২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ফিলিস্তিনের তৃতীয় সারির দলের কাছেই এমন হার

ফিলিস্তিন ২:০ বাংলাদেশ
বাংলাদেশকে হারানোর পর ফিলিস্তিনি ফুটবলারদের সিজদা - নয়া দিগন্ত

এটি ফিলিস্তিনের মূল জাতীয় দল নয়। এমন কি ২০১৮ সালে ফিলিস্তিন যে দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে এসছিল, এবারের দল তার চেয়েও দূর্বল। ৭০ শতাংশই নতুন খেলোয়াড়। এরপরও এই ফিলিস্তিনের কাছে হারতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। যদিও মধ্যপ্রাচ্যের দলটিকের পরাজয়ের স্বাদ দিয়ে আসর এবং বছর শুরু করতে চেয়েছিল বাংলাদেশ দল। হলো উল্টো। বুধবার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে এবারের বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে লাল সবুজদের ২-০তে কাবু করে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালের পথে একধাপ এগিয়ে গেল গতবারের চ্যাম্পিয়ন দল ফিলিস্তিন। হারের ফলে জেমি-জামালদের এখন ১৯ জানুয়ারী ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে জয়ের অপাতত: বিকল্প নেই শ্রীলংকার বিপক্ষে। বৃহস্পতিবার লংকানরা ফিলিস্তিন পরীক্ষার সামনে। সে ম্যাচের রেজাল্টও লাল সবুজদের পরের ম্যাচের টার্গেট নির্ধারণ করে দেবে।

সর্বশেষ ওমানের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে খেলা বাংলাদেশ দলে তিনটি পরিবর্তন এনে বুধবার একাদশ মাঠে নামান কোচ জেমি ডে। জীবন, বিপলু এবং রিয়াদুলের জায়গায় মতিন মিয়া, মামুনুল এবং তপু বর্মন। এই তিন পরিবর্তনে বাংলাদেশ দল শুরু থেকেই চড়াও হয়ে খেলতে থাকে। অন্যদিকে নতুন ফুটবলার নিয়ে গড়া ফিলিস্তিনিরা বেশ চাপে পড়ে যায়। লাল সবুজরা রায়হানের লম্বা থ্রো এবং কর্নার কেন্দ্রিক আক্রমণ করতে থাকে। কিন্তু তাতে কোনো ফলই আসেনি প্রতিপক্ষের প্রায় ক্রসবার সমান উচ্চতার গোলরক্ষক তৌফিক আবদুল হামাদের কারণে। জামালদের প্রতিটি আক্রমণেই তার দীর্ঘ দেহটা ছিল অন্তরায়। সাথে তাদের সুদৃঢ় রক্ষণ প্রাচীর।

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে হাজার কয়েক দর্শকের উপস্থিতিতে স্বাগতিক দলের আক্রমণের মুখে ফিলিস্তিন দল অপেক্ষায় ছিল কাউন্টার আ্যাটকের। তারা সেই চান্সই পায় ম্যাচে তিন বার। এর দুটি থেকেই গোল আদায়। আর এতে যোগ হয়েছে বাংলাদেশ ডিফেন্ডারদের দুর্বলতা। সবাই উপরে উঠে গেলে ডিফেন্সও যে পোক্ত রাখতে হয় তা ভুলে গিয়েছিল তপু, ইয়াসিন, রায়হানরা। যার সূত্র ধরেই হারে এবারের আসর শুরু বাংলাদেশ দলের। ২০১৮ সালেও তারা এই ফিলিস্তিনের কাছে সেমিফাইনালে হেরেছিল। সে ম্যাচের স্কোরও ছিল ০-২। সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু কাপে অবশ্য বাংলাদেশ ১-০তে লাওসকে হারিয়ে শুভ সূচনা করেছিল।

ম্যাচের প্রথম আক্রমণ থেকেই গোল ফিলিস্তিনের। ১০৬ র‌্যাংকিংয়ে থাকা দলটির ২৯ মিনিটে প্রথম গোলের সুযোগ। জামার্ন লিগে খেলা মিডফিল্ডার মোহাম্মদ দারউইশের থ্রু থেকে বল পেয়ে অফসাইড ট্র্যাপ ভেঙ্গে বক্সে ঢুকে পড়েন খালেদ সেলিম। এরপর আনুষ্ঠানিকতা সারেন ডান পায়ের প্লেসিং শটে আগুয়ান গোলরক্ষক রানার বাম পাশ দিয়ে বল পাঠিয়ে। এই কাউন্টারটি হয়েছিল রায়হানের লম্বা থ্রো বিপক্ষ রক্ষণভাগে প্রতিহত হওয়ার পর।

অবশ্য পিছিয়ে পড়ার পরপরই সমতার সুযোগ হারায় গতআসরের সেমিফাইনালিস্টরা। উৎস সেই রায়হানের থ্রো। তার থ্রোর বিপক্ষে ডিফেন্ডারের মাথায় লেগে বল চলে যায় তপু বর্মনের কাছে। কিন্তু পোস্টের খুব কাছ থেকে নেয়া তপুর সেই ফাঁকা হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে ম্যাচে ফেরার সুবর্ণ সুযোগ হারায় স্বাগতিকরা। ৩৯ মিনিটে ফিলিস্তিন ব্যবধান বাড়াতে পারেনি তাদের সামি মারাবার শট পোস্টে বাতাস দিয়ে গেলে। অবশ্য বিরতির পর আর অপেক্ষায় থাকা নয়। ৫৮ মিনিটে রাদওয়ান আবু কারাশেল লব ক্লিয়ার করতে বর্থ স্টপার ব্যাক ইয়াসিন। ফলে বল গিয়ে পড়ে ম্যাচ সেরা লাইত খারুবেব কাছে। পেছনে থাকা রায়হানও পারেননি তাকে বাধা দিতে। ফলে ডান পায়ের শটে বল জালে পাঠাতে কোনো সমস্যাই হয়নি এই ফিলিস্তিনি স্ট্রাইকারের।

বাকি সময়ে বাংলাদেশ কোনো পরিকল্পিত আক্রমণই করতে পারেনি। সারা ম্যাচে তারা একটি বারের জন্যও পারেনি ফিলিস্তিনি গোলরক্ষককে পরীক্ষা করতে। তাদের এই বাজে পারফরম্যান্সে হতাশ ম্যাচ দেখা দর্শকরা। অন্য দিকে ফিলিস্তিন তাদের ক্লান্ত শরীর নিয়ে মাথা খাটিয়ে ম্যাচে তুলে নেয় সহজ জয়। যা তাদের যোগ্যতারই পরিচয়।


আরো সংবাদ



premium cement