এরদোগানকে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের বিমান উপহার দিলেন কাতারের আমীর
- ডেইলি হুরিয়াত
- ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১২:০৪, আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১২:৩১
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানকে বিলাসবহুল বিমান 'বোয়িং ৭৪৭-৮' উপহার দিয়েছেন। খবর দৈনিক হুরিয়াতের।
সংবাদ মাধ্যমে এই উপহারকে ‘এরদোগানের প্রতি শেখ তামিমের ভালবাসার নিদর্শন’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
৪০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের বোয়িং বিমানগুলো দিয়ে সাধারণত চারশ’র মতো যাত্রী পরিবহন করে থাকে। কিন্তু, ভিআইপি সুবিধা সংবলিত এই বিমানে ৭০ জনের মতো যাত্রী বহন করতে পারবে।
খবরে বলা হয়েছে, এরদোগানকে উপহার দেয়া বিমানটি ইতিমধ্যে ইস্তাম্বুলের সাহিবা গকচেন বিমানবন্দরে পৌঁছেছে। এখান থেকেই বিমানটি প্রেসিডেন্সয়াল বিমান বহরে যুক্ত হবে।
বিলাসবহুল বিমানটিতে বিশাল আকারের অভ্যর্থনা কক্ষ, বোর্ডরুম, লাউঞ্জ, প্রথম শ্রেণির বসার জায়গা, নিজস্ব হাসপাতাল, প্যানাসনিকের তৈরি শক্তিশালী এন্টারটেইনমেন্ট সিস্টেম, ক্যামেরা ও নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে।
বোয়িং ৭৪৭-৮ বিমানটি কাতার আমিরি ফ্লাইটের সংযুক্ত ছিল। এই ভিআইপি বিমানগুলো কাতারের রাজপরিবারের সদস্য এবং উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা ব্যবহার করত।
বিমানটির বৈশিষ্ট্য কী?
- বিমানটি দ্বিতল বিশিষ্ট
- সাধারণত এ বিমানে ৪০০ যাত্রী ধারণক্ষমতা থাকলেও, কাতারের চাহিদা অনুযায়ী এখানে মাত্র ৭৫টি আসন সংযোজন করা হয়েছিল।
- কাতারের আমীরের ব্যক্তিগত বিমান হিসেবে এটি প্রায় ৪০০ ঘণ্টা উড়েছে
- এ বিমানে ১৪ আসনের একটি ডাইনিং রুম আছে যেটি মিটিং রুম হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
- বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল লাউঞ্জ আছে বিমানটিতে
- কাঠ দিয়ে সজ্জিত বিলাসবহুল একটি বেডরুম আছে এ বিমানে।
- বিমানে ১০টি বাথরুম আছে
- এ বিমানে স্টোররুম এবং একটি হাসপাতাল রয়েছে।
বিমানটি তুরস্কে পৌঁছানোর পর বিরোধী দলীয় একজন সংসদ সদস্য সংসদে ভাইস-প্রেসিডেন্টের কাছে প্রশ্ন করেছিলেন যে বিমানটি কেনা হয়েছে কি না?
এরদোগান সাংবাদিকদের বলেন, কাতারের আমির যখন জানতে পারেন যে তুরস্ক এ ধরণের একটি বিমান কিনতে আগ্রহী, তখন তিনি তুরস্ককে বিমানটি উপহার দেন।
কাতারের আমীর শেখ হামাদকে উদ্ধৃত করে এরদোগান বলেন, ‘তিনি বলেছেন, আমি তুরস্কের কাছ থেকে কোনো অর্থ নেব না। আমি এ বিমানটি তুরস্ককে উপহার হিসেবে দিচ্ছি।’
এরদোগান জানিয়েছেন, এ বিমানটিকে নতুন করে রং করা হবে।
কাতারের সাথে তুরস্কের সম্পর্ক
চারটি আরব দেশ- সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর ও বাহরাইন কাতারের সাথে সব ধরণের সম্পর্ক ছিন্ন করার পর তুরস্ক কাতারের পাশে দাঁড়িয়েছিল।
কাতারের সুপার মার্কেটে খাদ্য সংকট যাতে তৈরি না হয় সেজন্য তুরস্ক সমুদ্র এবং আকাশ পথে কাতারের জন্য খাদ্য পাঠিয়েছে।
কাতারের উপর চারটি দেশ যে অবরোধ দিয়েছে সেটিকে ‘অমানবিক’ হিসেবে ব্যাখ্যা করে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেছিলেন, এ ধরণের অবরোধ ‘মৃত্যুদণ্ড’ দেবার শামিল।
তুরস্কের সাথে কাতারের এক ধরণের সামরিক সম্পর্কও রয়েছে। কাতারের উপর অবরোধ আরোপের পর দেশটিতে তুরস্কের সেনা মোতায়েন সমর্থন করে সংসদে একটি বিল পাশ হয়েছিল। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তুরস্ক বুঝিয়ে দিয়েছিল যে কাতার একা নয়।
অন্যদিকে কাতারও বন্ধুত্বের প্রতিদান দিয়েছে। তুরস্কের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে কাতার। তুরস্কের অর্থনীতিকে সহায়তা করার জন্য কাতারের আমির ১৫ বিলিয়ন বা ১৫শ’ কোটি ডলার অর্থনৈতিক প্রকল্প এবং বিনিয়োগ পরিকল্পনা ঘোষণা করেন।