাত দিয়ে ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, সঙ্কট সমাধানের লক্ষ্যে কাতার ও সৌদি আরবের সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে যে, এর ফলে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইনও তাদের বয়কট তুলে নেবে। এক সিনিয়র সৌদি কর্মকর্তা ওয়াশিংটনে গত সপ্তাহে বলেছিলেন, কাতার প্রতিবেশীদের সাথে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে।
অতি সম্প্রতি সৌদি আরবের বৃহত্তম তেল কোম্পানি আরমকো শেয়ার বিক্রির জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে, এটি এমন একটি আলামত যে, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য প্রতিবেশীদের সাথে বিক্ষিপ্ত দ্বন্দ্ব সমাধানের চেষ্টা করতে পারেন। এরই অংশ হিসেবে যুবরাজ সালমান ইয়েমেনে চার বছর ধরে চলমান যুদ্ধ শেষ করার প্রচেষ্টাও তীব্র করছেন। ইয়েমেনে সৌদি আরব ও এর সহযোগীরা ইরান সমর্থিত হাউসি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

তা ছাড়াও ইরানের সাথে চলমান উত্তেজনা লাঘবের অংশ হিসেবে সৌদি আরবের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই ইয়েমেন থেকে তার বেশির ভাগ সৈন্য প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ইয়েমেনের যুদ্ধ ও কাতারের সাথে সম্পর্ক ছিন্নের বিষয়টি যুবরাজ সালমান এবং আবু ধাবির ক্রাউন প্রিন্স শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদের আক্রমণাত্মক বৈদেশিক নীতির লক্ষণ হিসেবেই প্রকাশ পেয়েছিল।

২০১৭ সালে সৌদি আরবের সাথে একত্র হয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মিসর প্রতিবেশী দেশ কাতারের সাথে কূটনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করে। উপসাগরীয় দেশটির সঙ্গে স্থল, বিমান ও সমুদ্র সংযোগও বন্ধ করে দেয় তারা। আরব প্রতিবেশীদের অভিযোগ, কাতার সন্ত্রাসবাদে সমর্থন করছে ও ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখছে। তবে এসব অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করে অবরোধকে তাদের সার্বভৌমত্বের প্রতি আঘাত হিসেবে আখ্যায়িত করেছে দোহা। উপসাগরীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কুয়েত বর্তমান সঙ্কট নিরসনে মূল ভূমিকা পালন করছে। সঙ্কটের শুরু থেকেই কুয়েত নিরপেক্ষ ভূমিকা বজায় রেখেছে। সৌজন্য বোধের অংশ হিসেবে দেশটি সৌদি আরবকে গাল্ফ টুর্নামেন্টে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

শেষ দিকে এসে সৌদি আরব, বাহরাইন ও আরব আমিরাত রাজি হওয়ায় সমন্বয় করতে টুর্নামেন্ট দুই দিন পিছিয়ে দেয়া হয়। ২৬ নভেম্বর শুরু হয়ে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এ টুর্নামেন্ট।

সূত্র : বুøমবার্গ ও মিডল ইস্ট মনিটর


আরো সংবাদ



premium cement