বাড়তি ৪ হাজার কোটি টাকা চায় সড়ক পরিবহন বিভাগ
চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা কম ; আগামী এডিপিতে চলমানসহ ১৬৬টি প্রকল্প থাকছে- হামিদ সরকার
- ১৫ মে ২০১৯, ০০:০০
নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা হতে আর কিছুদিন বাকি। সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিও (এডিপি) প্রায় চূড়ান্ত হওয়ার পথে। ঠিক এমনই সময় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে জিওবি খাতে বাড়তি ন্যূনতম চার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। অনুমোদিত প্রকল্পের বিপরীতে জিওবি খাতে বরাদ্দ নিশ্চিত করা না গেলে প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে না বলে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে এক চিঠিতে পরিকল্পনা কমিশনকে জানানো হয়েছে। তবে চলতি অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দের তুলনায় আগামী অর্থবছরের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা বেশি চাহিদা দেয়া হয়েছিল বলে সূত্রে জানা গেছে।
সড়ক পরিবহন বিভাগের কার্যক্রম ও এডিপি শাখা থেকে গত ৯ মে দেয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের এডিপিতে বিভিন্নপর্যায়ে এই বিভাগের মোট ১৬৬টি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে বাস্তবায়নাধীন ১৪টি মেগা, ২০টি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ, ৫২টি সমাপ্তিযোগ্য এবং অন্যান্য চলমান প্রকল্প রয়েছে। ত্রিপক্ষীয় সভায় রেকর্ড নোটিশ অনুযায়ী, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আগামী অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেটে চলমান প্রকল্পের জন্য ২৪ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ। যার মধ্যে সরকারি খাতে বা জিওবিতে ১৫ হাজার ২৫০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সহায়তা খাতে ৯ হাজার ২৪৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা। অন্য দিকে, অননুমোদিত নতুন প্রকল্পের জন্য থোক বরাদ্দ ৬৬৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এখানে জিওবি হলো ৩০০ কোটি টাকা এবং পিএ হলো ৩৬৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
সংশ্লিষ্ট বিভাগ বলছে, আরো কয়েকটি প্রকল্প সহসাই একনেকের অনুমোদনের পরিকল্পনা কমিশনে প্রক্রিয়াধীন আছে। যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলোÑ ঢাকা (কাঁচপুর) সিলেট মহাসড়ক উভয়পার্শ্বে পৃথক সার্ভিস লেনসহ চার লেনে উন্নীতকরণ, সাপোর্ট টু ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্প, জরাজীর্ণ, অপ্রশস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিদ্যমান বেইলি সেতু প্রতিস্থাপন প্রকল্প (ঢাকা জোন) ইত্যাদিসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প রয়েছে। এসব প্রকল্প অনুমোদিত হলে জিওবি খাতে প্রকল্পগুলোর এ বরাদ্দ নিশ্চিত করা না গেলে প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে এ প্রকল্পের অনুকূলে ন্যূনতম চার হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত প্রয়োজন হবে। এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত প্রকল্পগুলোর সুষ্ঠু বাস্তবায়নের স্বার্থে মাঠপর্যায়ের বাস্তবায়ন পর্যালোচনা, প্যাকেজভিত্তিক কাজের গতিশীলতা, ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি শিফটিং ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে এ প্রকল্পগুলোর অনুকূলে আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরে এডিপিতে চাহিদার বিপরীতে জিওবি খাতে পাঁচ হাজার ৪৯৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা কম ধরা হয়েছে ত্রিপক্ষীয় সভায়।
এ দিকে, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এডিপি পর্যালোচনায় দেখা যায়, অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই থেকে মার্চ) পর্যন্ত সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের বাস্তবায়ন হার মাত্র ৩৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এ বছর বরাদ্দ ১৯ হাজার ৮০২ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর মধ্যে জিওবি খাতে বরাদ্দ ১৩ হাজার ৯৮৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। আর পিএ খাতে পাঁচ হাজার ৮১৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা। পিএ খাতে ব্যয়ের হার সাড়ে ২৮ শতাংশ বলে আইএমইডির সর্বশেষ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র বলছে, আগামী জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট জাতীয় সংসদ পেশ করা হবে। এই বাজেটের একটি বড় অংশ হলো এডিপি বা উন্নয়ন কর্মসূচি। এটির কাজও প্রায় শেষ। এডিপির আকার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। খসড়া বইও ছাপা হয়েছে। আর ওই এনইসি সভায় যদি আকার বাড়ানো হয় তবে তা থোক বরাদ্দ খাতে দেখানো হবে। ফলে এখন নতুন করে বাড়তি বরাদ্দ যুক্ত করার কোনো সুযোগ নেই।